ঢাকা : রাঙামাটির লংগদু উপজেলায় ৬টি পাহাড়ি গ্রামে অগ্নিসংযোগের ঘটনায় জড়িতদের অবিলম্বে গ্রেপ্তার ও ক্ষতিগ্রস্ত পরিবারগুলোর নিরাপত্তা নিশ্চিত এবং যথাযথ ক্ষতিপূরণের দাবি জানিয়ে স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী আসাদুজ্জামান খাঁন কামালকে চিঠি দিয়েছে পার্বত্য চট্টগ্রাম বিষয়ক আন্তর্জাতিক কমিশন (সিএইচটি কমিশন)।
আজ শনিবার ৩ জুন ২০১৭ কমিশনের স্বরাষ্ট্রমন্ত্রীকে দেয়া চিঠিতে উদ্বেগ প্রকাশ করে বলা হয়, গত ২ জুন ২০১৭ রাঙামাটির লংগদু উপজেলা সদরসহ তিনটিলা, বটতলা, বাট্ট্যা পাড়া, কাট্টলতলা, মানিকবিছড়া, বড়াদাম গ্রামের প্রায় তিন শতাধিক পাহাড়িদের বাড়িতে অগ্নিসংযোগ করে জ্বালিয়ে দেয়া হয়েছে। পাহাড়িদের গ্রামের ওপর দুর্বৃত্তদের [সেটলারদের] নির্বিচারে এ হামলার ঘটনায় পার্বত্য চট্টগ্রাম কমিশন গভীরভাবে মর্মাহত ও উদ্বিগ্ন।
চিঠিতে পত্রিকার বরাত দিয়ে বলা হয়, গত ১ জুন ২০১৭ খাগড়াছড়ির চারমাইল নামক এলাকায় লংগদু উপজেলার যুবলীগের সাংগঠনিক সম্পাদক মোঃ নুরুল ইসলামের মরদেহ পাওয়ার ঘটনাকে কেন্দ্র করে লংগদুতে পাহাড়িদের গ্রামে হামলা ও অগ্নিসংযোগ করা হয়েছে বলে জানা যায়। এ ঘটনায় গুণবালা (৭০) নামে একজন বৃদ্ধা নিহত হয়েছেন।
চিঠিতে নিহত নুরুল ইসলামের হত্যাকাণ্ডের সাথে জড়িতদেরও আইনের আওতায় আনার দাবি জানানো হয়েছে।
চিঠিতে বলা হয়, নুরুল ইসলামের নিহত হওয়ার ঘটনাকে কেন্দ্র করে একটি সাম্প্রদায়িক গোষ্ঠী আইন নিজের হাতে তুলে নিয়ে পাহাড়িদের শত শত বাড়ীঘর জ্বালিয়ে দিয়ে এ কথাই আরেকবার প্রমাণ করলো যে, তারা দেশের সংবিধান বা প্রচলিত আইন সম্মান করেন না। সেই সাথে ক্ষমতাবানদের মদদপুষ্ট এই গোষ্ঠী আইনের উর্ধ্বে থেকে বারবার পাহাড়ে অস্থিরতা সৃষ্টি করছে। এ ধরনের ঘটনা পাহাড় এবং সমগ্র দেশের শান্তির বিপক্ষে। এ হামলার সময়ে নিরাপত্তাবাহিনীর ভূমিকা কী ছিল তা নিয়ে তদন্ত হওয়া উচিত বলে চিঠিতে উল্লেখ করা হয়।
চিঠিতে আরো বলা হয়, পার্বত্য চট্টগ্রাম কমিশন খুবই উদ্বিগ্ন যে, নিরাপত্তাবাহিনীর সদস্যদর ব্যাপক উপস্থিতির মধ্যেও কিভাবে এ ধরনের হামলার ঘটনা সংঘটিত হয়েছে। এতে বলা হয়, ঘটনার পরে লংগদু উপজেলা প্রশাসন দুপুর ১২টার দিকে সেখানে ১৪৪ ধারা জারি করেছে। পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণের বাইরে যাবার আগে স্থানীয় প্রশাসন কেন দ্রুত পদক্ষেপ গ্রহণ না করে পরিস্থিতিকে নিয়ন্ত্রণের বাইরে যাবার সুযোগ করে দিল সে বিষয়টি গুরুত্বের সাথে তদন্ত করে দেখা দরকার।
কমিশন অবিলম্বে ক্ষতিগ্রস্ত পরিবারগুলোর নিরাপত্তা নিশ্চিত করে সরকারের পক্ষ থেকে তাদের জন্য যথাযথ ক্ষতিপূরণের ব্যবস্থা গ্রহণের জোর দাবি জানানো হয়েছে। এছাড়া হামলার ঘটনার সাথে জড়িতদের চিহ্নিত করে তাদের আইনের আওতায় এনে বিচারের মুখোমুখি করার জন্য কমিশন সরকারের কাছে আহ্বান জানিয়েছে।
চিঠিতে স্বাক্ষর করেছেন কমিশনের দুই কো-চেয়ারপার্সন সুলতানা কামাল ও এলসা স্টামাতোপেৌলো।
———————-
সিএইচটি নিউজ ডটকম’র প্রচারিত কোন সংবাদ, তথ্য, ছবি ব্যবহারের প্রয়োজন দেখা দিলে যথাযথ সূত্র উল্লেখপূর্বক ব্যবহার করুন।