রাঙামাটি।। পারিবারিক সমস্যার কারণে দল ছেড়ে সেনাবাহিনীর কাছে আশ্রয় নেয়া আনন্দ চাকমা ওরফে পরিচয়কে জুম্ম রাজাকার নামে পরিচিত সেনা-মদদপুষ্ট নব্য মুখোশ বাহিনীর সাথে কাজ করতে বাধ্য করা হচ্ছে বলে জানা গেছে।
গত বুধবার রাতে (৫ ডিসেম্বর) সে মহালছড়ি জোনে গিয়ে নিজের সংগ্রহ করা একটি পিস্তলসহ ‘আত্মসমর্পন’ করে। পরদিন অর্থাৎ গতকাল বৃহস্পতিবার তাকে সেনাদের আয়োজিত সংবাদ সম্মেলনে হাজির করা হয়।
সাংবাদিকদের কাছে সে নিজেকে ইউপিডিএফ সদস্য পরিচয় দিলেও খবর নিয়ে জানা গেছে সে চার বছর আগে জেএসএস ত্যাগ করে ‘সহায় সম্পত্তিসহ’ ইউপিডিএফের কাছে আশ্রয় নিয়েছিল। এরপর সে ইউপিডিএফকে বিভিন্ন কাজে সহযোগিতা করলেও তাকে নিয়মিত সদস্য হিসেবে অন্তর্ভুক্ত করা হয়নি।
‘আত্মসমর্পনের’ আগে তাকে তার বিরুদ্ধে ঝুলে থাকা মামলা তুলে নেয়া, জুম্ম রাজাকারদের বেদখলকৃত সম্পত্তি ও বাগান-বাগিচা ফেরত ও তার মেয়ের জন্য সরকারী চাকুরীর ব্যবস্থা করে দেয়ার আশ্বাস দেয়া হয়েছিল।
তবে ‘আত্মসমর্পনের’ পর পরই তার মোহভঙ্গ হয়েছে বলে জানা গেছে। তার দাবি ছিল সে ‘আত্মসমর্পনের’ পর নিজ বাড়িতে ফিরে গিয়ে ‘নিরিবিলি’ করে থাকবে, কোন দলের সাথে আর কাজ করবে না। কিন্তু আর্মিরা সেটা হতে দিচ্ছে না, বরং তাকে জুম্ম রাজাকারদের সাথে কাজ করতে বাধ্য করছে।
সংবাদ সম্মেলনের পরপরই আর্মিরা তাকে মুবাছড়িতে সংস্কারবাদী রাজাকারদের আস্তানায় নিয়ে যায়, যদিও তাদের জাতীয় স্বার্থ বিরোধী কাজের জন্য তাদেরকে তার চরম অপছন্দ।
সংবাদ সম্মেলনেও তাকে আর্মিরা ইউপিডিএফের বিরুদ্ধে কথা বলতে বাধ্য করেছে বলে জানা গেছে। বিচার বিভাগের প্রধানের মতো একটি দায়িত্বশীল পদে থাকা দূরের কথা, সে ইউপিডিএফের একজন সাধারণ সদস্যও নয়। সুতরাং তার পক্ষে ইউপিডিএফের গুরুত্বপূর্ণ তথ্য জানার কথা নয়।
অথচ আর্মিরা ইউপিডিএফের ভাবমূর্তি ক্ষুণ্ন করতে তাকে ইউপিডিএফের উচ্চপদে আসীন একজন দায়িত্বশীল নেতা হিসেবে পরিচয় দিতে বাধ্য করেছে।
ইউপিডিএফের রাঙামাটি ইউনিটের এক নেতার সাথে কথা বলে জানা গেছে, আনন্দ চাকমাকে কেবল তথ্য সংগ্রহের দায়িত্ব দিয়ে রাখা হয়েছিল। সে লেখাপড়া জানে না, তাই তকে গুরুত্বপূর্ণ সাংগঠনিক দায়িত্ব দেয়ার প্রশ্নই ওঠে না।
‘আত্মসমর্পনের’ পর আর্মিরা তাকে নিয়ে খেলতে শুরু করেছে বলে তিনি মন্তব্য করেন।
—————-
সিএইচটি নিউজ ডটকম’র প্রচারিত কোন সংবাদ, তথ্য, ছবি ব্যবহারের প্রয়োজন দেখা দিলে যথাযথ সূত্র উল্লেখপূর্বক ব্যবহার করুন।