রাষ্ট্রীয় মদদপুষ্ট ঠ্যাঙারে বাহিনীর সন্ত্রাসসহ মানবাধিকার লঙ্ঘন বন্ধের দাবিতে পানছড়িতে বিক্ষোভ

0

পানছড়ি প্রতিনিধি, সিএইচটি নিউজ
শুক্রবার, ১৩ জানুয়ারি ২০২৩

রাষ্ট্রীয় মদদপুষ্ট ঠ্যাঙারে বাহিনীর সন্ত্রাসসহ মানবাধিকার লঙ্ঘন বন্ধের দাবিতে ইউপিডিএফ পানছড়িতে বিক্ষোভ মিছিল করে। ছবি: পানছড়ি প্রতিনিধি

জাতীয় মানবাধিকার কমিশনের পার্বত্য চট্টগ্রাম সফরকে সামনে রেখে পার্বত্য চট্টগ্রামে রাষ্ট্রীয় মদদপুষ্ট ঠ্যাঙারে বাহিনীর সন্ত্রাস বন্ধসহ মানবাধিকার লঙ্ঘন বন্ধের দাবিতে খাগড়াছড়ির পানিছড়িতে বিক্ষোভ মিছিল ও সমাবেশ করেছে ইউনাইটেড পিপলস ডেমোক্রেটিক ফ্রন্ট (ইউপিডিএফ) পানছড়ি ই্উনিট। উল্লেখ্য, আগামী ১৬ – ১৯ জানুয়ারি জাতীয় মানবাধিকার কমিশনের চেয়ারম্যান ও সদস্যবৃন্দ খাগড়াছড়ি, বান্দবান ও রাঙামাটি সফর করার কথা রয়েছে।

আজ শুক্রবার (১৩ জানুয়ারি ২০২৩) সকালে পানছড়ি উপজেলার মুনিপুর হতে বিক্ষোভ মিছিল শুরু হয়ে কিছুক্ষণ ঘুরে আবার একই স্থানে এসে সমাবেশ অনুষ্ঠিত হয়। এতে ইউপিডিএফের প্রতিনিধি নীতিদত্ত চাকমার সঞ্চালনায় ও ইউপিডিএফ পানছড়ি ইউনিটের সংগঠক সম্রাট চাকমার সভাপতিত্বে বক্তব্য রাখেন, পার্বত্য চট্টগ্রাম নারী সংঘের কেন্দ্রীয় অর্থ সম্পাদক মানেকপুদি চাকমা, গণতান্ত্রিক যুব ফোরামের পানছড়ি উপজেলা শাখার সভাপতি এস মঙ্গল চাকমা ও বৃহত্তর পার্বত্য চট্টগ্রাম পাহাড়ি ছাত্র পরিষদ(পিসিপি) উপজেলা শাখার সভাপতি তৃষ্ণাঙ্কর চাকমা প্রমুখ।

মিছিলর পর সমাবেশ অনুষ্ঠিত হয়।

বক্তারা বলেন, শাসকগোষ্ঠি পার্বত্য চট্টগ্রামে প্রতিনিয়ত মানবাধিকার লঙ্ঘন করে যাচ্ছে। এখানে রাষ্ট্রীয় বাহিনীর দমন-পীড়ন ছাড়াও নব্যমুখোশ বাহিনীসহ বিভিন্ন ঠ্যাঙারে বাহিনীকে মদদ দিয়ে খুন, গুম, অপহরণ, মুক্তিপণ আদায়সহ নানা সন্ত্রাসী কর্মকাণ্ড সংঘটিত করা হচ্ছে। ২০১৮ সালের ১৮ আগস্ট খাগড়াছড়ি সদরের স্বনির্ভর বাজার ও পেরাছড়া এলাকায় সংঘটিত ৭ খূনের ঘটনায় এখনো বিচার হয়নি, জড়িত সন্ত্রাসীদের গ্রেফতার করা হয়নি। যদিও এ খুনের ঘটনায় জাতীয় মানবাধিকার কমিশন তদন্ত করেছিল। গুমের শিকার হওয়া ইউপিডিএফ সংগঠক মাইকেল চাকমাকে আমরা এখনো কোন হদিস পাইনি।  

বক্তারা আরো বলেন, পার্বত্য চট্টগ্রামে প্রতিনিয়ত অন্যায় ধরপাকড়, মিথ্যা মামলা দিয়ে কারাগারে প্রেরণ, ঘরবাড়ি তল্লাশি, শারীরিক নির্যাতন, ভূমি বেদখল, নারী নির্যাতনসহ নানা ধরনের নিপীড়ন-নির্যাতন চালানো হচ্ছে। পার্বত্য চুক্তির পর এ নিপীড়নের মাত্রা আরো বৃদ্ধি করা হয়েছে। গত ১ জানুয়ারি মধ্যরাতে বান্দরবানের লামায় রাবার কোম্পানির লেলিয়ে দেয়া দুর্বৃত্তরা রেংয়েন ম্রো পাড়ায় হামলা চালিয়ে ম্রোদের ঘরবাড়িতে অগ্নিসংযোগ, ভাঙচুর ও লুটপাট চালিয়েছে। গত ১১ জানুয়ারি রাতে ১নং খাগড়াছড়ি ইউনিয়নের থলি পাড়া থেকে এক নিরীহ ব্যক্তিকে আটক করে অস্ত্র গুজে দিয়ে জেলে পাঠানো হয়েছে। বক্তারা গত বছর পার্বত্য চট্টগ্রামে ১৬ জন নারী-শিশু যৌন সহিংসতার শিকার হওয়ার তথ্য তুলে ধরেন।

সরকার পার্বত্য চট্টগ্রামে সংঘটিত মানবাধিকার লঙ্ঘনের ঘটনা ধামাচাপা দিয়ে রাখার লক্ষ্যে গত আগস্ট মাসে জাতিসংঘের মানবাধিকার বিষয় হাইকমিশনারকে মিশেল ব্যাচেলেতকে পার্বত্য চট্টগ্রামে সফরের অনুমতি দেয়নি।

বক্তারা পার্বত্য চট্টগ্রামে শাসকগোষ্ঠি কর্তৃক মানবাধিকার লঙ্ঘন বন্ধে কার্যকর উদ্যোগ নেয়া, স্বনির্ভর হত্যাকাণ্ডের তদন্ত রিপোর্ট জনসমক্ষে প্রকাশ করা করা এবং পার্বত্য চট্টগ্রাম সফরকালে মানবাধিকার লঙ্ঘনের ঘটনাবলী তদন্ত করার জন্য জাতীয় মানবাধিকার কমিশনের প্রতি আহ্বান জানান। একই সাথে বক্তারা পার্বত্য চট্টগ্রাম থেকে সেনাশাসন তুলে নেয়া, সুষ্ঠূ গণতান্ত্রিক পরিবেশ নিশ্চিত করা এবং নব্যমুখোশ বাহিনীসহ ঠ্যাঙারে বাহিনীর সন্ত্রাসীদের রাষ্ট্রীয় মদদদান বন্ধ করার জন্য সরকারের প্রতি আহ্বান জানিয়েছেন।


সিএইচটি নিউজে প্রকাশিত প্রচারিত কোন সংবাদ, তথ্য, ছবি ,ভিডিও, কনটেন্ট ব্যবহার করতে হলে কপিরাইট আইন অনুসরণ করে ব্যবহার করুন।


সিএইচটি নিউজের ইউটিউব চ্যানেলটি সাবস্ক্রাইব করুন

This website uses cookies to improve your experience. We'll assume you're ok with this, but you can opt-out if you wish. AcceptRead More