কারাবন্দি বমদের অবিলম্বে মুক্তির দাবিতে চট্টগ্রামে পাহাড়ি ছাত্র পরিষদের সমাবেশ

চট্টগ্রাম প্রতিনিধি, সিএইচটি নিউজ
বৃহস্পতিবার, ২১ আগস্ট ২০২৫
কারাবন্দি নিরপরাধ বমদের অবিলম্বে মুক্তির দাবিতে চট্টগ্রাম প্রেসক্লাবের সামনে প্রতিবাদী সমাবেশ করেছে বৃহত্তর পার্বত্য চট্টগ্রাম পাহাড়ি ছাত্র পরিষদ (পিসিপি), চট্টগ্রাম মহানগর শাখা।
আজ বৃহস্পতিবার (২১ আগস্ট ২০২৫) বিকালে আয়োজিত এই সমাবেশ থেকে কারাবন্দি নিরপরাধ বমদের অবিলম্বে মুক্তি দেয়ার দাবি জানানো হয়। সমাবেশে বমদের মুক্তির দাবি করে বিভিন্ন প্ল্যাকার্ড প্রদর্শন করা হয়।
পিসিপি’র চট্টগ্রাম মহানগর শাখার সভাপতি সোহেল চাকমার সভাপতিত্বে ও সাংগঠনিক সম্পাদক দেবাশীষ চাকমা’র সঞ্চালনায় সমাবেশে সংহতি জানিয়ে বক্তব্য রাখেন, সমাজতান্ত্রিক ছাত্র ফ্রন্টের চট্টগ্রাম নগরের সভাপতি রিপা মজুমদার।

বক্তব্য রাখছেন রিপা মজুমদার।
সংহতি বক্তব্যে রিপা মজুমদার বলেন, পার্বত্য চট্টগ্রামে পাহাড়িদের ওপর প্রতিনিয়ত দমন-পীড়ন চলছে। গত জুন মাসে ভাইবোনছড়ায় ৮ম শ্রেণির এক স্কুল ছাত্রীকে ৬ জন সেটেলার বাঙালি কর্তৃক ধর্ষণ করা হয়েছে। ধর্ষকরা সকলেই বিএনপির রাজনীতির সাথে সম্পৃক্ত। কিন্তু প্রশাসনের পক্ষ থেকে ধর্ষকদের কোন দৃষ্টান্তমূলক শাস্তি দেয়া হয়নি।
তিনি বলেন, আওয়ামী লীগ সরকারের আমলেও পাহাড়ে নিপীড়ন-নির্যাতন, হত্যা, গুমের ঘটনা ঘটেছিল, বর্তমান অন্তর্বর্তী সরকারের আমালেও সেই একই নিপীড়ন-নির্যাতন আমরা দেখছি। পাহাড়িদের ওপর এই রাজনৈতিক নিপীড়ন-নির্যাতন বন্ধ করতে হলে পার্বত্য চট্টগ্রামে অবশ্যই সেনাশাসন প্রত্যাহার করতে হবে।
তিনি বলেন, রাষ্ট্র নিরপরাধ বমদের অন্যায়ভাবে কারাবন্দি করে রেখেছে। কারাাগরে একের পর এক বম নাগরিক মৃত্যুবরণ করছেন। তিনি অবিলম্বে কারাবন্দি নিরপরাধ বমদের মুক্তির দাবি জানান।
সভাপতির বক্তব্যে সোহেল চাকমা বলেন, বম জনগোষ্ঠীর নিরপরাধ লোকজনের কারাবন্দীর ৫০০ দিন পূর্ণ হয়েছে, অথচ রাষ্ট্র এখনো নির্বিকার। ২০২৪ সালের এপ্রিলে সংঘটিত বান্দরবানে ব্যাংক ডাকাতির নাটকীয় ঘটনাকে কেন্দ্র করে সামষ্টিকভাবে বম জনগোষ্ঠী ওপর চলছে নিষ্ঠুর দমন-পীড়ন। দুগ্ধ পোষ্য শিশু থেকে শুরু করে শিক্ষার্থী, খেলোয়াড়, নারী, বৃদ্ধসহ গণহারে গ্রেপ্তার করে চট্টগ্রাম কেন্দ্রীয় কারাগারে বন্দী রাখা হয়েছে। এ পর্যন্ত রাষ্ট্রীয় হেফাজতে কারাগারে ৩ জন নিরীহ বম নাগরিক মৃত্যুবরণ করেছেন, অনেকে অসুস্থ হয়ে পড়েছেন। কিন্তু তাদেরকে মুক্তি দেওয়া হচ্ছে না।

চব্বিশের জুলাই অভ্যুত্থানের এক বছর পেরিয়ে গেলেও কারাবন্দি বমদের মুক্তি না দেওয়ার কারণ কী প্রশ্ন করে তিনি বলেন, তাহলে বমদের মুক্তি রাষ্ট্রীয় বাহিনীর ওপরই নির্ভর করছে? যদি ফ্যাসিস্ট রাষ্ট্র কাঠামো পূর্বের মতোই জারী রাখা হয় তাহলে অন্তর্বর্তী সরকারের আইন ও বিচারব্যবস্থার ওপর জনগণ আস্থা রাখবে কিভাবে?
অবিলম্বে আটক বমদের কারামুক্তির দাবি জানিয়ে তিনি বলেন, বম জনগোষ্ঠীর নিরপরাধ লোকজনকে অন্যায়ভাবে কারাগারে বন্দী রাখা স্পষ্টই মানবাধিকার লঙ্ঘন। সুতরাং বমদের ওপর জাতিগত নিপীড়ন বন্ধ করতে হবে।
তিনি পার্বত্য চট্টগ্রামে রাজনৈতিক স্থিতিশীলতা ফিরিয়ে আনতে ও পাহাড়িদের ওপর কাঠামোগত দমন-পীড়ন বন্ধ করার জন্য পার্বত্য অঞ্চলকে ‘বিশেষ স্বায়ত্তশাসিত অঞ্চল’ ঘোষণা করার জন্য তিনি অন্তবর্তী সরকারের প্রতি আহ্বান জানান।
সিএইচটি নিউজে প্রকাশিত প্রচারিত কোন সংবাদ, তথ্য, ছবি ,ভিডিও, কনটেন্ট ব্যবহার করতে হলে কপিরাইট আইন অনুসরণ করে ব্যবহার করুন।