দীঘিনালা প্রতিনিধি : স্বৈরাচার প্রতিরোধ দিবস উপলক্ষে আজ ১৪ ফেব্রুয়ারি, বৃহস্পতিবার দীঘিনালায় আলোচনা সভা করেছে বৃহত্তর পার্বত্য চট্টগ্রাম পাহাড়ি ছাত্র পরিষদ(পিসিপি) দীঘিনালা শাখা।
‘অপসংস্কৃতির আগ্রাসনের বিরুদ্ধে ছাত্র-যুব সমাজ রুখ দাঁড়াও’ এই স্লোগান সামনে রেখে সকাল সাড়ে ১১টায় দীঘিনালা ইউনিয়নে পুকুরঘাট এলাকায় অনুষ্ঠিত আলোচনা সভায় পিসিপি দীঘিনালা শাখা সভাপতি জীবন চাকমার সভাপতিত্বে ও সহ-সাধারণ সম্পাদক তুজিম চাকমার সঞ্চালনায় বক্তব্য রাখেন ইউপিডিএফ এর দীঘিনালা ইউনিটের সদস্য দীপন চাকমা, পিসিপি খাগড়াছড়ি জেলা সাংগঠনিক সম্পাদক নিকেল চাকমা, গণতান্ত্রিক যুব ফোরামের দীঘিনালা উপজেলা সভাপতি সজীব চাকমা এবং পিসিপি দীঘিনালা সরকারি কলেজ শাখার সভাপতি রিটেন চাকমা প্রমুখ।
সভা শুরুতে স্বৈরাচার সরকারের ঘোষিত কুখ্যাত শিক্ষানীতির বিরুদ্ধে প্রতিবাদ করতে গিয়ে যারা নিজের জীবন দান করেছেন তাদের স্মরণ করে ১মিনিট নিরবতা পালন করা হয়।
সভায় বক্তারা বলেন, ১৯৮৩ সালের ১৪ ফেব্র্রয়ারি স্বৈরশাসক এরশাদের ঘোষিত কুখ্যাত শিক্ষানীতির বিরদ্ধে ছাত্র সমাজ যে প্রতিরোধ গড়ে তুলেছিল তারই ধারাবাহিকতায় স্বৈরশাসন বিরোধী আন্দোলন জোরদার হয়ে উঠেছিল। ফলশ্রুতিতে পরবর্তীতে স্বৈরশাসক এরশাদ ক্ষমতা ছেড়ে দিতে বাধ্য হয়। কিন্তু এই প্রতিরোধের চেতনাকে ভণ্ডুল করে দেয়ার জন্য পরিকল্পিতভাবে ১৪ ফেব্রুয়ারিকে ভালোবাসা দিবসে রূপান্তর ঘটানো হয়েছে।
তারা বলেন, বর্তমানে দেশে গণতান্ত্রিক শাসন ব্যবস্থা চললেও জনগণের কাঁধে এখনো রয়ে গেছে স্বৈরাচারের জোয়াল। ক্ষমতাসীন আওয়ামী লীগ সরকার গণতন্ত্রের আড়ালে একনায়কতান্ত্রিক ও স্বৈরশাসন কায়েম করে জনগণের উপর নিপীড়ন-নির্যাতন চালিয়ে যাচ্ছে।
বক্তারা আরো বলেন,পার্বত্য ও ছাত্র-যুব সমাজকে দমিয়ে রাখার জন্য আওয়ামীলীগ সরকার নানা ষড়যন্ত্র চালিয়ে যাচ্ছে। একদিকে মদ, ইয়াবাসহ বিভিন্ন মাদকদ্রব্য ঢুকিয়ে দিয়ে যুব সমাজকে ধ্বংস করে দেয়া হচ্ছে, অপরদিকে চাপিয়ে দেয়া হচ্ছে নানা অপসংস্কৃতি। আর এরই সুযোগে সেনাবাহিনীকে দিয়ে প্রতিবাদী শক্তি বিশেষত ইউপিডিএফ তার অঙ্গসংগঠনের নেতা-কর্মী ও সাধারণ জনগণকে অন্যায়ভাবে ধরপাকড় ও বিভিন্ন মিথ্যা মামলা দিয়ে নিপীড়ন ও হয়রানি জারি রাখা হয়েছে। শুধু তাই নয়, সমাজ বিরোধী কিছু দুর্বৃত্তকে দিয়ে মুখোশ বাহিনী গঠন করে দিয়ে প্রতিনিয়ত খুন, গুম, অপহরণ, চাঁদাবাজিসহ নানা সন্ত্রাসী কর্মকাণ্ড চালানো হচ্ছে।
বক্তারা স্বৈরাচার প্রতিরোধ দিবসের প্রতিবাদী চেতনাকে শানিত করে পার্বত্য চট্টগ্রামে সকল অন্যায়-অবিচারের বিরুদ্ধে গর্জে উঠার জন্য ছাত্র ও যুব সমাজের প্রতি আহ্বান জানান। একই সাথে বক্তারা সকল অপসংস্কৃতি বর্জন করে প্রগতিশীল সংস্কৃতি চর্চারও আহ্বান করেছেন।
উল্লেখ্য, ১৯৮৩ সালের ১৪ই ফেব্রুয়ারি স্বৈরাচারী এরশাদ সরকারের ঘোষিত শিক্ষানীতির বিরুদ্ধে ছাত্র সমাজ প্রতিবাদ সমাবেশে পুলিশ গুলি চালায়। এতে জয়নাল, জাফর, কাঞ্চন, দিপালী সহ অনেকে নিহত হয়। এছাড়া আটক করা হয় অসংখ্য ছাত্রকে। এরপর থেকেই দিনটি স্বৈরাচার প্রতিরোধ দিবস হিসেবে পালিত হয়ে আসছে।
——————–
সিএইচটি নিউজ ডটকম’র প্রচারিত কোন সংবাদ, তথ্য, ছবি ব্যবহারের প্রয়োজন দেখা দিলে যথাযথ সূত্র উল্লেখপূর্বক ব্যবহার করুন।