সাজেক প্রতিনিধি, সিএইচটি নিউজ
শুক্রবার, ৭ এপ্রিল ২০২৩

রাঙামাটির সাজেক ইউনিয়নের বামে বাইবাছড়া গ্রামে চৈত্র সংক্রান্তির আসন্ন ‘বিঝু’ উৎসব উপলক্ষে পাহাড়িদের ঐতিহ্যবাহী খেলাধুলার উদ্বোধনী অনুষ্ঠান অনুষ্ঠিত হয়েছে। ‘বিঝু উদযাপন কমিটি’ বামে বাইবাছড়া’ ৭ দিন ব্যাপী এই অনুষ্ঠানের আয়োজন করেছে।
আজ শুক্রবার (৭ এপ্রিল ২০২৩) সকাল ১০টার সময় ফিতা কেটে ও বেলুন উড়িয়ে অনুষ্ঠানের উদ্বোধন করেন প্রধান অতিথি সাজেক ইউনিয়নের ৪, ৫, ৬ নং ওয়ার্ডের সংরক্ষিত নারী আসনের মেম্বার সুমিতা চাকমা। এ সময় এলাকার জনপ্রতিনিধি, মুরুব্বী ও গণ্যমান্য ব্যক্তিবর্গ উপস্থিত ছিলেন।
উদ্বোধনী অনুষ্ঠানে স্থানীয় তরুণ-তরুণীরা নিজ নিজ জাতীয় পোশাক পরে অংশগ্রহণ করেন।
উদ্বোধনের পর স্থানীয় নৃত্য শিল্পীদের পরিবেশনায় মনোজ্ঞ পাহাড়ি নৃত্য পরিবেশন করা হয়।
ঐতিহ্যবাহী খেলাধুলার উদ্বোধনী অনুষ্ঠান উপলক্ষে আয়োজিত সভায় সভাপতিত্ব করেন সাধন চাকমা। প্রধান অতিথি ছিলেন সাজেক ইউনিয়নের ৪, ৫ ৬ নং ওয়ার্ডের সংরক্ষিত আসনের নারী মেম্বার সুমিতা চাকমা, বিশেষ অতিথি ছিলেন সাজেক ইউনিয়নের সাবেক চেয়ারম্যান নেলসন চাকমা ও বিমল কান্তি চাকমা। সভায় স্বাগত বক্তব্য রাখেন সাজেক ইউনিয়নের ৪নং ওয়ার্ডের মেম্বার দয়াধন চাকমা।

প্রধান অতিথির বক্তব্যে সুমিতা চাকমা বলেন, পার্বত্য চট্টগ্রাম দেশের অন্য ৬১টি জেলা থেকে ভিন্ন। এখানে নানান জাতি গোষ্ঠী ও সম্প্রদায়ের মানুষ একসাথে মিলেমিশে বসবাস করে। চৈত্র সংক্রান্তির এই উৎসব পার্বত্য চট্টগ্রামে প্রধান সামাজিক উৎসব। এ উৎসবের মাধ্যমে আমরা পুরানো দিনের সকল দুঃখ কষ্ট ভুলে, বড়দের আর্শীবাদ নিয়ে নতুন বছর নতুন করে শুরু করি। তাই এই উৎসব আমাদের সকল জাতি, সম্প্রদায়ের একটি মিলন মেলা।
তিনি আরও বলেন, সাজেক ইউনিয়নের মানুষ এখনো অনেক পিছিয়ে রয়েছে। শিক্ষা-দীক্ষাসহ নানা ক্ষেত্রে এ এলাকার মানুষ এখনো পিছনে পড়ে আছে। তাই সামনে এগিয়ে যাবার জন্য আমাদের নতুন প্রজন্মকে শিক্ষা, সংস্কৃতি, খেলাধুলাসহ সর্বক্ষেত্রে প্রস্তুতি নিতে হবে।
সাবেক চেয়ারম্যান নেলসন চাকমা বলেন, বিঝু উৎসব আমাদের সকলের একটি আনন্দের উৎসব। এই উৎসবের মাধ্যমে আমরা আমরা সকলেই পরিবার পরিজন নিয়ে সুখ-দুঃখ, আনন্দ ভাগাভঅগি করি এবং আমাদের জাতীয় সংস্কৃতি তুলে ধরার চেষ্টা করি। তিনি বলেন, পাহাড়িদের যে ঐতিহ্য, সংস্কৃতি রয়েছে তা যেন আমাদের নতুন প্রজন্ম শিখতে পারে সেজন্য সমাজের মধ্যে সেসব ঐতিহ্য সংস্কৃতিকে ধারণ ও সংরক্ষণ করতে হবে।

অনুষ্ঠানের সভাপতি সাধন চাকমার বক্তব্য শেষে পাহাড়িদের ঐতিহ্যবাহী ‘নাদেং খারা’, ‘ঘিলা খারা’ ও ধুধুক বাজিয়ে আনুষ্ঠানিকভাবে খেলাধুলার প্রতিযোগিতা শুরু করা হয়।
আয়োজকরা জানান, সপ্তাহ ব্যাপী এ আয়োজনে পাহাড়িদের ঐতিহ্যবাহী বিভিন্ন খেলাধুলা, শিশু-কিশোরদের চিত্রাঙ্কন প্রতিযোগিতা, পিঠা প্রদর্শনী, পাহাড়িদের ঐতিহ্যবাহী বাদ্যযন্ত্র ‘শিঙে’, ‘ধুধুক’, ‘হেংগ্রং’ পরিবেশনা ও সাংস্কৃতিক অনুষ্ঠান অনুষ্ঠিত হবে। অনুষ্ঠানটি আগামী ১৪ এপ্রিল শেষ হবে বলে জানিয়েছেন তারা।
সিএইচটি নিউজে প্রকাশিত প্রচারিত কোন সংবাদ, তথ্য, ছবি ,ভিডিও, কনটেন্ট ব্যবহার করতে হলে কপিরাইট আইন অনুসরণ করে ব্যবহার করুন।
সিএইচটি নিউজের ইউটিউব চ্যানেলটি সাবস্ক্রাইব করুন