খাগড়াছড়ি প্রতিনিধি, সিএইচটিনিউজ.কম
বৃহত্তর পার্বত্য চট্টগ্রাম পাহাড়ি ছাত্র পরিষদের ধারাবাহিক কর্মসূচির অংশ হিসেবে আজ ১৮ মার্চ ২০১১, শুক্রবার সকাল ১১টায় খাগড়াছড়ি জেলার রামগড়ের পাতাছড়া ইউনিয়ন ও মানিকছড়ির বাটনাতলী ইউনিয়নের জেএসসি পাশ ও প্রাথমিক পরীক্ষায় উত্তীর্ণ ছাত্র-ছাত্রীদের সংবর্ধনা ও পুরস্কার বিতরণী অনুষ্ঠান অনুষ্ঠিত হয়েছে। সংবর্ধনা অনুষ্ঠান আয়োজক কমিটির সভাপতি ও কালাপানি গ্রামের মুরুব্বী বিসু কুমার চাকমার সভাপতিত্বে রামগড় উপজেলার কালাপানিতে অনুষ্ঠিত সংবর্ধনা অনুষ্ঠানে বক্তব্য রাখেন ইউনাইটেড পিপলস ডেমোক্রেটিক ফ্রন্ট (ইউপিডিএফ)-এর কেন্দ্রীয় সদস্য সচিব চাকমা, মানিকছড়ি উপজেলা সমন্বয়ক দেবদন্ত ত্রিপুরা, পাহাড়ি ছাত্র পরিষদের কেন্দ্রীয় সহ সভাপতি ক্যহাচিং মারমা, গণতান্ত্রিক যুব ফোরামের খাগড়াছড়ি জেলা শাখার সহ সাধারণ সম্পাদক আপ্রু মারমা, হিল উইমেন্স ফেডারেশনের খাগড়াছড়ি জেলা শাখার সহ সভাপতি চন্দনী চাকমা ও ডাইনছড়ি মৌজার হেডম্যান অগ্য চৌধুরী। অনুষ্ঠানে স্বাগত বক্তব্য রাখেন পাহাড়ি ছাত্র পরিষদের খাগড়াছড়ি জেলা শাখার সভাপতি আপ্রসি মারমা এবং পরিচালনা করেন পাহাড়ি ছাত্র পরিষদের খাগড়াছড়ি জেলা শাখার সদস্য অংকন চাকমা। পাতাছড়া ও বাটনাতলী ইউনিয়নের ইউনিয়নের ২১টি বিদ্যালয়ের ছাত্র-ছাত্রীদের নিয়ে এ সংবর্ধনা ও পুরস্কার বিতরণী অনুষ্ঠান আয়োজন করা হয়। অনুষ্ঠানে সহস্রাধিক ছাত্র-ছাত্রী, শিক্ষক ও অভিভাবকবৃন্দ অংশগ্রহণ করেন।
বক্তারা অনুষ্ঠানে অংশগ্রহণকারী ছাত্র-ছাত্রীদের উদ্দেশ্যে বলেন, ছাত্র-ছাত্রীরাই দেশ ও জাতির ভবিষ্যত৷ দেশ ও জাতিকে এগিয়ে নেয়ার জন্য ছাত্র-ছাত্রীদেরকেই ভূমিকা পালন করতে হবে৷ যে জাতি যত বেশি শিতি সে জাতি ততবেশি উন্নত৷ কাজেই ছাত্র-ছাত্রীদের সুশিক্ষাই শিক্ষিত হয়ে জাতীয় অস্তিত্ব রা ও দেশ গড়ার কাজে নিজেকে আত্মনিয়োগ করতে হবে।
বক্তারা আরো বলেন, পার্বত্য চট্টগ্রামে শিার বৈষম্যের কারণে অর্ধেক শিক্ষার্থীই প্রাথমিক লেবেল থেকে ঝড়ে পড়ে যায়৷ এখানে প্রাথমিক বিদ্যালয়গুলো সঠিকভাবে পরিচালনা করা হয় না। বিদ্যালয়গুলোতে পর্যাপ্ত শিক্ষক নেই৷ বক্তারা পার্বত্য চট্টগ্রামের প্রাথমিক বিদ্যালয়গুলোতে পর্যাপ্ত শিক্ষক নিয়োগের জন্য সরকারের প্রতি আহ্বান জানান।
বক্তারা মাতৃভাষায় প্রাথমিক শিক্ষার গুরুত্ব তুলে ধরে বলেন, একজন শিশু যখন নিজ মাতৃভাষায় ভাষায় কথা বলে, লেখা পড়া শিখে তখন সে সাবলীলভাবে সবকিছু আয়ত্ত করতে পারে। কিন্তু যখন সে অন্য ভাষায় পাঠ শুরু করে তখন সে আর মাতৃভাষায় স্বাদ পায় না৷ ফলে সে শিক্ষা গ্রহণে আগ্রহ হারিয়ে ফেলে৷ কাজেই সংখ্যালঘু জাতিসত্তাসমূহের শিশুদেরকে শিক্ষা গ্রহণে আগ্রহী করে তোলার জন্য মাতৃভাষায় প্রাথমিক শিক্ষা ছাড়া আর কোন বিকল্প নেই৷ তাই সংখ্যালঘু জাতিসত্তার অধু্যষিত এলাকায় সকল প্রাথমিক বিদ্যালয়ে নিজস্ব মাতৃভাষায় প্রাথমিক শিক্ষা লাভের অধিকার নিশ্চিত করার জন্য বক্তারা সরকারের প্রতি জোর দাবি জানান।
অনুষ্ঠান শেষে জেএসসি পাশ ও প্রাথমিক পরীক্ষায় উত্তীর্ণ ছাত্র-ছাত্রীদেরকে বই, খাতা, কলম, অভিধান ইত্যাদি শিক্ষা সামগ্রী পুরস্কার প্রদান করা হয়৷ পুরস্কার বিতরণের পর একটি মনোজ্ঞ সাংস্কৃতিক অনুষ্ঠানের আয়োজন করা হয়। খবর প্রেস বিজ্ঞপ্তি।