স্বাগত ২০২৫ : পার্বত্য চট্টগ্রামে অন্যায়-অবিচার বন্ধ হোক

0


স্বাগত ২০২৫ খ্রিষ্টাব্দ। খ্রিষ্টীয় নতুন বছরের সূচনা হলো আজ। বছরটি সবার জন্য শুভ হোক। সবাইকে খ্রিষ্টীয় নববর্ষের শুভেচ্ছা!

পার্বত্য চট্টগ্রামে ২০২৪ সাল জুড়ে অন্যায় ধরপাকড়, দমনপীড়ন, খুন, অপহরণ, সাম্প্রদায়িক হামলা-অগ্নিসংযোগের মতো অসংখ্য মানবাধিকার লঙ্ঘনের ঘটনা ঘটেছে। বম জনগোষ্ঠির নারী-পুরুষ-শিশুসহ বহু মানুষ এখনো কারাবন্দি অবস্থায় রয়েছেন। গত ৫ আগস্ট ছাত্র-জনতার অভ্যুত্থানে ফ্যাসিস্ট হাসিনা সরকারের পতনের পর দেশে ড. ইউনুসের নেতৃত্বে অন্তর্বর্তীকালীন সরকার দায়িত্ব নিলেও পার্বত্য চট্টগ্রামে সার্বিক পরিস্থিতির তেমন কোন উন্নতি হয়নি। হাসিনা সরকারের নিয়োজিত সামরিক-বেসামরিক কর্মকর্তারা এবং হাসিনার দোসররা এখনো বহাল তবিয়তে থেকে আগের মতোই নানা অন্যায়-অবিচার চালিয়ে যাচ্ছেন।

গত ৮ আগস্ট অন্তর্বর্তীকালীন সরকার দায়িত্ব গ্রহণের পর ১৯-২০ সেপ্টেম্বর ও ১ অক্টোবর খাগড়াছড়ির দীঘিনালা, খাগড়াছড়ি সদর ও রাঙামাটিতে পর পর চার দফায় সেনা-সেটলার কর্তৃক পাহাড়িদের ওপর হামলার ঘটনা ঘটেছে। এতে ৪ জনের প্রাণহানিসহ শতাধিক আহত হন। অগ্নিসংযোগ-ভাঙচুর-লুটপাট করা হয় ব্যবসাপ্রতিষ্ঠান, ঘরবাড়ি ও ধর্মীয় উপাসনালয়ে। এতে ব্যাপক ক্ষয়-ক্ষতির শিকার হন পাহাড়িরা। এ ঘটনায় অন্তর্বর্তীকালীন সরকারের চার উপদেষ্টার ঘটনাস্থল পরিদর্শন এবং সরকারিভাবে একটি তদন্ত কমিটি গঠন করা হলেও এখনো বিচারের কোন উদ্যোগ দেখা যাচ্ছে না। তদন্ত কমিটির রিপোর্টও এখনো প্রকাশ করা হয়নি।

এছাড়া গত ২৪ ডিসেম্বর খ্রিষ্টান সম্প্রদায়ের বড়দিনের উৎসবের রাতে বান্দরবানের লামা উপজেলার সরই ইউনিয়নের পূর্ববেতছড়া নামক ত্রিপুরা গ্রামে ভূমিদস্যুদের পোষ্য দুষ্কৃতকারীরা অগ্নিসংযোগ করে। এতে সেখানে বসবাসরত খ্রিষ্টান ধর্মাবলম্বী ত্রিপুরা পাড়াবাসীদের ১৭টি বসতঘর জ্বালিয়ে দেওয়া হয়। এ ঘটনায় ক্ষতিগ্রস্তরা এখনো মানবেতর জীবন-যাপন করতে বাধ্য হচ্ছেন।

বাংলাদেশে ফ্যাসিস্ট হাসিনা সরকারের পতনের জুলাই আন্দোলনে পার্বত্য চট্টগ্রামের জনগণও অংশ নিয়েছিলো। তার আগে হাসিনা সরকারের আয়োজিত ৭ জানুয়ারির প্রহসনমূলক নির্বাচন বয়কট করে ২৭ ভোটকেন্দ্র ভোটশূন্য করে পাহাড়ের জনগণ হাসিনার দুঃশাসনের প্রতি চ্যালেঞ্জ ছুঁড়ে দিয়েছিল। হাসিনা সরকারের পতনের পর স্বভাবতই পার্বত্য চট্টগ্রামের পাহাড়ি জনগণ আশা করেছিলো গোটা দেশের ন্যায় পার্বত্য চট্টগ্রামেও পরিস্থিতির পরিবর্তন ঘটবে, সেনাশাসনের অবসান হয়ে গণতান্ত্রিক শাসন কায়েম হবে, দূর হবে দমন ও বৈষম্যমূলক রাষ্ট্রীয় নীতির। কিন্তু তেমন কিছুই দেখা যাচ্ছে না।

নতুন বছর ২০২৫ খ্রিষ্টাব্দে পার্বত্য চট্টগ্রামে পাহাড়ি জনগণের ওপর চলমান অন্যায়-অবিচার, নিপীড়ন-নির্যাতন ও মানবাধিকার লঙ্ঘন যাতে বন্ধ হয় এবং সেখানে যাতে গণতান্ত্রিক পরিবেশ নিশ্চিত করা যায় সে লক্ষ্যে বর্তমান অন্তর্বতীকালীন সরকার পদক্ষেপ গ্রহণ করবে সে প্রত্যাশা সবার।



This website uses cookies to improve your experience. We'll assume you're ok with this, but you can opt-out if you wish. AcceptRead More