অন্তু রায়ের পরিবারকে ক্ষতিপূরণসহ তিন দাবিতে প্রগতিশীল ছাত্র সংগঠনসমূহের বিক্ষোভ

0

ঢাকা ।। কুয়েট শিক্ষার্থী অন্তু রায়ের পরিবারকে ক্ষতিপূরণ, বিশ্ববিদ্যালয়সমূহে উন্নয়ন ফি এবং বিশ্ববিদ্যালয় মঞ্জুরী কমিশনের কৌশলপত্র বাতিলের দাবিতে বিক্ষোভ মিছিল ও সমাবেশ করেছে পাহাড়ি ছাত্র পরিষদসহ প্রগতিশীল ছাত্র সংগঠনসমূহ।

আজ সোমবার (১৮ এপ্রিল ২০২২) দুপুর সাড়ে ১২ টায় ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের মধুর ক্যান্টিন থেকে বিক্ষোভ মিছিল শুরু হয়ে ক্যাম্পাস প্রদক্ষিণ করে বটতলায় সমাবেশ অনুষ্ঠিত হয়। এতে সঞ্চালনা করেন বাংলাদেশ ছাত্র ইউনিয়ন কেন্দ্রীয় সংসদের সাধারণ সম্পাদক রাগীব নাঈম এবং সভাপতিত্ব করেন সমাজতান্ত্রিক ছাত্র ফ্রন্ট কেন্দ্রীয় কমিটির ভারপ্রাপ্ত সভাপতি ডাঃ জয়দীপ ভট্টাচার্য।

সমাবেশে বক্তব্য রাখেন পাহাড়ি ছাত্র পরিষদের সভাপতি সুনয়ন চাকমা, বিপ্লবী ছাত্র-যুব আন্দোলনের প্রচার সম্পাদক সোহবত শোভন, ছাত্র ফেডারেশনের সহ-সভাপতি দীপা মল্লিক, বিপ্লবী ছাত্র মৈত্রীর সভাপতি সাদেকুল ইসলাম সোহেল, ছাত্র ফেডারেশনের সাধারণ সম্পাদক সৈকত আরিফ, ছাত্র কাউন্সিলের সভাপতি আরিফ মঈনুদ্দিন, ছাত্র ইউনিয়ন জাহাঙ্গীরনগর বিশ্ববিদ্যালয়ের সংসদের সভাপতি রাকিবুল রনি।

বক্তারা বলেন, সম্প্রতি খুলনা প্রকৌশল ও প্রযুক্তি বিশ্ববিদ্যালয়ের তৃতীয় বর্ষের শিক্ষার্থী অন্তু রায় ‘আত্মহত্যা’  করেন। তিনি ছিলেন ড.এম এ রশীদ হলের শিক্ষার্থী। হলে আবাসন সংকটের জন্য তাকে মেসে থাকতে হতো। বাইরে থাকার খরচ এবং বিশ্ববিদ্যালয়ের অন্যায্য ফি মেটাতে তাকে আর্থিক সংকটে পড়তে হয়। আবাসিক হলে ভর্তি ফি এবং সিট বরাদ্দ বাবদ ৬,৬৭৫ টাকা বকেয়া ছিলো। এভাবে অন্যায্য এবং নামে -বেনামে আরোপিত ফি’র বোঝা সইতে না পেরে সে ‘আত্মহত্যা’ করে। এটা নিছক আত্মহত্যা হয়। অন্তু রায় রাষ্ট্রের অবহেলা এবং অন্যায় ব্যবস্থার বলি। এটা প্রাতিষ্ঠানিক হত্যাকান্ড।

বক্তারা আরও বলেন, শিক্ষা মৌলিক এবং মানবিক অধিকার। কিন্তু আমরা দেখতে পাচ্ছি, শিক্ষাকে কেনা-বেচার পণ্যে পরিনত করা হচ্ছে। যার টাকা আছে সে পড়তে পারছে,যার টাকা নেই সে পড়তে পারছে না। এভাবে চলতে থাকলে দেশের গরীব -নিম্নবিত্ত-মধ্যবিত্ত-মধ্যবিত্ত পরিবারের সন্তানরা শিক্ষা গ্রহন করতে পারবে না। এর বিষময় প্রভাব পড়বে গোটা সমাজে। একটি গণতান্ত্রিক রাষ্ট্র কখনোই শিক্ষার অধিকার থেকে তার নাগরিকদের বঞ্চিত করতে পারে না।

বক্তারা আরও বলেন, বিশ্বব্যাংকের পরামর্শে ২০০৬ সালে বিশ্ববিদ্যালয় মঞ্জুরী কমিশন একটি কৌশলপত্র তৈরি করে। যার মূল কথা হলো,রাষ্ট্র বিদ্যালয়সমূহে বরাদ্দ কমিয়ে দেবে। এবং বিশ্ববিদ্যালয় চলবে নিজস্ব আয়ে। অর্থাৎ এর মধ্য দিয়ে রাষ্ট্র তার নাগরিকদের শিক্ষা প্রদানের দায়িত্ব অস্বীকার করছে। এতে ছাত্রদের বেতন-ফি বাড়বে। গরীব পরিবারের ছাত্ররা উচ্চ শিক্ষা নিতে পারবে না। অন্যদিকে পাবলিক প্রতিষ্ঠানগুলোকে ধ্বংস করে দিয়ে মানুষকে বাধ্য করা হবে বিভিন্ন প্রাইভেট বিশ্ববিদ্যালয়ে পড়তে। যেখানে শিক্ষা নিয়ে অবাধ বানিজ্য চলবে। কিন্তু আমরা বলতে চাই, শিক্ষা কোন সুযোগ নয়,শিক্ষা আমাদের অধিকার

সমাবেশ থেকে বক্তারা অন্তু রায়ের পরিবারকে ক্ষতিপূরণ প্রদানের দাবি জানান এবং শিক্ষার বানিজ্যিকীকরণের বিরুদ্ধে ঐক্যবদ্ধ লড়াই গড়ে তোলার জন্য ছাত্রসমাজের প্রতি আহ্বান জানান।


সিএইচটি নিউজে প্রকাশিত প্রচারিত কোন সংবাদ, তথ্য, ছবি ,ভিডিও, কনটেন্ট ব্যবহার করতে হলে কপিরাইট আইন অনুসরণ করে ব্যবহার করুন।


সিএইচটি নিউজের ইউটিউব চ্যানেলটি সাবস্ক্রাইব করুন

This website uses cookies to improve your experience. We'll assume you're ok with this, but you can opt-out if you wish. AcceptRead More