আঞ্চলিক পরিষদ পুনর্গঠনের দাবিতে কাউখালীর বেতবুনিয়ায় ছাত্র-জনতার মানববন্ধন

আঞ্চলিক পরিষদ পুনর্গঠন এবং পরিষদে যোগ্য ব্যক্তিদের নিয়োগের দাবিতে
বেতবুনিয়ায় মানববন্ধন করে ছাত্র-জনতা
কাউখালী প্রতিনিধি, সিএইচটি নিউজ
মঙ্গলবার, ১৯ জুলাই ২০২৪
পার্বত্য চট্টগ্রাম আঞ্চলিক পরিষদ পুনর্গঠন এবং পরিষদে যোগ্য ব্যক্তিদের নিয়োগের দাবিতে রাঙামাটির কাউখালী উপজেলার বেতবুনিয়ায় মানববন্ধন কর্মসূচি পালন করেছে এলাকার ছাত্র-জনতা।
আজ মঙ্গলবার (১৯ নভেম্বর ২০২৪) সকাল ১০টায় “সন্তু লারমার অপসারণ চাই” ব্যানার শ্লোগানে “ছাত্র-জনতার সংগ্রাম পরিষদ’ এর ব্যানারে বেতবুনিয়া বাজারে এই মানববন্ধন অনুষ্ঠিত হয়। এ সময় আঞ্চলিক পরিষদ পুনর্গঠনের দাবি সম্বলিত বিভিন্ন প্ল্যাকার্ড প্রদর্শন ও শ্লোগান দেওয়া হয়।


মানববন্ধনে সাবেক ইউপি সদস্য অংসাজাই মার্মার সভাপতিত্বে ও শিক্ষার্থী অমিত চাকমার সঞ্চালনায় বক্তব্য রাখেন, শিক্ষার্থী উমেচিং মার্মা ও শিক্ষার্থী সুইহ্লামং মার্মা।
শিক্ষার্থী উমেচিং মার্মা বলেন, ১৯৭১ সালে বাংলাদেশ স্বাধীনতার পর পার্বত্য চট্টগ্রামে সেনাশাসনের মধ্য দিয়ে ‘ভাগ কর শাসন কর’ নীতি চলমান রেখেছে সরকার। পার্বত্য চট্টগ্রামে একদিকে সেনাবাহিনীর সহযোগিতায় সেটলার বাঙালি দিয়ে ভূমি বেদখল, নারী নির্যাতন, হত্যা চলমান রয়েছে আর একদিকে জুম্ম দিয়ে জুম্ম হত্যার পাঁয়তারা চালানো হচ্ছে।
তিনি আরো বলেন, ফ্যাসিস্ট হাসিনার আমলে ১৯৯৯ সাল থেকে আজ পর্যন্ত ২৫-২৬ বছর সন্তু বাবুদের কোনো নির্বাচন ছাড়া অবৈধভাবে আঞ্চলিক পরিষদে বসিয়ে রাখা তারই প্রমাণ। তিনি সৎ ও যোগ্য ব্যক্তিদের নিয়ে আঞ্চলিক পরিষদ পুনর্গঠনের জন্য অন্তবর্তীকালীন সরকারে কাছে দাবি জানান।

শিক্ষার্থী সুইহ্লামং মার্মা বলেন, ৫ আগষ্ট বৈষম্য বিরোধী ছাত্র আন্দোলনের ফলে ফ্যাসিস্ট হাসিনার পতন হলে অন্তর্বর্তীকালীন সরকারের নেতৃত্বে সংবিধান সংস্কার থেকে শুরু করে দেশের অনেক কিছু সংস্কার হচ্ছে। পার্বত্য চট্টগ্রামের জেলা পরিষদ সংস্কার করা হলেও আঞ্চলিক পরিষদ এখনো পুনর্গঠন করা হয়নি। আমরা যদি দেখি ১৯৯৯ সালে ফ্যাসিস্ট হাসিনার আমলে আঞ্চলিক পরিষদ গঠন করা হয়। সেই হাসিনা আমলে চেয়ার লোভী সন্তু বাবুরা ২৬-২৬ বছর ধরে অবৈধভাবে নির্বাচন ছাড়া ক্ষমতায় রয়েছেন।
তিনি আরো বলেন, ছাত্র-জনতার অভ্যুত্থানের ফলে বিশ্ববিদ্যালয়ের ভিসি থেকে শুরু করে বিচারক পর্যন্ত মানসম্মান বাঁচাতে পদত্যাগ করেছেন। সন্তুবাবুদেরও এটা করা উচিত। সামান্যতম লজ্জা, আত্মসম্মানবোধ থাকলে বহু আগে পদত্যাগ করতেন। সন্তু বাবু একবার বলেছিলেন ‘একজন পুলিশ কনস্টেবলের যে ক্ষমতা আছে একজন আঞ্চলিক পরিষদের চেয়ারম্যানের সেই ক্ষমতা নেই’ আমাদের প্রশ্ন হলো সন্তুবাবুরা তাহলে ২৫-২৬ বছর পর্যন্ত কেন মরা চেয়ার কামড়ে রয়েছেন?

শিক্ষার্থী সুইহ্লামং বলেন, সন্তুবাবুকে ২৫-২৬ বছর আঞ্চলিক পরিষদের ক্ষমতায় রাখার কারন একদিকে আওয়ামী লীগের দোসর হয়ে পাহাড়ে ফ্যাসিজম বহাল রাখা। পাহাড়কে অশান্ত রেখে স্বার্থবাদী গোষ্ঠীকে লাভবান করে ভাইয়ে ভাইয়ে সংঘাত বাঁধানোর জন্য উৎসাহিত করা আর আঞ্চলিক পরিষদের বরাদ্দ টাকা দিয়ে সন্তুবাবুদের পকেট ভারি করা।
তিনি জনগণের ট্যাক্সের টাকার হিসাব জনগণের কাছে জবাবদিহি করার জন্য এবং অন্তর্বর্তীকালীন সরকারের কাছে যোগ্য ব্যক্তিদের নিয়ে আঞ্চলিক পরিষদ পুনর্গঠনের জন্য দাবি জানান।

সভাপতির বক্তব্যে অংসাজাই মার্মা বলেন, পার্বত্য জেলা পরিষদ যদি পুনর্গঠন করা যায় তাহলে আঞ্চলিক পরিষদ কেন নয়? তিনি অন্তর্বর্তীকালীন সরকারের কাছে যোগ্য ও সৎ ব্যক্তিদের নিয়োগ দিয়ে আঞ্চলিক পরিষদ পুনর্গঠন করার জোর দাবি জানান।
সিএইচটি নিউজে প্রকাশিত প্রচারিত কোন সংবাদ, তথ্য, ছবি ,ভিডিও, কনটেন্ট ব্যবহার করতে হলে কপিরাইট আইন অনুসরণ করে ব্যবহার করুন।