নান্যাচর(রাঙামাটি) প্রতিনিধি
সিএইচটিনিউজ.কম
বৃহত্তর পার্বত্য চট্টগ্রাম পাহাড়ি ছাত্র পরিষদ-এর নান্যাচর থানা শাখার উদ্যোগে ১৭তম নান্যাচর গণহত্যা দিবস উপলক্ষে আজ ২২ নভেম্বর ২০১০ নান্যাচরে এক সমাবেশ অনুষ্ঠিত হয়েছে। নান্যাচর উপজেলা সদরের রেস্ট হাউজ মাঠে সকাল ১১টায় অনুষ্ঠিত সমাবেশে সভাপতিত্ব করেন পাহাড়ি ছাত্র পরিষদের নান্যাচর থানা শাখার সভাপতি বিলাস চাকমা। এতে অন্যান্যের মধ্যে বক্তব্য রাখেন পাহাড়ি ছাত্র পরিষদের কেন্দ্রীয় সাংগঠনিক সম্পাদক থুইক্যসিং মারমা, গণতান্ত্রিক যুব ফোরামের কেন্দ্রীয় আহ্বায়ক মিঠুন চাকমা, হিল উইমেন্স ফেডারেশন-এর কেন্দ্রীয় সাংগঠনিক সম্পাদক রীনা দেওয়ান, পাহাড়ি ছাত্র পরিষদের খাগড়াছড়ি জেলা শাখার সাধারণ সম্পাদক আপ্রসি মারমা, মহালছড়ি থানা শাখার সভাপতি অসীম চাকমা, নান্যাচর কলেজ শাখার সভাপতি রিপন চাকমা ও হিল উইমেন্স ফেডারেশন-এর রাঙামাটি জেলা শাখার আহ্বায়ক যুথিকা চাকমা। সমাবেশে স্বাগত বক্তব্য রাখেন পাহাড়ি ছাত্র পরিষদের নান্যাচর থানা শাখার সাধারণ সম্পাদক বাবলু চাকমা ও পরিচালনা করেন পাহাড়ি ছাত্র পরিষদের নান্যাচর থানা শাখার দপ্তর সম্পাদক বিঘ্ন চাকমা। সমাবেশে দেড় হাজারের অধিক লোক অংশগ্রহণ করেন।
বক্তারা বলেন, ১৯৯৩ সালের ১৭ নভেম্বর পরিকল্পিতভাবে নান্যাচর বাজারে আসা নিরীহ লোকজনের উপর সেনারা ঝাঁপিয়ে পড়ে সেটলার বাঙালিদের লেলিয়ে দিয়ে নৃশংস হত্যাযজ্ঞ চালায়। এতে ৩০ জনের অধিক নিরীহ পাহাড়ি নিহত হন এবং আরো অনেকে আহত হন।
বক্তারা আরো বলেন, সেনাবাহিনী বার বার নান্যাচর গণহত্যার পুনরাবৃত্তি ঘটাতে চায়। গত ২৩ ও ২৯ আগস্ট নান্যাচর জোনের সেনাবাহিনী পাহাড়ি ছাত্র পরিষদ ও হিল উইমেন্স ফেডারেশন-এর নেতা-কর্মীদের গ্রেফতার করে মিথ্যা মামলা দিয়ে জেল হাজতে পাঠায় এবং ইউপিডিএফ-এর অফিস তালা লাগিয়ে দেয়। আজো ইউপিডিএফ্-এর অফিস খুলে দেয়া হয়নি। যা গণতান্ত্রিক অধিকারের উপর নগ্ন হস্তক্ষেপ ছাড়া আর কিছুই নয়।
বক্তারা বলেন, পার্বত্য চট্টগ্রামে এ যাবতকালে ডজনের অধিক গণহত্যা সংঘটিত করা হয়েছে। আজ পর্যন্ত কোন গণহত্যারই সঠিক তদন্ত রিপোর্ট প্রকাশ করা হয়নি। পার্বত্য চট্টগ্রাম থেকে পাহাড়ি জনগণকে চিরতরে উচ্ছেদের লক্ষে সরকার তথা শাসকগোষ্ঠির যে ষড়যন্ত্র-চক্রান্ত আ আজো অব্যাহত রয়েছে। গত ১৯-২০ ফেব্রুয়ারী সাজেক এবং ২৩ ফেব্রুয়ারী খাগড়াছড়িতে পাহাড়িদের উপর হামলা তারই দৃষ্টান্ত বহন করে। বক্তারা শাসক চক্রের সকল ষড়যন্ত্র-চক্রান্তের বিরুদ্ধে সজাগ ও সতর্ক থেকে প্রতিরোধ গড়ে তোলার জন্য জনগণের প্রতি আহ্বান জানান।
বক্তারা অবিলম্বে ইউপিডিএফ-এর অফিস খুলে দেয়া, নান্যাচর গণহত্যা সহ পার্বত্য চট্টগ্রামে সংঘটিত সকল গণহত্যার শ্বেতপত্র প্রকাশ, পার্বত্য চট্টগ্রাম থেকে সেনাবাহিনী প্রত্যাহারপূর্বক সেনা শাসন অপারেশন উত্তরণ বাতিল করা, সংবিধানে পার্বত্য চট্টগ্রামকে পৃথক স্বায়ত্তশাসিত অঞ্চল ঘোষণা ও জাতিসত্তার সাংবিধানিক স্বীকৃতির দাবি জানান।
সমাবেশ শেষে এক মিছিল বের করা হয়। মিছিলটি রেস্ট হাউজ মাঠ থেকে শুরু হয়ে নান্যাচর উপজেলা সদরের গুরুত্বপূর্ণ সড়ক ও বাজার ঘুরে এসে আবার রেস্ট হাউজ মাঠে এসে শেষ হয়।