আলীকদমে বনবিভাগ কর্তৃক এক ম্রো জুমচাষীর ফলজ বাগান ধ্বংসের অভিযোগ

0


অনলাইন ডেস্ক, সিএইচটি নিউজ
সোমবার, ২৩ জুন ২০২৫

বান্দরবানের আলীকদম উপজেলার ৩নং নয়াপাড়া ইউনিয়নের ৮নম্বর ওয়ার্ডের মেনথক পাড়ায় বনবিভাগ কর্তৃক অংলা ম্রো নামে এক জুমচাষীর সৃজিত ফলজ বাগান ধ্বংস করে করে দেয়ার অভিযোগ পাওয়া গেছে।

Rongthoing Mro নামের এক ব্যক্তি তাঁর ফেসবুকে ঘটনাটি জানিয়েছেন।

তিনি বলেন, “গত ২২ জুন ২০২৫ খ্রিস্টাব্দ, রবিবার, বান্দরবান জেলার, আলীকদম উপজেলার ৩ নং নয়াপাড়া ইউনিয়নের ৮ নম্বর ওয়ার্ড মেনথক পাড়ার একজন ম্রো ‘আদিবাসী’ জুমচাষি, অংলা ম্রো-এর জুমভিত্তিক চাষাবাদে লামা বন বিভাগের একটি টহল দল বিনা অনুমতিতে প্রবেশ করে এবং তাঁর চাষকৃত কলা, পেঁপে ও অন্যান্য গাছ সম্পূর্ণরূপে কেটে ফেলে এবং সেখানে বন বিভাগের গাছ রোপণ করে। এতে একদিকে তাঁর পরিবারের জীবিকার উৎস ধ্বংস হয়েছে, অন্যদিকে একটি ভোগদখলাধীন ঐতিহ্যগত জমিতে চরমভাবে আইনের লঙ্ঘন ও মানবাধিকারের অবমাননা ঘটেছে।”

বাংলাদেশের সংবিধানসহ বিভিন্ন আইনের ধারা উল্লেখ করে তিনি (Rongthoing Mro) বলেন, “বাংলাদেশ সংবিধানের ৪২ অনুচ্ছেদে ব্যক্তির সম্পত্তির অধিকার স্বীকৃত। সংবিধানের ৩১ ও ৩২ অনুচ্ছেদ অনুযায়ী, আইনগত প্রক্রিয়া ছাড়া কাউকে তাঁর জীবন, জীবিকা বা ভোগদখল থেকে বঞ্চিত করা যাবে না।

পার্বত্য চট্টগ্রাম রেগুলেশন, ১৯০০ অনুযায়ী পাহাড়ি জনগোষ্ঠী ঐতিহ্যগতভাবে যেসব জমিতে বসবাস ও চাষাবাদ করে আসছে, তা তাদের ভোগদখলের অধিকারভুক্ত। এই অধিকার উপেক্ষা করে কোনো ভূমি দখল বা পুনর্বিন্যাস আইনবিরোধী।

বাংলাদেশ বন আইন, ১৯২৭ (Forest Act) ও সংশ্লিষ্ট সংশোধন অনুযায়ী:

১। সংরক্ষিত বন ঘোষণার পূর্বে অবশ্যই সরকারকে গেজেট বিজ্ঞপ্তি দিতে হয় (ধারা ৫),

২। জনগণের দাবি শুনানির সুযোগ দিতে হয় (ধারা ৬),

৩। অনুমতি ছাড়া জমিতে প্রবেশ বা গাছ কাটা শাস্তিযোগ্য (ধারা ২৬ ও ৩৩)।

জাতিসংঘের আদিবাসী অধিকার সম্পর্কিত ঘোষণা (UN Declaration on the Rights of Indigenous Peoples – UNDRIP) অনুসারে:

ধারা ১০: আদিবাসীদের কোনো ভূমি থেকে পুনর্বাসন বা উচ্ছেদ করতে হলে তাদের “free, prior and informed consent” আবশ্যক।

ধারা ২৬: আদিবাসীদের তাদের ঐতিহ্যগতভাবে ব্যবহৃত ভূমি, অঞ্চল ও সম্পদের উপর সম্পূর্ণ অধিকার রয়েছে এবং রাষ্ট্রকে তা স্বীকৃতি ও সুরক্ষা দিতে হবে।”

এতে তিনি বলেন, “সম্মতি এবং পূর্ব জানানো ছাড়া অংলা ম্রো’ জুমে প্রবেশ ও গাছ কাটা, সেখানকার চাষ ধ্বংস করা এবং অন্য গাছ রোপণ করা সরাসরি উপরোক্ত জাতীয় ও আন্তর্জাতিক আইন ও নীতির সুস্পষ্ট লঙ্ঘন। একজন নাগরিকের সংবিধান-স্বীকৃত সম্পত্তির অধিকার লঙ্ঘিত হয়েছে। একজন আদিবাসীর ঐতিহ্যগত ভূমি অধিকার নস্যাৎ করা এবং তাঁর জীবিকা বিপন্ন করা সেইসাথে তাঁর শ্রমের বিনিময়ে যথাযথ সম্মান ও মূল্যায়ন দেওয়া হয়নি।”



This website uses cookies to improve your experience. We'll assume you're ok with this, but you can opt-out if you wish. AcceptRead More