নিজস্ব প্রতিবেদক, সিএইচটিনিউজ.কম
কাউখালী(রাঙামাটি) : রাঙ্গামাটির কাউখালী উপজেলার কলমপতি ইউনিয়ন ছাত্রলীগের সভাপতি শিহাব উদ্দিন বেতবুনিয়া উচ্চ বিদ্যালয়ে নবম শ্রেণীতে পড়ুয়া এক পাহাড়ি স্কুলছাত্রী(১৫)-কে অপহরণের চেষ্টা চালিয়েছে। তবে এলাকাবাসী তার এ চেষ্ট ব্যর্থ করে দিয়েছে। আজ ২২ মার্চ শনিবার সকালে উপজেলার কলমপতি ইউনিয়নের সুগারমিল পূর্ব আদর্শগ্রাম এলাকায় এ ঘটনা ঘটে। এসময় ছাত্রলীগ-যুবলীগ কর্মীদের হামলায় ছাত্রীটির বাবাও লাঞ্ছিত হন। বিভিন্ন অনলাইন পত্রিকা ও স্থানীয় সূত্রে এ খবর জানা গেছে।
পুলিশ ও প্রত্যক্ষদর্শীরা জানান, কলমপতি ইউনিয়নের কোলাপাড়া গ্রামের বেতবুনিয়া উচ্চ বিদ্যালয়ের ৯ম শ্রেণীর ছাত্রী ওই কিশোরী প্রতিদিনের ন্যায় স্কুলে যাওয়ার জন্য ঘর থেকে বের হয়। ঘর থেকে কিছুদুর যাওয়ার পর পূর্বে থেকে ওঁৎপেতে থাকা আদর্শগ্রাম এলাকার খোরশেদ মিস্ত্রির ছেলে কলমপতি ইউনিয়ন ছাত্রলীগের সভাপতি শিহাব উদ্দিনের নেতৃত্বে লায়েক, মাসুদ, মনির, ইব্রাহীম, নুরুদ্দিনসহ ৬/৭জনের ছাত্রলীগ যুবলীগের বখাটে তার উপর ঝাপিয়ে পড়ে। এসময় ইউনিয়ন ছাত্রলীগের সভাপতি শিহাব ওই ছাত্রীর মুখে চেতনা নাশক লাগিয়ে দিয়ে তাকে অপহরণের চেষ্টা করে। এ সময় কিশোরীর চিৎকারে এলাকাবাসী এগিয়ে এলে সন্ত্রাসীরা তাদের উপর চড়াও হওয়ার চেষ্টা চালায়। খবর পেয়ে কিশোরীর এর বাবা বিষয়টি শিহাব উদ্দিনের কাছ থেকে জিজ্ঞেস করতে গেলে সন্ত্রাসীরা তার উপর হামলা চালায়।
এ সময় উত্তেজিত এলাকাবাসী বখাটে ছাত্রলীগ-যুবলীগ কর্মীদের ধাওয়া করে। এখবর চতুর্দিকে ছড়িয়ে পড়লে ঐ এলাকায় উত্তেজনা দেখা দেয়। পরে বেতবুনিয়া পুলিশ ফাঁড়ির ইনচার্জ আবুল কাশেম পুলিশ নিয়ে ঘটনাস্থলে এসে পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে নিয়ে আসেন।
এই ব্যাপারে ছাত্রীটির মা শিহাব উদ্দিন সহ কয়েকজনকে আসামী করে একটি মামলা দায়ের করেছেন।
স্কুল ছাত্রীটির মা উসাটিং মারমা জানান, শিহাব উদ্দিন গত দুই বছর যাবৎ আমার মেয়েকে স্কুলে যাওয়ার পথে উত্তক্ত করে আসছিল। এমনকি গত বছর আমার মেয়ে উঠিয়ে নিয়ে জোরপূর্বক বিতর্কিত ছবি তোলে ইন্টারনেট ও সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে ছড়িয়ে দেয়। এসব বিষয়ে আমরা উপজেলা আওয়ামীলীগ নেতৃবৃন্দের কাছে বিচার প্রার্থনা করলেও গত এক বৎসর যাবৎ তার কোন সুরাহা হয়নি। পরে আমার পরিবারের পক্ষ থেকে কাউখালী থানায় অভিযোগ দায়ের করা হলে স্থানীয়ভাবে মিমাংশার জন্য রাজনৈতিক চাপ থাকায় পুলিশও কোন ব্যবস্থা নেয়নি। মেয়ের মা আরো অভিযোগ করেন, শিহাবের নেতৃত্বে বখাটেরা যে কোন মূহুর্তে আমার মেয়ের বড়ধরনের ক্ষতিসাধন করতে পারে। সন্ত্রাসীরা তার পরিবারকে নিয়মিত হুমকী প্রদান করে যাচ্ছে। এমতাবস্থায় আমি ও আমার পরিবার মারাত্মক নিরাপত্তহীনতায় ভূগছি।
কাউখালী থানার অফিসার ইনচার্জ শ্যামল কান্তি বড়ুয়া ঘটনার সত্যতা স্বীকার করে জানিয়েছেন, এব্যাপারে মেয়েটির মা বাদী হয়ে কাউখালী থানায় মামলা দায়ের করছেন। মামলা মোতাবেক ব্যবস্থা গ্রহণ করা হবে।