আঞ্চলিক পরিষদ পুনর্গঠনের দাবিতে রাঙামাটির কুদুকছড়িতে বিক্ষোভ-সমাবেশ

আঞ্চলিক পরিষদ পুনর্গঠনের দাবিতে রাঙামাটির কুদুকছড়িতে বিক্ষোভ মিছিল ও সমাবেশ করে ছাত্র-জনতার সংগ্রাম পরিষদ। ছবি: প্রতিনিধি
রাঙামাটি প্রতিনিধি, সিএইচটি নিউজ
বুধবার, ২০ নভেম্বর ২০২৪
‘ফ্যাসিস্ট শাসনমুক্ত পার্বত্য চট্টগ্রাম চাই’ শ্লোগানে নির্দলীয়, সৎ, যোগ্য ব্যক্তিদের নিয়োগ দিয়ে পার্বত্য চট্টগ্রাম আঞ্চলিক পরিষদ পুনর্গঠনের দাবিতে রাঙামাটি সদর উপজেলার কুদুকছড়িতে বিক্ষোভ মিছিল ও সমাবেশ করেছে ছাত্র-জনতার সংগ্রাম পরিষদ।
আজ বুধবার (২০ নভেম্বর ২০২৪) বেলা ২টার সময় কুদুকছড়ি নির্বাণপুর বনবিহার গেইট থেকে বিক্ষোভ মিছিল শুরু হয়ে বড় মহাপূরম উচ্চ বিদ্যালয় ফটকে সমাবেশে মিলিত হয়।

আঞ্চলিক পরিষদ পুনর্গঠনের দাবিতে রাঙামাটির কুদুকছড়িতে বিক্ষোভ মিছিল ও সমাবেশ করে ছাত্র-জনতার সংগ্রাম পরিষদ। ছবি: প্রতিনিধি
এতে ছাত্র-জনতার সংগ্রাম পরিষদের উপদেষ্টা কমিটির নতুন জয় কার্বারীর সভাপতিত্বে ও পরিষদের যুগ্ম সম্পাদক শ্যামল কার্বারীর সঞ্চালনায় বক্তব্য রাখেন ছাত্র-জনতার সংগ্রাম পরিষদের সাধারণ সম্পাদক অনিল চন্দ্র চাকমা ও অর্থ সম্পাদক হরি কুমার কার্বারী।
সমাবেশে অনিল চন্দ্র চাকমা বলেন, হাসিনার পতনের আন্দোলনে পার্বত্য চট্টগ্রামের জুম্ম জনগণ অত্যন্ত আশা নিয়ে অংশগ্রহণ করলেও আপামর জনগণের আশা আকাঙ্ক্ষার প্রতিফলন ঘটেনি। অতীতের মতো পার্বত্য চট্টগ্রামে এখনো শাসন-শোষণ জারি রয়েছে।

আঞ্চলিক পরিষদ পুনর্গঠনের দাবিতে সমাবেশে অংশগ্রহণকারীদের একাংশ। ছবি: প্রতিনিধি
তিনি আরো বলেন, আমরা বর্তমান অন্তর্বর্তীকালীন সরকারের সংবিধান সংস্কার কমিটিতে পাহাড়-সমতলের সংখ্যালঘু জাতি থেকে একজন প্রতিনিধি রাখার আহ্বান জানিয়েছিলাম। কিন্তু সরকার তাও আমলে নেয়নি।
অনিল চন্দ্র চাকমা বলেন, সরকার বিচার ব্যবস্থা, সংবিধান সংস্কার থেকে শুরু করে নানা প্রতিষ্ঠানের সংস্কার কার্য পরিচালনা করছে। তার ধারাবাহিকতায় পার্বত্য জেলা পরিষদের পুনর্গঠন করা হয়। কিন্তু আঞ্চলিক পরিষদ গঠনের পর থেকে ২৫-২৬ বছর ধরে কোন পরিবর্তন হয়নি। সরকারের সকল প্রতিষ্ঠানে নির্দিষ্ট সময়ে নির্বাচনের মাধ্যমে পরিবর্তন হলেও আঞ্চলিক পরিষদে তা হয়নি। সন্তু লারমা অবৈধভাবে, অসাংবিধানিক ভাবে আঞ্চলিক পরিষদের চেয়ারে রয়েছেন। আজ পর্যন্ত আঞ্চলিক পরিষদের যে কোটি কোটি টাকার বরাদ্দ তার কোন হিসাব বা জবাবদিহিতা নেই। এ পরিষদের মাধ্যমে কোন উন্নয়নমূলক কাজ হয়েছে কিনা তাও আমরা জানি না। আমরা স্বচ্ছতা ও জবাবদিহিতামূলক আঞ্চলিক পরিষদ চাই।

তিনি পাহাড়িদের মধ্যেকার সংঘাত ও তার থেকে উত্তরণের জন্য ঐক্যের বিষয়েও কথা বলেন। তিনি বলেন, আমরা সত্যিকার অর্থে, মনে প্রাণে ঐক্য চাই। এই ঐক্যের জন্য দিন-রাত আমরা কাজ করতে দৃঢ় প্রতিজ্ঞ। তিনি জনগণের অধিকার প্রতিষ্ঠা ও নিরাপদ ভবিষ্যত নিশ্চিত না হওয়া পর্যন্ত সত্য ও ন্যায়ের পক্ষে আন্দোলন চালিয়ে যাওয়ার প্রত্যয় ব্যক্ত করেন।
হরি কুমার কার্বারি বলেন, আঞ্চলিক পরিষদ গঠন থেকে আজ পর্যন্ত কোন পরিবর্তন নেই। এ পরিষদের মাধ্যমে সরকার প্রতিবছর যে অর্থ বরাদ্দ দেয় তারও কোন হিসাব-নিকাশ নেই। তাই আমরা আঞ্চলিক পরিষদ পুনর্গঠন চাই।

তিনি আরো বলেন, জেএসএসকে বিভিন্নভাবে আমরা সহযোগিতা করেছিলাম। কিন্তু যারা ‘এগত্তরের’ কথা বলে তাদেরকে নানাভাবে হুমকি দেয় জেএসএস। ছাত্রদের আন্দোলনেও তারা বাধা সৃষ্টি করেছে। আমাদের জনগণের একটাই কথা তা হলো, ‘আমরা ঐক্য চাই, সংঘাত চাই না’।
নতুন জয় কার্বারী বলেন, পার্বত্য চট্টগ্রাম চুক্তির মাধ্যমে আঞ্চলিক পরিষদ গঠিত হয়েছে। কিন্তু ২৫-২৬ বছরে এ পরিষদে জুম্ম জনগণের জন্য দৃশ্যমান কোন উন্নয়নমূলক কাজ দেখা যায়নি। শান্তির জন্য চুক্তি করা হলেও পাহাড়ে অশান্তি বিরাজ করছে। ৫ বছর পরপর আঞ্চলিক পরিষদের নির্বাচন হওয়ার কথা থাকলে তা হয়নি। তিনি অবিলম্বে আঞ্চলিক পরিষদ পুনর্গঠনের জন্য অন্তবর্তীকালীন সরকারের কাছে দাবি জানান। প্রেস বিজ্ঞপ্তি।
সিএইচটি নিউজে প্রকাশিত প্রচারিত কোন সংবাদ, তথ্য, ছবি ,ভিডিও, কনটেন্ট ব্যবহার করতে হলে কপিরাইট আইন অনুসরণ করে ব্যবহার করুন।