আঞ্চলিক পরিষদ পুনর্গঠনের দাবিতে রামগড়ে ছাত্র-জনতার বিক্ষোভ

রামগড় প্রতিনিধি, সিএইচটি নিউজ
সোমবার, ১৮ নভেম্বর ২০২৪
নির্দলীয়, সৎ ও যোগ্য বিশিষ্ট ব্যক্তিদের নিয়োগ দিয়ে পার্বত্য চট্টগ্রাম আঞ্চলিক পরিষদ পুনর্গঠনের দাবিতে খাগড়াছড়ির রামগড়ে বিক্ষোভ মিছিল ও সমাবেশ করেছে ছাত্র-জনতা।
আজ সোমবার (১৮ নভেম্বর ২০২৪) সকাল ১০টার সময় ‘ফ্যাসিস্ট শাসনমুক্ত পার্বত্য চট্টগ্রাম চাই’ শ্লোগানে “ছাত্র-জনতার সংগ্রাম পরিষদ” এর ব্যানারে রামগড় উপজেলার যৌথ খামার এলাকায় খাগড়াছড়ি-ঢাকা সড়কে এই বিক্ষোভ মিছিল ও সমাবেশ করা হয়।
মিছিল পরবর্তী সমাবেশে এলাকার ছাত্র-জনতার পক্ষ থেকে বক্তব্য দেন তৈমাং ত্রিপুরা ও ধন ত্রিপুরা।

বক্তারা বলেন, অসৎ উদ্দেশ্যে শেখ হাসিনার সহযোগিদেরকে এখনও আঞ্চলিক পরিষদে বহাল রাখা হয়েছে। তাদেরকে আঞ্চলিক পরিষদে রাখার উদ্দেশ্য হলো পাহাড়ে ফ্যাসিজম বহাল রাখা, তাকে উৎসাহিত করা, যেন পাহাড় সব সময় অশান্ত থাকে। আর পাহাড় অশান্ত থাকলে তা কায়েমী স্বার্থবাদী গোষ্ঠীটির জন্য লাভ। গত ৫ আগস্ট ছাত্র-জনতার অভ্যুত্থানের পর দেশের বিভিন্ন প্রতিষ্ঠানের প্রধানরা, বিশ্ববিদ্যালয়ের ভিসিরা, উচ্চ আদালতের বিচারকরা স্বেচ্ছায় পদত্যাগ করছেন মান সম্মান বাঁচাতে। সন্তু বাবুদেরও তাই করা উচিত। সামান্যতম লজ্জা ও আত্মমর্যাদা থাকলে তারা বহু আগে পদত্যাগ করতেন।
তারা প্রশ্ন রেখে আরো বলেন, সন্তু লারমা একবার বলেছিলেন, একজন পুলিশ কনস্টেবলের যে ক্ষমতা, আঞ্চলিক পরিষদের চেয়ারম্যান হয়েও তার সেই ক্ষমতা নেই। তারপরও কেন তিনি আঞ্চলিক পরিষদের গদি কামড়ে থাকেন?

বক্তারা আঞ্চলিক পরিষদের বরাদ্দ নিয়েও প্রশ্ন তোলেন। তারা বলেন, সরকার থেকে আঞ্চলিক পরিষদে যে বরাদ্দ দেয়া হয় সেই টাকা কোথায় কীভাবে কোন খাতে খরচ করা হয় আমরা তা জানতে চাই, হিসাব চাই। এই টাকা সাধারণ জনগণের ট্যাক্সের টাকা। আঞ্চলিক পরিষদ গত ২৫-২৬ বছরে কী কাজ করেছে তার জবাবদিহি চাই। সাধারণ জনগণ আঞ্চলিক পরিষদ থেকে কিছুই পায়নি। সন্তু বাবুরা আঞ্চলিক পরিষদে বসে বসে কেবল ভাতা ও অন্যান্য সুযোগ সুবিধা ভোগ করেছেন, বাস্তবে জনগণের জন্য কোন কাজ করেননি। তারা জনগণের কল্যাণের জন্য কোন কাজ করেছেন এমন কোন নজীর নেই। আঞ্চলিক পরিষদ পুনর্গঠন পার্বত্য চট্টগ্রামের আপামর জনগণের দাবি।
বক্তারা বলেন, আঞ্চলিক পরিষদের চেয়ারম্যান-সদস্যদের ক্ষমতার মেয়াদ হলো ৫ বছর হলেও তারা ক্ষমতায় আছেন ২৫-২৬ বছর ধরে। তারা সম্পূর্ণ অবৈধভাবে ক্ষমতায় রয়েছেন। কারণ তারা নির্বাচিত নন। দ্বিতীয়ত, প্রতি ৫ বছর পর পর তাদেরকে সরকার পুনঃনিয়োগ দিয়েছে বলে আমরা কখনও শুনিনি, সংবাদ মাধ্যমেও এ বিষয়ে কোন খবর বের হয়নি। কাজেই সন্তু বাবুরা সম্পূর্ণ অবৈধভাবে আঞ্চলিক পরিষদে বসে আছেন। ১৯৯৯ সালে সেই যে তাদেরকে বসানো হলো, সেই পর থেকেই তারা আছেন সেখানে, যেন আঞ্চলিক পরিষদ তাদের বাপ দাদার সম্পত্তি।
সমাবেশ থেকে বক্তারা অবিলম্বে নির্দলীয়, সৎ ও যোগ্য বিশিষ্ট ব্যক্তিদের নিয়োগ দিয়ে পার্বত্য চট্টগ্রাম আঞ্চলিক পরিষদ পুনর্গঠনের জন্য অন্তর্বর্তীকালীন সরকারের প্রতি আহ্বান জানান।
সিএইচটি নিউজে প্রকাশিত প্রচারিত কোন সংবাদ, তথ্য, ছবি ,ভিডিও, কনটেন্ট ব্যবহার করতে হলে কপিরাইট আইন অনুসরণ করে ব্যবহার করুন।