কাপ্তাই হ্রদে পানির স্তর কমানোর দাবিতে নান্যাচরে কৃষকদের সমাবেশ ও প্রধানমন্ত্রী বরাবরে স্মারকলিপি পেশ

0

নান্যাচর প্রতিনিধি ি
সিএইচটিনিউজ.কম
জলেভাসা জমিতে ধান রোপনের মৌসুমে কাপ্তাই হ্রদে পানির স্তর কমানোর দাবিতে জলেভাসা জমির কৃষকরা আজ ২৮ ফেব্রুয়ারী বৃহস্পতিবার রাঙামাটির নান্যাচর উপজেলায় বিক্ষোভ মিছিল ও সমাবেশ করেছে এবং প্রধানমন্ত্রী বরাবরে স্মারকলিপি দিয়েছে।
আজ দুপুর ১২টায় নান্যাচর উপজেলা সদরের বিশ্রামাগার হতে একটি বিক্ষোভ মিছিল শুরম্ন হয়ে নান্যাচর বাজার প্রদক্ষিণ শেষে আবার বিশ্রামাগারে এসে শেষ হয়। মিছিল শেষে সেখানে এক বিক্ষোভ সমাবেশ অনুষ্ঠিত হয়। ২নং নান্যাচর ইউনিয়ন পরিষদের চেয়ারম্যান বিনয় কৃষ্ণ খীসার সভাপতিত্বে সমাবেশে বক্তব্য রাখেন নান্যাচর উপজেলা চেয়ারম্যান প্রীতিময় চাকমা ও সাবেক্ষ্যং ইউনিয়ন পরিষদের চেয়ারম্যান সুশীল জীবন চাকমা। এছাড়া সমাবেশে সংহতি জানিয়ে বক্তব্য রাখেন গণতান্ত্রিক যুব ফেরামের কেন্দ্রীয় সহ সাধারণ সম্পাদক সুপ্রীম চাকমা।
সমাবেশ শেষে বিনয় কৃষ্ণ খীসার নেতৃত্বে স্থানীয় হেডম্যান, কার্বারী ও কৃষকরা উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তার মাধ্যমে প্রধানমন্ত্রী বরাবরে একটি স্মারকলিপি পেশ করেন।
স্মারকলিপিতে তারা বলেন, ১৯৬০ দশকে কাপ্তাই বাঁধ নির্মাণ করা হলে আমাদের জমিগুলো হ্রদের পানিতে তলিয়ে যায়। সে সময় আমাদেরকে নামমাত্র ক্ষতিপূরণ দেয়া হয়। অনেকের কপালে অবশ্য সেটাও জোটেনি, তারা ভারত ও বার্মায় চলে যেতে বাধ্য হন। বর্তমানে আমাদের চাষবাস কাপ্তাই হ্রদের পানি বাড়ানো-কমানোর ওপর সম্পূর্ণ নির্ভরশীল। সাধারণত জানুয়ারী থেকে এপ্রিল মাসের মধ্যে পানির স্তর আস্তে আস্তে কমানো হলে আমরা ধান রোপন করি এবং বর্ষা মৌসুম শুরুর আগে ফসল ঘরে তুলি। কোন কোন বছর পানির স্তর দ্রুত বাড়ানো হলে রোপন করা ধান ঘরে তুলতে পারি না, পানির নীচে তলিয়ে যায়। ফলে আমাদের সকল পরিশ্রম পণ্ড হয় এবং অনাহারে অর্ধাহারে দিন কাটাতে হয়।
তারা বলেন, আমরা গভীর উদ্বেগের সাথে লক্ষ্য করছি যে, এ বছর ধান রোপনের মৌসুম প্রায় শেষ হতে চলেছে, তবুও কাপ্তাই হ্রদের পানির স্তর কমানো হচ্ছে না। ফলে আমরা আমাদের জমিতে ধান চাষ করতে পারছি না। আর চাষ করতে না পারলে কি খেয়ে বাঁচবো, কিভাবে ছেলেমেয়েদের পড়াশোনার খরচ যোগাবো বা কিভাবে সংসারের খরচ জোগাড় করবো তা ভেবে আমরা কোন কুল কিনারা পাচ্ছি না। এক কথায় আমরা এখন চোখে সর্ষে ফুল দেখছি।
স্মারকলিপিতে তারা ধান রোপনের সুবিধার্থে কাপ্তাই হ্রদের পানির স্তর দ্রুত কমানো এবং পাকা ধান ঘরে না তোলা পর্যন্ত্ পানির স্তর না বাড়ানো, হ্রদের পানি না কমানোর ফলে ক্ষতিগ্রস্ত্ম জলেভাসা জমির মালিকগণকে যথোপযুক্ত ক্ষতিপূরণ দেয়া, জলেভাসা জমির মালিকগণের সাথে আলোচনার ভিত্তিতে কাপ্তাই হ্রদের পানির স্ত্র বাড়ানো-কমানোর সুনির্দিষ্ট নীতিমালা তৈরির দাবি জানান।
স্মারকলিপিতে জনপ্রতিনিধিদের মধ্য থেকে স্বাক্ষর করেন নান্যাচর উপজেলা চেয়ারম্যান প্রীতিময় চাকমা, ভাইস চেয়ারম্যান কুমেন্দু চাকমা, নান্যাচর ইউপি চেয়ারম্যান বিনয় কৃষ্ণ খীসা, বুড়িঘাট ইউপি চেয়াম্যান প্রমোদ বিকাশ চাকমা, সাবেক্ষ্যং ইউপি চেয়ারম্যান সুশীল জীবন চাকমা, ঘিলাছড়ি ইউপি চেয়ারম্যান অমর জীবন চাকমা, ইউপি মেম্বার কল্পনা চাকমা, রিটন চাকমা, পূর্ণ কুমার চাকমা, অমিতা চাকমা, কাজলী ত্রিপুরা, আলোরাণী চাকমা, ভাগ্য চন্দ্র চাকমা, প্রভাত চন্দ্র চাকমা ও রঞ্জন চাকমা প্রমুখ, স্থানীয় মুরুব্বীদের মধ্যে স্বাক্ষর করেন পরান চন্দ্র কার্বারী, প্রদীপময় কার্বারী, হেডম্যান সত্য প্রসাদ দেওয়ান এবং কৃষকদের মধ্য থেকে স্বাক্ষর করেন জ্যোতির্ময় চাকমা, শান্তিময় চাকমা, সোনামুনি চাকমা, দর্পণ চাকমা, রিপন চাকমা, সুরেশ কান্তি চাকমা অরম্নণ জ্যোতি চাকমা, তুটি মিয়া, তাজিম উদ্দিন, হাসান মিয়া, আফাজ উদ্দিন, জালাল মিয়া প্রমুখ।
——————

This website uses cookies to improve your experience. We'll assume you're ok with this, but you can opt-out if you wish. AcceptRead More