স্ব স্ব জাতিসত্তার স্বীকৃতির দাবিতে লক্ষ্মীছড়িতে তিন স্থানে বিক্ষোভ সমাবেশ

0

লক্ষ্মীছড়ি প্রতিনিধি ।। সংবিধানের পঞ্চদশ সংশোধনীর মাধ্যমে বাঙালি জাতীয়তা চাপিয়ে দেওয়ার এক দশক উপলক্ষে বাঙালি জাতীয়তা নয়, স্ব স্ব জাতিসত্তার স্বীকৃতি ও নতুন সংবিধানের দাবিতে লক্ষ্মীছড়িতে তিনটি স্থানে বিক্ষোভ মিছিল ও প্রতিবাদ সমাবেশ অনুষ্ঠত হয়েছে।

আজ ৩০ জুন, ২০২১, বুধবার গণতান্ত্রিক যুব ফোরাম, পাহাড়ি ছাত্র পরিষদ ও হিল উইমেন্স ফেডারেশনের লক্ষ্মীছড়ি উপজেলা শাখা যৌথভাবে লক্ষ্মীছড়ি উপজেলা সদর, বানরকাটা ও বাইন্যাছোলায় এ মিছিল ও প্রতিবাদ সমাবেশের আয়োজন করে।

উপজেলা সদর এলাকায় অনুষ্ঠিত সমাবেশে বক্তব্য রাখেন পাহাড়ি ছাত্র পরিষদের কেন্দ্রীয় সদস্য অমিত চাকমা, লক্ষীছড়ি উপজেলা সাংগঠনিক সম্পাদক জুয়েল চাকমা ও গণতান্ত্রিক যুব ফোরামের কেন্দ্রীয় সদস্য ক্যমরণ চাকমা।

বানরকাটা এলাকায় অনুষ্ঠিত সমাবেশে বক্তব্য রাখেন পাহাড়ি ছাত্র পরিষদের কেন্দ্রীয় সদস্য তুলতুল চাকমা ও লক্ষীছড়ি উপজেলা সভাপতি রুপান্ত চাকমা ও সদস্য রিটেন চাকমা।

আর বাইন্যাছোলায় অনুষ্ঠিত সমাবেশে বক্তব্য রাখেন গণতান্ত্রিক যুব ফোরামের লক্ষ্মীছড়ি উপজেলা সভাপতি উৎপল চাকমা, পাহাড়ি ছাত্র পরিষদের ঢাকা শাখার সহ-সাংগঠনিক সম্পাদক অর্নব চাকমা ও হিল উইমেন্স ফেডারেশনের লক্ষ্মীছড়ি উপজেলা দপ্তর সম্পাদক জেকি চাকমা প্রমুখ।

এসব সমাবেশে বক্তারা বলেন, সরকার উগ্র বাঙালি জাতীয়তা চাপিয়ে দিয়ে পাহাড়ি জাতিগোষ্ঠী ছাড়াও দেশের বাঙালি ভিন্ন অন্যান্য সকল জাতিগোষ্ঠীর স্বতন্ত্র পরিচয় কেড়ে নিয়েছে, যার কারণে বাঙালি ভিন্ন অন্য সকল জাতিগোষ্ঠীর অস্তিত্ব হুমকির মুখে পড়েছে।

বক্তারা আরও বলেন, বিশ্বের একজাতি গোষ্ঠীর কোনো দেশ নেই বললেই চলে, সেখানে বাংলাদেশে সংবিধানের মাধ্যমে বাঙালি জাতীয়তাবাদ চাপিয়ে দেওয়া সরকারের উগ্র বাঙালি জাতীয়তাবাদের বহিঃপ্রকাশ ঘটেছে।

বক্তারা সংবিধানের পঞ্চদশ সংশোধনী বাতিল করে নতুন সংবিধান প্রনয়ন করে দেশের সকল জাতিগোষ্ঠীর স্ব স্ব জাতীয় পরিচয়ের স্বীকৃতিসহ পার্বত্য চট্টগ্রামের জনগণের রাজনৈতিক অধিকার পূর্নস্বায়ত্তশাসনের দাবি মেনে নেয়ার জন্য সরকারের প্রতি আহ্বান জানান। অন্যথায় পার্বত্য চট্টগ্রামের জনগণ তাদের জাতির স্বীকৃতি এবং পূর্ণস্বায়ত্তশাসন আদায়ে দুর্বার আন্দোলন গড়ে তোলার হুঁশিয়ারি উচ্চারণ করেন বক্তারা।

বক্তারা পার্বত্য চট্টগ্রামে ভূমি বেদখল, উচ্ছেদ ও অন্যায় দমন-পীড়ন বন্ধেরও জোর দাবি জানিয়েছেন।

উল্লেখ্য, ২০১১ সালের ৩০ শে জুন আওয়ামী লীগ সরকার সংবিধানের পঞ্চদশ সংশোধনীর মাধ্যমে বাংলাদেশের বাঙালি ভিন্ন সকল জাতিগোষ্ঠীর জাতীয় পরিচয় বিলুপ্ত করে সকলকে বাঙালি বলে আখ্যায়িত করে। এ সংশোধনীর ফলে দেশের নাগরিকত্ব নির্ধারণ করে সংবিধানের ৬ অনুচ্ছেদের (২)-এ বলা হয়েছে ‘বাংলাদেশের সকল জনগণ জাতি হিসেবে বাঙালি এবং নাগরিকগণ বাংলাদেশী বলিয়া পরিচিত হইবেন”। যা বাঙালি ভিন্ন অন্যান্য সকল জাতিগোষ্ঠীর তাদের অস্তিত্বের জন্য হুমকি স্বরূপ।

সংসদে এই বিতর্কিত সংশোধনী পাস হওয়ার পর থেকেই পার্বত্য চট্টগ্রামের জুম্ম জনগণ তাদের জাতীয় পরিচয়ের সাংবিধানিক স্বীকৃতির জন্য মানববন্ধন, লাল কার্ড প্রদর্শন, সড়ক অবরোধ, বিক্ষোভ মিছিল সহ বিভিন্ন প্রতিবাদ কর্মসূচি পালিয়ে আসছে।


সিএইচটি নিউজে প্রকাশিত প্রচারিত কোন সংবাদ, তথ্য, ছবি ,ভিডিও, কনটেন্ট ব্যবহার করতে হলে কপিরাইট আইন অনুসরণ করে ব্যবহার করুন।

This website uses cookies to improve your experience. We'll assume you're ok with this, but you can opt-out if you wish. AcceptRead More