সাজেকে উজো বাজার এলাকায় স্থাপিত বুদ্ধমূর্তির স্থানে ভূমি বেদখলের পাঁয়তারা!

0
28

সাজেক প্রতিনিধি, সিএইচটি নিউজ
রবিবার, ২১ মে ২০২৩

রাঙামাটির সাজেক ইউনিয়নের উজো বাজার এলাকায় সেনা চেকপোস্টের পাশে স্থাপিত বুদ্ধমূর্তির স্থানে ভূমি বেদখলের পাঁয়তারা চালানো হচ্ছে বলে স্থানীয়রা অভিযোগ করেছেন।

স্থানীয় সূত্রে জানা যায়, গতকাল শনিবার (২০ মে ২০২৩) বিকালে বাঘাইহাট সেনা জোনের (৬ বেঙ্গল) কমান্ডার লে, কর্ণেল মো. তৌহিদুল ইসলাম উক্ত জায়গাটি পরিদর্শন করেন। এরপর ওই এলাকায় সেনাবাহিনীর টহল বৃদ্ধি করা হয় এবং উজোবারের বাজারের ব্যবসায়ীদেরকে রাতে ডিউটি না করতে নির্দেশ দেওয়া হয়। পরে দিবাগত ১২টার সময়ে বাঘাইহাট বাজার থেকে সেনাবাহিনীর গাড়িতে করে প্রায় ১৫/২০ জন সেটলার বাঙালিকে এনে উজো বাজার সেনা চেক পোষ্টের সামনে নামিয়ে দিয়ে গাড়িটি পুনরায় জোনে চলে যায়। এছাড়া উজো বাজারের পার্শ্ববর্তী সেনাবাহিনীর ১৯ ইসিবি ক্যাম্পের সামনে গাছ, বাশঁ ও ঘর নির্মাণের সরঞ্জাম রাখা হয়েছে বলে স্থানীয়রা জানিয়েছেন।

আজ রবিবার (২১ মে) সকালে নাকশোছড়ি টাইগারটিলা ক্যাম্প থেকে ২০/২৫ জনের একটি সেনা টহল টিম উজো বাজারে এসেছে বলেও খবর পাওয়া গেছে।

সেনাবাহিনীর টহল বৃদ্ধি এবং সেটলার বাঙালিদের জড়ো করে নিয়ে আসার বিষয়টিকে কেন্দ্র করে স্থানীয় পাহাড়ি জনগণের মাঝে উদ্বেগ ও আতঙ্ক বিরাজ করছে। সেনাবাহিনী হয়তো বুদ্ধমূর্তি স্থানের জায়গাটি বেদখলের ষড়যন্ত্র করছে বলে অভিযোগ করেছেন স্থানীয়রা।

নাম প্রকাশের অনিশ্চুক স্থানীয় এক ব্যক্তি এ প্রতিবেদককে বলেন, সেনাবাহিনী উদ্দেশ্য তেমন ভালো মনে হচ্ছে না। তারা যে কোন মুহুর্তে কোন কিছু ঘটাতে পারে। গতকাল রাতে সেনারা স্থানীয় ব্যবসায়ীদের বার বার মোবাইলে কল দিয়ে নানা হুমকি প্রদান করেছে বলেও তিনি অভিযোগ করেন।

এদিকে, বাঘাইহাট বাজারের এক বাঙালি ব্যবসায়ী বলেন, উজো বাজারের পরিস্থিতিকে কেন্দ্র করে আজ রবিবার বাঘাইহাট বাজারের সপ্তাহিক হাট-বাজারের দিন হওয়া সত্ত্বেও ভয়ে অনেক লোকজন বাজারে আসেনি।

তিনি দুঃখ প্রকাশ করে বলেন, পাহাড়ি-বাঙালিদের মধ্যেকার সংঘটিত সাম্প্রদায়িক সহিংসতার জন্য বাঘাইহাট বাজারটি প্রায় ১০/১২ বছর বন্ধ ছিল। পরে পাহাড়ি-বাঙালিদের মধ্যে আলোচনা সাপেক্ষে বাজারটি পুনরায় চালু হয়। নতুন করে যদি সেনাবাহিনী উজো বাজারের বুদ্ধমূর্তির স্থানে ক্যাম্প বা চেক পোষ্ট নির্মাণ কিংবা কাউকে দিয়ে জায়গা বেদখল করার চেষ্টা করে তাহলে আবারো পুরোনো পরিস্থিতির উদ্ভব হতে পারে। এতে করে বাঘাইহাট বাজারে নেতিবাচক প্রভাব পড়তে পারে। তাই এমন কোন পরিস্থিতি সৃষ্টি হোক তা আমরা চাই না।

উল্লেখ্য, সেটলার বাঙালিদের দিয়ে ভূমি বেদখলকে কেন্দ্র করে ২০০৮ সালে ও ২০১০ সালে দু’দফায় পাহাড়িদের উপর আক্রমণের ঘটনা ঘটে। এতে পাহাড়িদের কয়েক শ’ ঘরবাড়ি পুড়িয়ে ছাই করে দেওয়া হয়েছিল। ২০১০ সালে সংঘটিত হামলায় সেনাবাহিনীর গুলিতে বুদ্ধপুদি চাকমা ও লক্ষ্মী বিজয় চাকমা নিহত হয়েছিলেন।


সিএইচটি নিউজে প্রকাশিত প্রচারিত কোন সংবাদ, তথ্য, ছবি ,ভিডিও, কনটেন্ট ব্যবহার করতে হলে কপিরাইট আইন অনুসরণ করে ব্যবহার করুন।


সিএইচটি নিউজের ইউটিউব চ্যানেলটি সাবস্ক্রাইব করুন

Print Friendly, PDF & Email

Leave a Reply

This site uses Akismet to reduce spam. Learn how your comment data is processed.