গণতান্ত্রিক যুব ফোরামের ১৪তম প্রতিষ্ঠাবার্ষিকী ও ৫ম কেন্দ্রীয় সম্মেলন উপলক্ষে

রাঙামাটির কুদুকছড়িতে বিশাল যুব গণসমাবেশ

0

20160405_132411

রাঙামাটি: “সরকারের দালাল, সুবিধাবাদী, প্রতিক্রিয়াশীলদের চিনে রাখুন, জাতীয় মুক্তির সনদ পূর্ণস্বায়ত্তশাসন অর্জনের লক্ষ্যে ঐক্য সংহতি জোরদার করুন” এই শ্লোগানে পার্বত্য চট্টগ্রামে যুব সমাজের অগ্রগামী সংগঠন গণতান্ত্রিক যুব ফোরাম প্রতিষ্ঠার ১৪বছর পূর্তিতে রাঙ্গামাটি জেলার কুদুকছড়ি বড়মহাপুরম উচ্চ বিদ্যালয় মাঠে হাজার হাজার ছাত্র-যুব-নারী-জনতার অংশগ্রহণে বিশাল যুব গণসমাবেশ ও ৫ম কেন্দ্রীয় সম্মেলনের উদ্বোধনী অনুষ্ঠান অনুষ্ঠিত হয়েছে।

মঙ্গলবার (৫ এপ্রিল) সকাল ১১টায় “আমরা করবো জয়…” গানটি পরিবেশনের মাধ্যমে উদ্বোধনী অনুষ্ঠান শুরু হয়। প্রতিরোধ সাংস্কৃতিক স্কোয়ার্ড এই গানটি পরিবেশন করে। গানটি  পরিবেশনের সাথে সাথে জাতীয় ও দলীয় পতাকা উত্তোলন করা হয়। দলীয় পতাকা উত্তোলন করেন গণতান্ত্রিক যুব ফোরামের কেন্দ্রীয় সভাপতি মাইকেল চাকমা ও জাতীয় পতাকা উত্তোলন করেন ইউপিডিএফ-এর কেন্দ্রীয় সদস্য নতুন কুমার চাকমা।

DYF kudukchari5সমাবেশে সভাপতিত্ব করেন গণতান্ত্রিক যুব ফোরামের কেন্দ্রীয় সভাপতি মাইকেল চাকমা এবং সঞ্চালনা করেন সাধারণ সম্পাদক অংগ্য মারমা।  সভাপতি মাইকেল চাকমা অতিথিদের নিয়ে মঞ্চে আসন গ্রহন করার পরে অতিথিদের বেজ পরিয়ে দিয়ে সাদরে গ্রহণ করেন যুব ফোরামের স্বেচ্ছাসেবকের একটি টিম।

সমাবেশের কার্যক্রম আনুষ্ঠানিকভাবে শুরু হওয়ার পর পার্বত্য চট্টগ্রামের পাহাড়ি জণগনের অধিকার প্রতিষ্ঠার আন্দোলন করতে গিয়ে যারা রাষ্ট্রীয় বাহিনীর হাতে বিভিন্ন সময়ে নির্মম খুন, গুমের শিকার হয়েছেন তাদের স্মরণে শোক প্রস্তাব পাঠ করেন যুব ফোরামের কেন্দ্রীয় কমিটির সদস্য থুইক্যচিং মারমা। শোক প্রস্তাব পাঠ শেষে সকল শহীদদের স্মরণে দাঁড়িয়ে এক মিনিট নিরবতা পালন করা হয়।

পরে সেনাবাহিনী কর্তৃক গত বছরের নভেম্বর মাসে আটক হওয়া সদ্য কারামুক্ত গণতান্ত্রিক যুব ফোরামের কেন্দ্রীয় সাংগঠনিক সম্পাদক জিকো ত্রিপুরাকে ফুল দিয়ে অভিবাদন জানানো হয়। মাইকেল চাকমা জিকো ত্রিপুরাকে ফুলের তোড়া দিয়ে অভিবাদন জানান।

এরপর সমাবেশে স্বাগত বক্তব্য রাখেন গণতান্ত্রিক যুব ফোরামের কেন্দ্রীয় সাংগঠনিক সম্পাদক জিকো ত্রিপুরা। সমাবেশে অন্যান্যের মধ্যে আরো বক্তব্য রাখেন পাহাড়ি ছাত্র পরিষদের কেন্দ্রীয় কমিটির সভাপতি সিমন চাকমা, হিল উইমেন্স ফেডারেশনের কেন্দ্রীয় কমিটির ভারপ্রাপ্ত সাধারণ সম্পাদক রিনা চাকমা, সাজেক নারী সমাজের সভাপতি নিরূপা চাকমা, পার্বত্য নারী সংঘের কেন্দ্রীয় কমিটির সভাপতি সোনালী চাকমা, জাতিসত্তা মুক্তি সংগ্রাম পরিষদের টেকনাফ ও উখিয়া অঞ্চলের আঞ্চলিক কমিটির সাধারণ সম্পাদক মণি স্বপন চাকমা। এছাড়া অনুষ্ঠান মঞ্চে আরো উপস্থিত ছিলেন পার্বত্য চট্টগ্রাম নারী সংঘের সাধারণ সম্পাদক কাজলী ত্রিপুরা, ঘিলাছড়ি নারী নির্যাতন প্রতিরোধ কমিটির সভাপতি মাউচি চাকমা, প্রতিরোধ সাংস্কৃতিক স্কোয়ার্ডের সভাপতি জ্ঞানকীর্তি চাকমা, রাজশাহী, দিনাজপুর অঞ্চলের জাতিসত্তা মুক্তি সংগ্রাম পরিষদের প্রতিনিধি জুলিয়ান মার্ডি ও শ্যামল মার্ডি।

সমাবেশের একাংশ।
# সমাবেশের একাংশ।

সমাবশে ইউপিডিএফ-এর সভাপতি প্রসিত বিকাশ খীসার লিখিত বার্তা পাঠ করেন ইউপিডিএফ-এর কেন্দ্রীয় সদস্য নতুন কুমার চাকমা।

সমাবেশ শুরু হওয়ার পূর্বে বিভিন্ন এলকা থেকে যুব ফোরামের হাজার হাজার নেতা-কর্মি-সমর্থক যুব ফোরামের পতাকা নিয়ে মিছিল সহকারে সমাবেশ স্থলে প্রবেশ করে। সকাল ১১টার আগেই সমাবেশস্থল কানায় কানায় পরিপূর্ণ হয়ে যায়। এছাড়া সকাল ৯.৩০-১০.৩০টা পর্যন্ত প্রতিরোধ সাংস্কৃতিক স্কোয়ার্ডের পক্ষ থেকে গণসঙ্গীত পরিবেশিত হয়।

সমাবেশে পাহাড়ি ছাত্র পরিষদের কেন্দ্রীয় সভাপতি সিমন চাকমা বলেন, পার্বত্যবাসীকে দমিয়ে রাখার জন্য স্বরাষ্ট্রমন্ত্রনালয় ১১দফা নির্দ্দেশনা জারী করেছে। যুব সমাজকে ধ্বংস করার জন্য সেনাবাহিনী মাদক, ফেনসিডিল ও হিরোইনসেবী সৃষ্টি করেছিল । মুখোশবাহিনী, গপ্রক বাহিনীর মতো সন্ত্রাসী বাহিনী গঠন করে আন্দোলন ধ্বংসের চক্রান্ত করা হয়েছিল। ১৯৯৬ সালের ১২ জুন কল্পনা চাকমাকে অপহরণ করা হয়েছিল প্রতিবাদী নারীদের কন্ঠকে দমিয়ে রাখার জন্য। সেনা শাসন ও সকল ধরনের রাষ্ট্রীয় নির্যাতন মোকাবেলা করার জন্য ছাত্র ও যুব সমাজকে একসাথে আন্দোলন করার জন্য তিনি আহ্বান জানান।

হিল উইমেন্স ফেডারেশন-এর ভারপ্রাপ্ত সাধারণ সম্পাদক রিনা চাকমা বলেন, নারী সমাজকে শোষণ-নির্যাতন থেকে মুক্তির জন্য বিচ্ছিন্নভাবে শুধু নারীদের নিয়ে আন্দোলন করলে হবে না। নারী-পুরুষ নির্বিশেষে সবাইকে ঐক্যবদ্ধ হয়ে শোষণহী সমাজ প্রতিষ্ঠা করার জন্য বৃহত্তর আন্দোলন-সংগ্রামের কোন বিকল্প নেই।

সমাবেশে বক্তব্য রাখছেন পার্বত্য চট্টগ্রাম নারী সংঘের সভাপতি সোনালী চাকমা
# সমাবেশে বক্তব্য রাখছেন পার্বত্য চট্টগ্রাম নারী সংঘের সভাপতি সোনালী চাকমা

পার্বত্য চট্টগ্রাম নারী সংঘের কেন্দ্রীয় কমিটির সভাপতি সোনালী চাকমা বলেন, আমাদের পিতৃভূমি কেড়ে নেয়ার জন্য নানা চক্রান্ত-ষড়যন্ত্র অব্যাহত রয়েছে। আমরা যদি লড়াই না করি, আমাদের ভিটে-বাড়ি যদি বেদখল হয়ে যায় তাহলে আমাদের অস্তিত্ব নিঃশেষ হয়ে যেতে বাধ্য। তিনি বলেন, কল্পনা চাকমা অপহরণের তদন্ত রিপোর্ট এখনো প্রকাশ করা হয়নি। বিচারহীনতার কারণে আজ দেশে হত্যা নির্যাতন বেড়ে গেছে। তিনি অন্যায়-অবিচারের বিরুদ্ধে বীরের মতো গর্জে উঠার জন্য সমবেত যুব-জনতার প্রতি আহ্বান জানান।

জাতিসত্তা মুক্তি সংগ্রাম পরিষদের টেকনাফ ও উখিয়া অঞ্চলের আঞ্চলিক কমিটির সাধারণ সম্পাদক মনি স্বপন চাকমা বলেন, পার্বত্য চট্টগ্রামে কিছু হলে আমরা টেকনাফ থেকে তেঁতুলিয়া পর্যন্ত রাজপথে নেমে প্রতিরোধ সংগ্রামে নেমে যাবো। কিন্তু আমাদের দুর্দিনেও আপনাদেরকে আমাদের সাথে থাকতে হবে।

সমাবেশে ইউনাইটেড পিপলস ডেমোক্রেটিক ফ্রন্ট(ইউপিডিএফ)-এর কেন্দ্রীয় সদস্য নতুন কুমার চাকমা পার্টি সভাপতি প্রসিত বিকাশ খীসার পাঠানো একটি লিখিত বার্তা পড়ে শোনান।

প্রেরিত লিখিত বার্তায় প্রসিত বিকাশ খীসা বলেন, গণতান্ত্রিক যুব ফোরামের প্রতিষ্ঠা বার্ষিকী উপলক্ষে আয়োজিত সমাবেশ এমন এক সময়ে অনুষ্ঠিত হচ্ছে, যখন ক্ষমতাসীন সরকারের গণবিরোধী হিংস্র রূপ শুধু পার্বত্য চট্টগ্রামবাসীর নিকট নয়, স্পষ্ট হয়ে উঠেছে সারা দেশবাসীর নিকটও। ক্ষমতাসীন সরকারের নিষ্ঠুর দমন-পীড়ন, অন্যায়-অত্যাচার জোরজবরদস্তির বিরুদ্ধে পার্বত্য চট্টগ্রামবাসীর মতই দেশের অন্যান্য অঞ্চলেও প্রতিবাদ বিক্ষোভ সংগঠিত হচ্ছে। নার্সসহ বিভিন্ন পেশাজীবীগণ প্রতিবাদে সোচ্চার হয়ে উঠেছে। বিশেষ করে অতি সাম্প্রতিককালে ময়নামতি ক্যান্টনমেন্টের মত সুরক্ষিত এলাকায় ভিক্টোরিয়া কলেজ ছাত্রী সোহাগী জাহান তনু(১৯)-কে ধর্ষণ ও হত্যার এতদিন পরও অপরাধী চক্রকে গ্রেফতার ও বিচারের সম্মুখীন না করা, অপরাধীদের আড়াল করতে নানা টালবাহানার কারণে সরকারের প্রতি সাধারণ জনগণ চরমভাবে বিক্ষুব্ধ। তনু ধর্ষণ ও হত্যাকাণ্ড সমস্ত অন্যায়ের প্রতীক হয়ে উঠেছে, এ ঘটনার প্রতিবাদে সারা দেশ জুড়ে শিক্ষার্থীদের বিক্ষোভ চলছে, যার সাথে সংহতি জ্ঞাপন করতে রাস্তায় নামছে বিভিন্ন শ্রেণী ও পেশার মানুষ। এ প্রতিবাদ বিক্ষোভের ঢেউ বইছে পার্বত্য চট্টগ্রামেও। অত্যন্ত যৌক্তিক কারণে এ ন্যায় সঙ্গত আন্দোলনের প্রতি অকুণ্ঠ সমর্থন জানায় ইউপিডিএফ।

চট্টগ্রাম মহানগর শাখার ব্যানারে যুব ফোরামের নেতা-কর্মীরা
# ব্যানার সহকারে যুব ফোরামের চট্টগ্রাম মহানগর শাখার নেতা-কর্মীরা

তিনি বলেন, ২০ মার্চ ২০১৬ ময়নামতি সেনানিবাসে সংঘটিত তনু ধর্ষণ ও খুনের ঘটনার সাথে সাযুজ্য রয়েছে ১৯৯৬ সালের ১২ জুন কজইছড়ি ক্যাম্প-এর পাশের গ্রাম নিউ লাল্ল্যাঘোনায় ক্যাম্প কমান্ডার লে. ফেরদৌস কর্তৃক কল্পনা চাকমাকে অপহরণ ও গুমের সাথে। স্বাভাবিকভাবে পার্বত্য চট্টগ্রামের ছাত্র-যুব-জনতা তনুকে ধর্ষণ ও হত্যার মত বর্বরোচিত ঘটনায় ক্ষুব্ধ এবং প্রতিবাদে সামিল হয়েছে। পার্বত্য চট্টগ্রামের আট গণসংগঠনের কনভেনিং কমিটি গেল ২৭ মার্চ কুমিল্লা শহরে আয়োজিত কর্মসূচিতে প্রত্যক্ষভাবে অংশ নিয়েছে, এ সংগঠনের অন্যতম শরীক সংগঠন হচ্ছে গণতান্ত্রিক যুব ফোরাম।

লিখিত বার্তায় তিনি আরো বলেন, এ সমাবেশস্থলের অল্প দূরে রয়েছে বগাছড়ির সুরিদাসপাড়া, ২০১৫ সালের ১৬ ডিসেম্বর এখানে বাড়িঘরে অগ্নিসংযোগ ও লুটপাটের মাধ্যমে বিজয় দিবস উৎযাপন করেছিল একশ্রেণীর সেটলার ও সেনা কর্মকর্তা। এখনও ক্ষতিগ্রস্তদের জায়গা-জমি ফিরিয়ে দেয়া হয় নি, উপযুক্ত ক্ষতিপূরণও পায় নি ক্ষতিগ্রস্ত পরিবারবর্গ। ক্ষতিগ্রস্তদের বাড়িঘর জ্বালিয়ে দেয়ার হুমকি দিয়েছিলেন স্বয়ং উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা, তাদের বিরুদ্ধে প্রশাসন কোন বিভাগীয় ব্যবস্থা নিয়েছে কিনা তা জানা যায় নি। দীঘিনালার বাবুছড়ায় বিজিবি ব্যাটেলিয়ন সদর দপ্তর স্থাপনের উছিলায় স্থানীয় পাহাড়িদের বংশপরম্পরার ভিটেবাড়ি-জায়গাজমি থেকে উৎখাত করা হয়েছে। রাঙ্গামাটি, খাগড়াছড়ি ও বান্দরবানের বিভিন্ন প্রান্তে নানা প্রকল্পের নামে জমি অধিগ্রহণ হচ্ছে। ভূমিদস্যুদের ভূমি আগ্রাসন অব্যাহত রয়েছে। নারী ধর্ষণ পাহাড়িদের সমাজে অকল্পনীয়, অতীতে কোন সময়ই এ ধরনের ঘটনা ঘটেনি। অথচ পার্বত্য চট্টগ্রামে সেনা মোতায়েন ও সেটলার অনুপ্রবেশের পর থেকে এ ঘৃণ্য অপরাধের সংবাদ বলতে গেলে প্রায়ই শোনার দুর্ভাগ্য হচ্ছে। সরকার ধর্ষণ ঘটনা ধামাচাপা দিতে মেডিক্যাল টেস্টের ক্ষেত্রে গোপন নির্দেশনা জারি রেখেছে, তাতে অপরাধীরা পার পেয়ে যায় এবং অপকর্মে আরও প্ররোচিত হচ্ছে। বিতর্কিত পঞ্চদশ সংশোধনী আইনের মাধ্যমে অন্যায়ভাবে “বাঙালি জাতীয়তা” চাপিয়ে দিয়েছে সরকার। সর্বোচ্চ আদালতের মাধ্যমে “রাষ্ট্রী ধর্ম ইসলাম” বজায় রেখে ভিন্ন ধর্মাবলম্বীদের দ্বিতীয় শ্রেণীর নাগরিকে পরিণত করা হয়েছে। স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয় কর্তৃক ১১দফা নির্দেশনা জারি রেখে পার্বত্য চট্টগ্রামে কার্যত ফৌজী শাসন পাকাপোক্ত করার ষড়যন্ত্রে লিপ্ত সরকার। আসন্ন পয়লা বৈশাখের উৎসবে সরকারের পক্ষ থেকে নিষেধাজ্ঞা আরোপ করা হয়েছে, স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী নিষেধাজ্ঞার পক্ষে নানা যুক্তির অবতারণা করেছেন, যা সাংস্কৃতিক সংগঠনসমূহ গ্রহণযোগ্য নয় বলে জানিয়ে দিয়েছে। গত বছর খাগড়াছড়িতে বৈসাবি র‌্যালির ব্যানার কেড়ে নিয়ে অংশগ্রহণকারীদের ওপর লাঠিপেটার ঘটনা ঘটেছিল। এখন সরকার সারা দেশে আরও বেশী কঠোর নিয়ন্ত্রণ আরোপের হাত প্রসারিত করেছে। ক্ষমতাসীন সরকার দিন দিনই স্বৈরাচারি মূর্তি ধারণ করে জনগণের অধিকার হরণ করে চলেছে এর প্রতিবাদে যুব ফোরামকে গর্জে উঠতে হবে।

গণতান্ত্রিক যুব ফোরামের সভাপতি মাইকেল চাকমা বলেন, পার্বত্য চট্টগ্রামে কয়েক কিলোমিটার পরপর চেকপোস্ট রয়েছে। অথচ এখানেই জনগণ চরম নিরাপত্তাহীনতায় বসবাস করছে। জুম্ম জনগণের ভুমি জবরদখল করা হচ্ছে।  সমতলে সেনাবাহিনী কোথাও নাক গলাতে পারে না। অথচ পার্বত্য চট্টগ্রামে তারা ডিসি এসপিকে নিয়ন্ত্রণ করেন।

তিনি বলেন, শেখ হাসিনা সরকার একের পর এক গণবিরোধি সিদ্ধান্ত গ্রহণ করে চলেছে।  ২০১১ সালে পঞ্চদশ সংবিধান সংশোধনীর মাধ্যমে দেশের জাতিসত্তাসমূহ ও বিভিন্ন ভাষাভাষি জনগণকে ‘বাঙালি’ বানানোর তীব্র সমালোচনা করেন। তিনি বলেন, আমরা এই বিতর্কিত পঞ্চদশ সংশোধনী মানিনা, কখনো মানবো না।

সমাবেশ শেষে একটি বর্ণাঢ্য শোভাযাত্রা কুদুকছড়ি বড় মহাপুরম উচ্চ বিদ্যালয়ের মাঠ থেকে বের হয়ে হেডম্যান পাড়া মাঠে গিয়ে শেষ হয়।

যুব গণসমাবেশে তিন পার্বত্য জেলা ও ঢাকা, চট্টগ্রাম থেকে ৭ শহস্রাধিক নেতা-কর্মি-সমর্থকসহ কক্সবাজার জেলার টেকনাফ-উখিয়া উপজেলা এবং রাজশাহী ও দিনাজপুর থেকে সংখ্যালঘু জাতিসত্তার প্রতিনিধিরা অংশগ্রহণ করেন।

৫ম কেন্দ্রীয় সম্মেলন শেষে আগামীকাল বুধবার (৬ এপ্রিল) নতুন কেন্দ্রীয় কমিটি ঘোষণা করা হবে বলে সংগঠনের পক্ষ থেকে জানানো হয়েছে।
——————-

সিএইচটিনিউজ.কম’র প্রচারিত কোন সংবাদ, তথ্য, ছবি ব্যবহারের প্রয়োজন দেখা দিলে যথাযথ সূত্র উল্লেখপূর্বক ব্যবহার করুন।

This website uses cookies to improve your experience. We'll assume you're ok with this, but you can opt-out if you wish. AcceptRead More