পার্বত্য চট্টগ্রামকে ‘জেলায় উন্নীতকরণ’ দিবস উপলক্ষে
কাউখালীতে আলোচনা সভা, স্বকীয়তা বজায় রেখে আন্দোলন করার আহ্বান
কাউখালী প্রতিনিধি ।। রাঙামাটির কাউখালীতে ‘‘স্বাধীন রাজ্য’’কে জেলায় (১৮৬০-১৯৪৭) রূপান্তরের পরিণতি ও পার্বত্য জনগণের অস্তিত্বের লড়াই” শীর্ষক আলোচনা সভায় বক্তারা বলেছেন, তথাকথিত জেলায় ”উন্নীতকরণের” মাধ্যমে পার্বত্য চট্টগ্রামকে বৃটিশরা ১৮৬০ সালে নিজ সাম্রাজ্যে অন্তর্ভুক্ত করে নেয়। এর মাধ্যমে আসলে একটা স্বাধীন রাজ্যকে জেলায় অবনমন করা হয়েছে। কোথায় একটা স্বাধীন রাজ্য আর কোথায় একটা জেলা। এ দুটোর মধ্যে বিস্তর ব্যবধান রয়েছে। তাই বক্তারা নিজস্ব জাতিগত বৈশিষ্ট্য ও স্বাতন্ত্র্য অক্ষুণ্ণ রেখে অধিকার আদায়ের সোচ্চার হওয়ার আহ্বান জানিয়েছেন।
আজ ০১ আগস্ট ২০২১, রবিবার, পার্বত্য চট্টগ্রামে “জেলায় উন্নীতকরণ” দিবসে পাহাড়ি ছাত্র পরিষদ, হিল উইমেন্স ফেডারেশন ও গণতান্ত্রিক যুব ফোরাম কাউখালী শাখার যৌথ উদ্যোগে এই আলোচনা সভার আয়োজন করা হয়।
“ইতিহাস বিকৃতির বিরুদ্ধে সচেতন হোন’ শ্লোগানে আয়োজিত আলোচনা সভায় সভাপতিত্ব করেন গণতান্ত্রিক যুব ফোরাম কাউখালী শাখার সভাপতি থুইনু মং মার্মা।
পিসিপি নেতা প্রজ্ঞা চাকমার সঞ্চালনায় সভায় আরো বক্তব্য রাখেন ইউপিডিএফ কাউখালী ইউনিটের সংগঠক অমিয় চাকমা, পাহাড়ি ছাত্র পরিষদ কেন্দ্রীয় কমিটির দপ্তর সম্পাদক শুভাশীষ চাকমা ও হিল উইমেন্স ফেডারেশন কাউখালী শাখার সাধারণ সম্পাদক পাইথুইমা মার্মা।
ইউপিডিএফ নেতা অমিয় চাকমা বলেন, আমাদের পূর্ব পুরুষরা স্বাধীন রাজ্যের অধিবাসী ছিলেন। তারা পরাধীন ছিলেন না। আজকের পার্বত্য অঞ্চল রাজনৈতিক–প্রশাসনিকভাবে অতীতে কখনই চট্টগ্রামের অংশ বা অন্তর্ভুক্ত ছিল না। এটি “পার্বত্য চট্টগ্রাম” নামেও অভিহিত ছিল না। “ চিটাগং হিল ট্রাক্টস বা পার্বত্য চট্টগ্রাম” নামটি ব্রিটিশ শাসকদেরই প্রদত্ত। অত্র এলাকায় প্রচুর তুলা উৎপাদন হতো বলে মোঘলরা একে “কার্পাস মহল” বলে উল্লেখ করত।
পিসিপি নেতা শুভাশীষ চাকমা বলেন, সরকারি ভাষ্য সাজানো, তা প্রকৃত ইতিহাস নয়। পার্বত্য চট্টগ্রামের প্রকৃত ইতিহাস নিয়ে ঔপনেবেশিক শাসক শ্রেণী থেকে শুরু করে বর্তমান পর্যন্ত প্রতিটি শাসক শ্রেণী মিথ্যাচার করে যাচ্ছে। তাই সবাইকে এ ব্যাপারে সজাগ ও সতর্ক থাকতে হবে।
যুবফোরাম নেতা থুইনু মং মার্মা বলেন, অতীতে পার্বত্য চট্টগ্রামের জনগণ আগ্রাসী শাসক গোষ্ঠীর বিরুদ্ধে বীরদর্পে যুদ্ধ করেছে। তারা অন্যায় অবিচার ও পরাধীনতার বিরুদ্ধে রুখে দাঁড়িয়েছে। মোঘল ও বৃটিশ আমলে এ অঞ্চলের জনগণের সংগ্রামের বীরত্ব গাঁথা রয়েছে। সেই সংগ্রামী ঐতিহ্য ধারণ করে বর্তমানেও আমাদের স্বাতন্ত্র্য ও স্বকীয় বৈশিষ্ট্য অক্ষুণ্ণ রেখে লড়াই সংগ্রাম চালিয়ে যেতে হবে।
সিএইচটি নিউজে প্রকাশিত প্রচারিত কোন সংবাদ, তথ্য, ছবি ,ভিডিও, কনটেন্ট ব্যবহার করতে হলে কপিরাইট আইন অনুসরণ করে ব্যবহার করুন।