ঢাকা : লংগদু গণহত্যার ২৯ বছর পূর্ণ হল আজ। ১৯৮৯ সালের ৪ মে আব্দুর রশিদ সরকার নামে এক উপজেলা চেয়ারম্যান অজ্ঞাত ব্যক্তি কর্তৃক হত্যার জের ধরে শতশত সেটেলার জড়ো হয়ে সেনাবাহিনীর সহযোগীতায় প্রথমে টিনটিলা নামক পাহাড়ি গ্রামে হামলা চালায়। এরপর পার্শ্ববর্তী কয়েকটি গ্রামে হামলা, লুটপাট ও বাড়িঘরে অগ্নিসংযোগ করে এবং নির্বিচারে দা, বল্লম, বর্শা ইত্যাদি সহকারে ব্যাপক হত্যাযজ্ঞ চালায়। এতে প্রায় ৩৬ জন পাহাড়ি নিহত হয়।

দিবসটি উপলক্ষে পার্বত্য চট্টগ্রামের তিন লড়াকু সংগঠন বৃহত্তর পার্বত্য চট্টগ্রাম পাহাড়ি ছাত্র পরিষদ (পিসিপি), হিল উইমেন্স ফেডারেশন (এইচডব্লিউএফ) ও গণতান্ত্রিক যুব ফোরাম (ডিওয়াইএফ) রাজধানী ঢাকায় এক আলোচনা সভা আয়োজন করে। বিকাল সাড়ে ৩টায় অনুষ্ঠিত সভায় সভাপতিত্ব করেন পিসিপি সভাপতি বিনয়ন চাকমা। আলোচনা করেন ইউপিডিএফ সংগঠক মাইকেল চাকমা, এইচডব্লিউএফ সভাপতি নিরূপা চাকমা, ডিওয়াইএফ দপ্তর সম্পাদক রিপন চাকমা।

সভা পরিচালনা করেন পিসিপি সাধারণ সম্পাদক অনিল চাকমা। সভার শুরুতে নিহতদের স্মরণে এক মিনিট নিরবতা পালন করা হয়।
সভায় বক্তারা বলেন, লংগদু গণহত্যা পার্বত্য চট্টগ্রাম ইতিহাসের এক গুরুত্বপূর্ণ বাঁক পরিবর্তন করে দেয়। লড়াই সংগ্রামের ইতিহাসে সূচিত হয় এক নতুন অধ্যায়। যুগ যুগ ধরে শোষণের বিরুদ্ধে ছাত্র-তরুণদের মনে গেঁথে থাকা পুঞ্জিভূত ক্ষোভ বিদ্রোহের ফুলকি হয়ে জম্ম নেয় একটি তেজোদীপ্ত সংগঠন- ‘পাহাড়ি ছাত্র পরিষদ’। এরপর পার্বত্য চট্টগ্রামের রাজনৈতিক সমস্যাকে দেশ-বিদেশে প্রচার লাভ করে।

বক্তারা আরো বলেন, লংগদু গণহত্যার ২৯ বছর পার হয়ে গেলেও দোষী সামরিক ও বেসামরিক ব্যক্তিদের শাস্তি হয়নি। ক্ষতিগ্রস্তদের ক্ষতিপুরণ দেয়া হয়নি। বর্তমান আওয়ামীলীগ সরকার পাশ্ববর্তী প্রতিবেশী দেশের সামরিক বাহিনী কর্তৃক গণহত্যা প্রমাণে মরিয়া হয়ে তৎপর হলেও দেশের সেনাবাহিনী যে পার্বত্য চট্টগ্রামে একই অপরাধের সাথে জড়িত, সেটা সচেতনভাবে গোপন রাখছে এবং এড়িয়ে যাচ্ছে।
বক্তারা লংগদু গণহত্যায় জড়িত সামরিক ও বেসামরিক দুবৃত্তদের দৃষ্টান্তমূলক শাস্তি ও ক্ষতিগ্রস্তদের ক্ষতিপূরণ দেয়ার দাবি জানান।
________
সিএইচটিনিউজ.কম’র প্রচারিত কোন সংবাদ, তথ্য, ছবি ব্যবহারের প্রয়োজন দেখা দিলে যথাযথ সূত্র উল্লেখপূর্বক ব্যবহার করুন।