খাগড়াছড়ি প্রতিনিধি, সিএইচটিনিউজ.কম
সেমুতাঙের গ্যাস পার্বত্য চট্টগ্রামের বাইরে পাচার ও সমাবেশে পুলিশী বাধার প্রতিবাদে আজ ৩ ডিসেম্বর শনিবার খাগড়াছড়ির জেলার মানিকছড়ি, রামগড়, মাটিরাঙ্গা ও লক্ষীছড়ি উপজেলায় পাহাড়ি ছাত্র পরিষদের ডাকা অর্ধদিবস (সকাল ৬টা থেকে দুপুর ১২টা) সড়ক অবরোধ সফলভাবে পালিত হয়েছে। তবে সকাল ৮টায় মানিকছড়ি উপজেলার লাপাইডং পাড়া এলাকায় সেনা মদদপুষ্ট বোরকা পার্টির সশস্ত্র সন্ত্রাসীরা গুলিবর্ষণ করে আতঙ্ক সৃষ্টি করে। এ সময় তারা অশোক চাকমা নামে এক ব্যক্তিকে ধরে নেয়ার চেষ্টা করে।
পাহাড়ি ছাত্র পরিষদের কেন্দ্রীয় সভাপতি অংগ্য মারমা এক বিবৃতিতে অর্ধদিবস সড়ক অবরোধ সফল করতে সহযোগিতা করায় এলাকার সর্বস্তরের জনগণ এবং সকল যানবাহন মালিক সমিতির প্রতি ধন্যবাদ জানিয়েছেন।
তিনি বলেন, স্থানীয়দের প্রবল আপত্তি ও প্রতিবাদ অগ্রাহ্য করে সেমুতাঙের গ্যাস চট্টগ্রামে সরবরাহ করা হচ্ছে। এটি গুরুতর অন্যায়, বৈষম্যমূলক ও উপনিবেশিক মানসিকতাদুষ্ট। স্থানীয়দের বঞ্চিত করে জোরজবরদস্তিমূলক পন্থায় এলাকার সম্পদ অন্যত্র পাচারের অন্যায় তৎপরতা কোন সচেতন ব্যক্তি মেনে নিতে পারেন না। তিনি সেমুতাঙের গ্যাস দিয়ে স্থানীয় চাহিদা পূরণের দাবিতে সোচ্চার হওয়ার জন্য সর্বস্তরের জনগণের প্রতি আহ্বান জানান।
বিবৃতিতে তিনি অভিযোগ করে বলেন, সরকার গ্যাসের দাবিতে আন্দোলন করতেও বাধা দিচ্ছে। গতকাল সেমুতাঙের গ্যাস বাইরে পাচারের প্রতিবাদে মানিকছড়িতে আয়োজিত সমাবেশ প্রশাসন ষড়যন্ত করে বানচাল করে দেয়ার চেষ্টা চালিয়েছে। তিনি গণতান্ত্রিক অধিকারের প্রতি যথাযথ সম্মান প্রদর্শনের জন্য সরকার ও প্রশাসনের প্রতি আহ্বান জানিয়েছেন।
তিনি অবিলম্বে সেমুতাঙের গ্যাস পার্বত্য চট্টগ্রামের বাইরে পাচার বন্ধ করে এ গ্যাস দিয়ে স্থানীয় চাহিদা পুরণ করা, পার্বত্য চট্টগ্রামের তেল-গ্যাস লুণ্ঠনের ষড়যন্ত্র বন্ধ করা এবং গণতান্ত্রিক অধিকারের উপর নগ্ন হস্তপে বন্ধ করার দাবি জানান।
শহীদ মংশে মারমার মৃত্যু বার্ষিকী পালিত
আজ ৩ ডিসেম্বর সকাল ৭টায় মানিকছড়ির বড়বিলে শহীদ মংশে মারমার শহীদ বেদিতে পুষ্পস্তবক অর্পণের মধ্যে দিয়ে মংশে মারমার ১২তম মৃত্যুবার্ষিকী পালিত হয়েছে। এ উপলক্ষে দুপুর সাড়ে ১২টায় মানিকছড়ির গুজা এলাকায় এক স্মরণ সভা অনুষ্ঠিত হয়। এতে পাহাড়ি ছাত্র পরিষদের কেন্দ্রীয় সভাপতি ক্যহাচিং মারমা সভাপতিত্বে বক্তব্য রাখেন ইউনাইটেড পিপল্স ডেমোক্রেটিক ফ্রন্ট(ইউপিডিএফ)-এর মানিকছড়ি ইউনিটের সংগঠক ধন চাকমা, গণতান্ত্রিক যুব ফোরামের মানিকছড়ি উপজেলা শাখার আহ্বায়ক আপ্রু মারমা, স্থানীয় এলাকার মুরুব্বী সুজেন্দ্র ত্রিপুরা ও বিজয়সেন ত্রিপুরা।
বক্তারা বলেন, মংশে মারমা হত্যার দীর্ঘ ১২ বছর অতিক্রান্ত হলেও খুনীদের এখনো গ্রেফতার করা হয়নি। বক্তারা অবিলম্বে খুনীদের গ্রেফতারপূর্বক দৃষ্টান্তমূলক শাস্তির দাবি জানান।
উল্লেখ্য, বিগত ১৯৯৯ সালের ৩ ডিসেম্বর সাংগঠনিক কাজে গেলে কালাপানি এলাকায় জেএসএস-এর সশস্ত্র সন্ত্রাসীরা মংশে মারমাকে হত্যা করে।