রাঙামাটির লংগদুতে বৌদ্ধ বিহার উচ্ছেদের ষড়যন্ত্র

0

লংগদু প্রতিনিধি, সিএইচটি নিউজ
বৃহস্পতিবার, ১২ অক্টোবর ২০২৩

রাঙামাটি জেলার লংগদু উপজেলাধীন ভাইবোনছড়ায় বিবেক সাধনা বনবিহার নামে একটি বৌদ্ধ মন্দির উচ্ছেদের ষড়যন্ত্র চলছে বলে জানা গেছে।

এই ষড়যন্ত্রের অংশ হিসেবে গতকাল বুধবার (১১ অক্টোবর) উক্ত বিহারের জমি বেদখল করে দু’টি বাড়ি নির্মাণ করেছে সেটেলাররা।

বেদখলকারী একজন সেটেলারের নাম মোঃ রাশেদ, পিতার নাম গফুর।

স্থানীয় জনগণ ভূমি বেদখলে বাধা ও অবৈধ বাড়িগুলো ভেঙে দিলে সেটেলাররা রাতে বিহার আক্রমণ করে। এ সময় বিহারের অধ্যক্ষ ক্লেশ বিজয় ভিক্ষু (৯ বর্ষা) তার সাথে অবস্থান করা দুই শ্রমণ ধর্ম দর্শন (১৮) ও রূপম (১৬) বিহার ছেড়ে পালিয়ে যেতে বাধ্য হন।

সেটেলাররা বিহারের তিনটি সোলার ফ্যান ও রান্নাঘর নির্মাণের জন্য রাখা কাঠ লুট করে নিয়ে যায় এবং রাতের মধ্যেই ওই কাঠ দিয়ে নতুন আরও একটি বাড়ি নির্মাণ করে।

আজ বৃহস্পতিবার (১২ অক্টোবর) সকালে ভান্তে বিহারে ফিরে যান। এ সময় সেনবাহিনীর একদল সদস্যও ঘটনাস্থলে উপস্থিত হয় এবং কারা সেটেলারদের তোলা বাড়ি ভেঙে দিয়েছে তা ভান্তের কাছ থেকে জানতে চায়।

(লক্ষ্য করুন, কারা বিহারের জমিতে অবৈধভাবে বাড়ি নির্মাণ করেছে তা জানতে চায়নি!)

সেনা সদস্যরা বেদখলকারী সেটেলারদেরকে গ্রেফতার না করে, বরং তাদেরকে অবৈধভাবে দখল করা জমিতে থাকতে বলেছে বলে জানা গেছে। বর্তমানে সেখানে শত শত সেটেলার বাঙালি অবস্থান করছে।

বিহারটি লংগদু উপজেলা সদর থেকে দক্ষিণ-পশ্চিমে ৩ কিলোমিটার দূরে অবস্থিত। ২০১৯ সালে স্থানীয় গ্রামবাসীরা এটি নির্মাণ করেন। বিহারের জমির পরিমাণ ৩ একর। সমীর চাকমা বিহারের জন্য এই জমি দান করেন।

বিহারের পাশে সমীর চাকমার আরও ৫ একর পরিমাণ রেকর্ডিয় জমি রয়েছে। সেটেলাররা তার সেই জমিও বেদখল করেছে।

এখন পযন্ত সেটেলারদের বেদখল করা জমির পরিমাণ ২ একর। এই বেদখলকৃত জমিতে স্থায়ীভাবে বসবাস শুরু করলে বা বেদখল স্থায়ী হয়ে গেলে বিহার ও সমীর চাকমার বাকি জমিও সেটেলাররা ধীরে ধীরে বেদখল করে নেবে।

যদি বাকি জমি জোরপূর্বক দখল করা নাও নয়, কেবলমাত্র সেটেলারদের অবস্থানের কারণে সেখানে বিহারটি রক্ষা করা সম্ভব হবে না। আর বিহারটি না থাকলে বাকি জমি এমনিতেই সেটেলারদের বেদখলে চলে যাবে।

এ অবস্থায় অন্ততঃ বিহার রক্ষার জন্য হলেও সেটেলারদের এই অন্যায় ভূমি বেদখলের বিরুদ্ধে গণপ্রতিরোধ গড়ে তোলা ছাড়া অন্য কোন উপায় নেই।

বিহার পরিচালনা কমিটির এক সদস্য নাম প্রকাশ না করার শর্তে বলেন, বিহারটি রক্ষা করতে হলে সেটেলারদের ভূমি আগ্রাসন ঠেকাতে হবে। তা না হলে বিহার রক্ষা করা যাবে না।

তিনি সেনাবাহিনী ও সাধারণ সরকারী প্রশাসন নিরপেক্ষ নয় বলে মন্তব্য করেন এবং বলেন, সেনাবাহিনী ও প্রশাসনের সহায়তা না পেলে সেটেলারদের পক্ষে অন্যের জমি জোরপূর্বক কেড়ে নেয়া সম্ভব নয়।


সিএইচটি নিউজে প্রকাশিত প্রচারিত কোন সংবাদ, তথ্য, ছবি ,ভিডিও, কনটেন্ট ব্যবহার করতে হলে কপিরাইট আইন অনুসরণ করে ব্যবহার করুন।


সিএইচটি নিউজের ইউটিউব চ্যানেলটি সাবস্ক্রাইব করুন

This website uses cookies to improve your experience. We'll assume you're ok with this, but you can opt-out if you wish. AcceptRead More