ঐতিহাসিক লোগাং লং মার্চের প্রতীক কড়ই গাছ কেটে ফেলায় পিসিপি’র প্রতিবাদ

খাগড়াছড়ি সরকারি কলেজে কেটে ফেলা হয়েছে লোগাং লংমার্চের স্মারকচিহ্ন ঐতিহাসিক কড়ইতলা নামে খ্যাত সেই কড়ই গাছটি।
খাগড়াছড়ি প্রতিনিধি, সিএইচটি নিউজ
শুক্রবার, ১২ জুলাই ২০২৪
খাগড়াছড়ি সরকারি কলেজে ঐতিহাসিক ‘কড়ইতলা’ নামে খ্যাত কড়ই গাছ কেটে ফেলায় তীব্র নিন্দা ও প্রতিবাদ জানিয়েছে বৃহত্তর পার্বত্য চট্টগ্রাম পাহাড়ি ছাত্র পরিষদ (পিসিপি)।
আজ শুক্রবার, (১২ জুলাই ২০২৪) পাহাড়ি ছাত্র পরিষদের সভাপতি অঙ্কন চাকমা ও সাধারণ অমল ত্রিপুরা এক যুক্ত বিবৃতিতে এই নিন্দা ও প্রতিবাদ জানান।
বিবৃতিতে কড়ইগাছটির ঐতিহাসিক গুরুত্ব তুলে ধরে পিসিপি’র নেতৃদ্বয় বলেন, লোগাং গণহত্যা (১০ এপ্রিল ১৯৯২)-এর প্রতিবাদে পিসিপি’র নেতৃত্বে খাগড়াছড়ি সরকারি কলেজের কড়ইতলা হতে ২৮ এপ্রিল লোগাং অভিমুখে এক ঐতিহাসিক পদযাত্রা অনুষ্ঠিত হয়। উক্ত পদযাত্রায় তৎকালীন স্বৈরাচার বিরোধী আন্দোলনে নেতৃত্বদানকারী ছাত্র সংগ্রাম পরিষদ ও রাজনৈতিক দলের প্রতিনিধিরাও অংশ নিয়েছিলেন।

ঐতিহাসিক লোগাং পদযাত্রা শুরুর দিকে কড়ইতলায় জমায়েতের চিত্র, ২৮ এপ্রিল ১৯৯২। ফাইল ছবি
কলেজের একাডেমী ভবন-০২ এর পাশে কড়ই গাছের পাদদেশ থেকে শুরু হওয়ায় স্থানটি পার্বত্য চট্টগ্রামের লড়াই-সংগ্রামের ইতিহাসে ঐতিহাসিক ‘কড়ইতলা’ নামে পরিচিতি পায়। শাসকগোষ্ঠীর ইঙ্গিতে পার্বত্য চট্টগ্রামের ইতিহাস মুছে ফেলতে ২০১৩-১৪ সালের দিকে তৎকালীন সরকারি কলেজের ভারপ্রাপ্ত প্রিন্সিপাল মোঃ আব্দুল লতিফ-এর সময়ে কড়ই গাছটি কেটে ফেলার উদ্যোগ নেয়া হলে, তৎকালীন পিসিপি’র নেতৃবৃন্দ যৌক্তিকভাবে বাধা দেয়ায় তা সফল হতে পারেনি। বিশেষত পাহাড়ি ছাত্র পরিষদের সাবেক সভাপতি শহীদ বিপুল চাকমা কলেজ প্রশাসনের এই অন্যায় পদক্ষেপের বিরুদ্ধে ছাত্রদের সংগঠিত করে প্রতিবাদ করলে কর্তৃপক্ষ তা বন্ধ রাখতে বাধ্য হয়।

বিবৃতিতে পিসিপি নেতৃদ্বয় লোগাং লং মার্চ ও পার্বত্য চট্টগ্রামের ছাত্রসমাজ তথা জনগণের আবেগ-অনুভূতির প্রতি সম্মান জানাতে ঐতিহাসিক স্মারকচিহ্ন হিসেবে কলেজ চত্বরে কর্তিত গাছটির গুড়ি বিশেষভাবে সংরক্ষণ এবং পাশে নতুন একটি উন্নত প্রজাতির কড়ই গাছ লাগানোর দাবি জানিয়েছেন।
উল্লেখ্য যে, গত ০৯ জুলাই ২০২৪ কলেজ প্রশাসন লোগাং লং মার্চের ঐতিহাসিক কড়ই গাছটি কেটে ফেলে। পার্বত্য চট্টগ্রামে সঠিক ও সংগ্রামী ইতিহাস মুছে ফেলতে রাষ্ট্রযন্ত্র উঠেপড়ে লেগেছে। নতুন প্রজন্মকে সঠিক ও সংগ্রামী ইতিহাস ভুলিয়ে রেখে সংগ্রাম বিমুখ করে রাখতে পরিকল্পিতভাবে এ ধরনের পদক্ষেপ গৃহীত হচ্ছে। ইতিমধ্যে ঐতিহাসিক বহু জায়গার নাম পরিবর্তন করে গৌরবময় অতীত মুছে ফেলার হীন প্রচেষ্টা পরিলক্ষিত হচ্ছে।
সিএইচটি নিউজে প্রকাশিত প্রচারিত কোন সংবাদ, তথ্য, ছবি ,ভিডিও, কনটেন্ট ব্যবহার করতে হলে কপিরাইট আইন অনুসরণ করে ব্যবহার করুন।