ইউপিডিএফ সংগঠক শহীদ রূপক চাকমার ২২তম মৃত্যুবার্ষিকী আজ
নিজস্ব প্রতিনিধি, সিএইচটি নিউজ
বৃহস্পতিবার, ২১ সেপ্টেম্বর ২০২৩

আজ ২১ সেপ্টেম্বর ২০২৩ ইউপিডিএফের অন্যতম সংগঠক ও পাহাড়ি ছাত্র পরিষদের সাবেক সভাপতি শহীদ রূপক চাকমার ২২তম মৃত্যুবার্ষিকী। ২০০১ সালের আজকের এই দিনে ৮ম জাতীয় সংসদ নির্বাচন উপলক্ষে ইউপিডিএফ প্রার্থীর পক্ষে নির্বাচনী প্রচারণার কাজ করতে গিয়ে খাগড়াছড়ি জেলার পানছড়ি উপজেলার পুজগাঙের মধুমঙ্গল পাড়ায় জেএসএস-এর একদল সশস্ত্র সন্ত্রাসীর গুলিতে তিনি শহীদ হন। এ ঘটনায় মোহন চাকমা ও সুজিত চাকমা নামে আরও দু’জন গুরুতর আহত হন।
রূপক চাকমার জন্ম ১৯৭১ সালের ৬ এপ্রিল পুজগাঙের মধুমঙ্গল পাড়ায়। তার পিতার নাম বিমলেন্দু চাকমা ও মাতার নাম রঙ্গিলা চাকমা (প্রয়াত)।
খাগড়াছড়ি সদরের মহাজন পাড়া সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয় থেকে রূপক চাকমার পড়াশোনার পাঠ শুরু হয়। এরপর তিনি খাগড়াছড়ি সরকারি উচ্চ বিদ্যালয় থেকে এসএসসি, কুমিল্লা ভিক্টোরিয়া কলেজ থেকে এইচএসসি এবং জহাঙ্গীরনগর বিশ্ববিদ্যালয় থেকে ইতিহাস বিভাগে মাস্টার্স ডিগ্রী অর্জন করেন। কিন্তু তিনি কোন লোভ লালসার বশবর্তী না হয়ে নিজেকে জাতীয় মুক্তির সংগ্রামে নিয়োজিত করেন।
তিনি ২০০০ সালে অনুষ্ঠিত পাহাড়ি ছাত্র পরিষদের দশম কেন্দ্রীয় সম্মেলনে সংগঠনটির সভাপতি নির্বাচিত হন। তার আগে তিনি ঢাকা মহানগর শাখার সাধারণ সম্পাদক এবং কেন্দ্রীয় কমিটির বিভিন্ন গুরুত্বপূর্ণ পদে দায়িত্ব পালন করেছিলেন।
ইউপিডিএফ প্রতিষ্ঠাকালীন ১৯৯৮ সালের ২৫-২৬ ডিসেম্বর ঢাকায় পাহাড়ি গণ পরিষদ, পাহাড়ি ছাত্র পরিষদ ও হিল উইমেন্স ফেডারেশনের উদ্যোগে আয়োজিত পার্টি প্রস্তুতি সম্মেলন সফল করতে রূপক চাকমা গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করেছিলেন। পাহাড়ি ছাত্র পরিষদের দায়িত্ব পালন শেষে তিনি ইউপিডিএফের সাথে যুক্ত হন এবং শহীদ হবার আগ পর্যন্ত ইউপিডিএফের অন্যতম সংগঠক হয়ে পার্বত্য চট্টগ্রামের নিপীড়িত নির্যাতিত মানুষের অধিকার আদায়ের আন্দোলনে সক্রিয় ভূমিকা রাখেন।
পার্বত্য চট্টগ্রামে পাহাড়ি উদীয়মান নেতৃত্বের মধ্যে অন্যতম একজন ছিলেন রূপক চাকমা। কিন্তু ঘাতক জেএসএস সন্ত্রাসীরা তাঁকে বাঁচতে দেয়নি। সেদিন ঘাতকরা নির্বিচারে গুলি চালিয়ে নির্মমভাবে তাকে হত্যা করে উল্লাসে মেতে ওঠে। কিন্তু তারা জানে না চেতনার কখনো মৃত্যু হয় না।
শহীদ রূপক চাকমার স্মৃতি রক্ষার্থে খাগড়াছড়ি সদরের নারাঙহিয়া রেডস্কোয়ারে স্থাপন করা হয়েছে তাঁর আবক্ষমূর্তি। ২০১১ সালের একুশ সেপ্টেম্বর এই আবক্ষ মূর্তিটি উন্মোচন করা হয়। অপরদিকে তাঁর সহপাঠি ও বন্ধুরা মিলে ‘কমরেড রূপক চাকমা মেমোরিয়াল ট্রাস্ট’ গঠন করে কিছু গরীব ছাত্র-ছাত্রীকে বৃত্তি প্রদান করে যাচ্ছেন।
রূপক চাকমা আজ বেঁচে না থাকলেও তিনি নিপীড়িত মানুষের মুক্তির জন্য যে চেতনা ধারণ করেছিলেন সে চেতনার কোন মৃত্যু নেই। পার্বত্য চট্টগ্রামের লড়াই সংগ্রামের ইতিহাসে তিনি চিরস্মরণীয় হয়ে থাকবেন।
সিএইচটি নিউজে প্রকাশিত প্রচারিত কোন সংবাদ, তথ্য, ছবি ,ভিডিও, কনটেন্ট ব্যবহার করতে হলে কপিরাইট আইন অনুসরণ করে ব্যবহার করুন।
সিএইচটি নিউজের ইউটিউব চ্যানেলটি সাবস্ক্রাইব করুন