ঢাকায় হিল উইমেন্স ফেডারেশনের সংবাদ সম্মেলন

খাগড়াছড়িতে ত্রিপুরা স্কুল ছাত্রী সংঘবদ্ধ ধর্ষণ : নাগরিক তদন্তে পুলিশ ও প্রশাসনের দায়িত্ব অবহেলার আলামত

0



ঢাকা প্রতিনিধি, সিএইচটি নিউজ

বুধবার, ২৩ জুলাই ২০২৫খাগড়াছড়িতে সংঘবদ্ধ ধর্ষণের শিকার চট্টগ্রামে আশঙ্কাজনক অবস্থায় চিকিৎসাধীন ৮ম শ্রেণীর ছাত্রীর চিহ্নিত ধর্ষকদের বিরুদ্ধে আইনী প্রক্রিয়া গ্রহণে প্রশাসনের গাফিলতি ও পাহাড়-সমতলে নারী-শিশুর নিরাপত্তা  নিশ্চিত করার দাবিতে ঢাকায় সংবাদ সম্মেলন করেছে হিল উইমেন্স ফেডারেশন।

আজ বুধবার (২৩ জুলাই ২৯২৫) বিকাল ৪টায় ঢাকা জাতীয় প্রেসক্লাবের ৩য় তলাস্থ মাওলানা মোহাম্মদ আকরম খাঁ হলে এই সংবাদ সম্মেলন অনুষ্ঠিত হয়। সংবাদ সম্মেলন শুরুতে মাইলস্টোন স্কুল এন্ড কলেজে নিহতদের স্মরণে সকলে দাঁড়িয়ে এক মিনিট নিরবতা পালন করা হয়।

সংবাদ সম্মেলনে নাগরিক তদন্তে ত্রিপুরা স্কুল ছাত্রী ধর্ষণের ঘটনায় পুলিশ ও প্রশাসনের দায়িত্ব অবহেলার বিষয়টি গুরুত্ব সহকারে তুলে ধরা হয়েছে। এছাড়া ধর্ষণ বিরোধী মিছিলে শিক্ষার্থী-জনতার ওপর সেনাবাহিনীর হামলারও নিন্দা জানানো হয়েছে।   


হিল উইমেন্স ফেডারেশনের সদস্য রূপসী চাকমার সঞ্চালনায় সংবাদ সম্মেলনে লিখিত বক্তব্য পাঠ করেন ব্র্যাক বিশ্ববিদ্যালয় সহকারী অধ্যাপক নৃবিজ্ঞানী নাসরিন সিরাজ। তিনি সাংবাদিকদের বিভিন্ন প্রশ্নেরও উত্তর দেন।

এতে আরো উপস্থিত ছিলেন শিক্ষক ও সাংস্কৃতিক কর্মী তানিয়াহ মাহমুদা তিন্নী, গণতান্ত্রিক অধিকার কমিটি সদস্য ফেরদৌস আরা রুমী, বৃহত্তর পার্বত্য চট্টগ্রাম পাহাড়ি ছাত্র পরিষদ (পিসিপি)-এর সভাপতি অমল ত্রিপুরা, গণতান্ত্রিক ছাত্র কাউন্সিলের অর্থ সম্পাদক স্কাইয়া ইসলাম, মানবাধিকার আইনজীবি ইশরাত জাহান।


লিখিত বক্তব্য উল্লেখ করা হয়, আমরা বাংলাদেশের নাগরিকগণ অত্যন্ত ক্ষোভ ও উদ্বেগের সাথে লক্ষ করছি যে পার্বত্য চট্টগ্রামে একের পর এক ‘আদিবাসী’ নারী ধর্ষণের শিকার হচ্ছেন এবং পুলিশ-প্রশাসন তাদের ইনসাফ দিতে ব্যর্থ হচ্ছেন। সম্প্রতি আমরা আবার একই রকম ব্যর্থতার পরিচয় পেলাম।  

ভাইবোনছড়া ঘটনা সংঘবদ্ধ ধর্ষণের ঘটনার বিবরণ তুলে ধরে বলেন, পত্র পত্রিকার খবরে প্রকাশ পেয়েছে গত ২৭ জুন ২০২৫ রথযাত্রার মেলায় অংশ নেওয়ার পর সন্ধ্যায় বাড়িতে ফিরতে না পেরে ত্রিপুরা সম্প্রদায়ের অষ্টম শ্রেণীর একজন স্কুল ছাত্রী ভাইবোনছড়া বাজারস্থ উন্নয়ন বোর্ডের বাসভবনের পাশে এক আত্মীয়ের (দশম শ্রেণীর ছাত্র) মেস বাসায় রাত্রীযাপনের জন্য আশ্রয় নেয় রাত সাড়ে ৯টা দিকে সেটলার বাঙালি কর্তৃক সংঘবদ্ধভাবে ধর্ষণ করা হয়েছে। ধর্ষক সেটলার বাঙালি (যারা গাড়িচালক হিসেবে ঐ বাজার এলাকায় কাজ করে এবং বিএনপি রাজনীতির সাথে যুক্ত) সেই ছাত্র-মেসে আসে, ঐ ছাত্রী ও তার আত্মীয় ছাত্রটিকে অন্যদের থেকে আলাদা করে একটি ভিডিও ধারণ করে এবং হুমকি ধামকি দেয় যে ঐ দুই শিক্ষার্থী সেখানে তথাকথিত অসামাজিক কার্যকলাপ করছে। এরপর ঐ সেটলার বাঙালিরা মেয়েটির আত্মীয় ছাত্রটি সহ আরো যারা ঐ মেসে ছিল তাদের পাশের একটি রুমে আটকে রাখে। এবং মেয়েটিকে অন্য ঘরে নিয়ে পালাক্রমে ধর্ষণ করে।

এতে আরো বলা হয়, ধর্ষণ ঘটনাটি ঘটিয়ে এই ছয় বাঙালি সেটলার ভুক্তভোগী ছাত্রীটি সহ তার আত্মীয় ছাত্রদের শাসিয়ে যায় যে ধর্ষণের ঘটনা যেন তারা তাদের অভিভাবকদের না জানায়। তারা এও হুমকী দেয় এই ঘটনা জানাজানি হয়ে গেলে সবাইকে জানে মেরে ফেলা হবে, বাজারের ছাত্র-মেস থেকে তাদের উচ্ছেদ করে দেওয়া হবে এবং তাদের লেখাপড়া বন্ধ করে দেওয়া হবে। উল্লেখ্য যে, এই শিক্ষার্থীরা পানছড়ির প্রত্যন্ত অঞ্চলে বসবাস করে এবং শুধুমাত্র লেখাপড়ার জন্য তারা এই বাজার এলাকায় একটি বাসা ভাড়া করে হোস্টেল বানিয়ে থাকে।

ঘটনার বিবরণ তুলে ধরে আরো বলা হয়, সংঘবদ্ধ ধর্ষণের শিকার কিশোরী পরদিন তার নিজ বাড়িতে ফিরে যায়; কিন্তু ভয়ে, আতঙ্কে এবং লজ্জায় কাউকে কিছু জানায় না। কিন্তু ঘটনার দুই সপ্তাহ পর ১২ জুলাই তারিখ সে মানসিকভাবে বিপর্যস্ত হয়ে পড়ে এবং কীটনাশক পান করে আত্মহত্যার চেষ্টা করেv। পরিবারের লোকজন তাকে উদ্ধার করে খাগড়াছড়ি হাসপাতালে নিয়ে যায়। এরপর তার বড় বোন, যে নিজেও নবম শ্রেণীর ছাত্রী, তাকে আদর করে বিষপানের কারণ জিজ্ঞাসা করলে সে ১৬ জুলাই তারিখে তার সাথে ঘটে যাওয়া অন্যায়ের বিশদ বর্ণনা দেয়। ১৭ জুলাই ছাত্রীর বাবা বাদী হয়ে খাগড়াছড়ি সদর থানায় ৬ জনের নামে মামলা করেন। দায়েরকৃত মামলায় অভিযুক্তরা হলেন- ভাইবোনছড়া ইউনিয়নের স্বেচ্ছাসেবক দলের সভাপতি আরমান হোসেন (৩২), সদস্য ইমন হোসেন (২৫) ও এনায়েত হোসেন (৩৫), শ্রমিক দলের সাধারণ সম্পাদক সাদ্দাম হোসেন (৩২), বিএনপির যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক মো. মুনির ইসলাম (২৯) ও ছাত্রদলের সহসাংগঠনিক সম্পাদক মো. সোহেল ইসলাম (২৩)। সেদিন রাতেই পুলিশ অভিযুক্তদের মধ্য থেকে চার জনকে গ্রেফতার করে। এরা হলেন- আরমান হোসেন (৩২), ইমন হোসেন (২৫), এনায়েত হোসেন (৩৫), সাদ্দাম হোসেন (৩২) -কে গ্রেফতার করে। কিন্তু বাকী দুই আসামী এখনো পর্যন্ত পলাতক।


সংবাদ সম্মেলনে লিখিত বক্তব্যে আরো বলা হয়, ঘটনার প্রতিবাদে ও বিচারের দাবিতে ১৭ জুলাই ২০২৫ মুনিগ্রাম উচ্চ বিদ্যালয় ও ভাইবোনছড়া উচ্চ বিদ্যালয়সহ এলাকার বেশ কয়েকটি স্কুল-কলেজের শত শত শিক্ষার্থী রাজপথে নেমে বিক্ষোভ মিছিল করে। তাদের সাথে যুক্ত হয় বিভিন্ন এলাকার যুব-নারীসহ সর্বস্তরের লোকজন। বিক্ষোভ-প্রতিবাদ ভাইবোনছড়ায় সীমাবদ্ধ না থেকে খাগড়াছড়ি, রাঙামাটি, বান্দরবান, চট্টগ্রাম, ঢাকা, রাজশাহীতেও ছড়িয়ে পড়ে। বিভিন্ন সামাজিক সংগঠন ও রাজনৈতিক দলও প্রতিবাদে সামিল হয়। ইউপিডিএফ, বাসদ (মার্কসবাদী), সিপিবিসহ দেশের অন্যান্য রাজনৈতিক দল বিবৃতি দিয়ে ঘটনা নিন্দা ও প্রতিবাদ জানায়।

এতে বলা হয়, ১৭ জুলাই সকাল ১১টায় ভাইবোনছড়ায় উক্ত সংঘবদ্ধ ধর্ষণের ঘটনার প্রতিবাদে এবং ধর্ষণকারীদের দ্রুত গ্রেফতার-শাস্তির দাবিতে “সাধারণ শিক্ষার্থী ও যুব সমাজ”-এর ব্যানারে ভাইবোনছড়া বাজার এলাকায় বিক্ষোভ চলাকালে স্থানীয় ভাইবোনছড়া আর্মি ক্যাম্পের সেনা সদস্যরা বিক্ষোভকারীদের ওপর হামলা চালিয়েছে। সেনারা লাঠিচার্জ করে বিক্ষোভকারীদের ধাওয়া করে ছত্রভঙ্গ করে দেয় এবং কয়েক জনকে ধরে নিয়ে অমানুষিক শারীরিক নির্যাতন করে। এতে ডিবিসি নিউজের খাগড়াছড়ি জেলা প্রতিনিধি মিলন ত্রিপুরা ও এলাকার সাধারণ গ্রামবাসী জগৎ শান্তি চাকমা মারাত্মকভাবে জখম হন। সেনা সদস্যরা সাংবাদিক মিলন ত্রিপুরার কাছ থেকে ছবি তোলার কারণ জানতে চায় এবং ক্যামেরা থেকে ছবিগুলো তাদের সামনে মুছে ফেলতে বাধ্য করে। এছাড়া সেনাদের হামলায় মুক্তি বাবু ত্রিপুরা, সুনয়ন ত্রিপুরা, শিবা ত্রিপুরা, ও সৌরভ ত্রিপুরাসহ অনেকে আহত হয়েছেন।


চট্টগ্রাম সফরে বিস্তারিত বিবরণ তুলে ধরে লিখিত বক্তব্যে বলা হয়, উদ্বেগজনক পরিস্থিতিতে হিল উইমেন্স ফেডারেশনের আহ্বানে আমরা কয়েকজন নাগরিক গত ২২ জুলাই ২০২৫ ধর্ষণের শিকার ছাত্রীটির সাথে দেখা করতে চট্টগ্রাম যাই। আমাদের দলে ছিলেন ডাক্তার, শিক্ষক, আইনজীবী, বিভিন্ন রাজনৈতিক দল, নারী ও ছাত্র সংগঠন এবং মানবাধিকার সংস্থার কর্মীরা।  আমাদের তদন্তে মূলত উঠে আসে ভুক্তভোগী শিক্ষার্থীকে ইনসাফ দিতে পুলিশ ও প্রশাসনের দায়িত্বে অবহেলার আলামত। গ্রেফতারগুলো যেন শুধুই আমাদের চোখে ধুলো দেয়ার জন্য় করা হয়েছে। মামলা দুর্বল করতে পুলিশ নিজেই যেন অপতৎপরতা চালাচ্ছে।

লিখিত বক্তব্যে সফর দলের প্রতিনিধিদের পর্যবেক্ষণ পুলিশ ও প্রশাসনের অবহেলার ৫টি কারণ উল্লেখ করা হয়েছে।


১. ধর্ষণের মামলা হলেও পুলিশ ভুক্তভোগীর কোনো ডাক্তারী পরীক্ষা করায়নি 
আমাদের তদন্তে প্রথমেই ধরা পড়ে যে ভুক্তভোগীর কোনো ডাক্তারী পরীক্ষা করা হয়নি। এ বিষয়ে জানতে আমরা সাথে সাথে খাগড়াছড়ির পুলিশ সুপার আরেফিন জুয়েলের সাথে মোবাইল ফোনে যোগাযোগ করি। তাঁর কাছ থেকে আমরা জানতে পারি যে তিনি ভুক্তভোগীর ডাক্তারী পরীক্ষা করাননি কারণ তাঁর মনে হয়েছে অভিযোগ করতে করতে ভুক্তভোগী ২০ দিন পার করে ফেলেছে, এখন মেডিকেল রিপোর্ট নেগেটিভ আসবে।
 
পুলিশের গুরুদায়িত্ব অবহেলায় আমাদের তীব্র নিন্দা:
আমরা জানি ধর্ষণ মামলার বিচার প্রক্রিয়ায় অবশ্য়ই ভুক্তভোগীর ডাক্তারী পরীক্ষা করাতে হবে। এই মেডিকেল সার্টিফিকেট ছাড়া মামলাটি কিছুতেই আদালতে টিকবে না। রিপোর্ট নেগেটিভ আসবে এই অনুমানের ভিত্তিতে কিছুতেই পুলিশ এই পরীক্ষা করানোর দায় দায়িত্ব এড়িয়ে যেতে পারে না। এটা পরিষ্কারভাবে পুলিশের দায়িত্বে অবহেলা।

দাবী: পুলিশ প্রশাসন যেন আর বিলম্ব না করে এবং ভুক্তভোগী ত্রিপুরা ছাত্রীটির ডাক্তারী পরীক্ষা করতে আইনী পদক্ষেপ গ্রহণ করে।

২. খাগড়াছড়িতে ওয়ান স্টপ ক্রাইসিস সেন্টার নেই
আমরা খেয়াল করেছি যে, ধর্ষণের মতো একটি ভয়াবহ সহিংসতার শিকার হলে ভুক্তভোগী নারীরা বেশীরভাগ সময়ই আতঙ্কে ও লজ্জায় মানসিকভাবে বিপর্যস্ত হয়ে পড়ে এবং পুলিশের কাছে অভিযোগ জানাতে দেরি করে ফেলে। এই সব কিছু বিবেচনা করে বাংলাদেশ সরকার ওয়ান স্টপ ক্রাইসিস সেন্টার প্রতিষ্ঠা করেছে, যেখানে নারীবান্ধব পরিবেশে ভুক্তভোগী নারীর ডাক্তারী পরীক্ষা, মনোবিজ্ঞানীর সাহায্য়, পুলিশ ও আইনজীবী পাবার কথা। কিন্তু এই সেন্টারগুলো শুধু বিভাগীয় শহর পর্যায়েই রয়েছে। খাগড়াছড়ি জেলা শহরে ওয়ান স্টপ ক্রাইসিস সেন্টার নেই।

দাবী:  পুলিশ প্রশাসন যেন অবিলম্বে ভুক্তভোগী ত্রিপুরা ছাত্রীটির ডাক্তারী পরীক্ষা করতে চট্টগ্রামের ওয়ান স্টপ ক্রাইসিস সেন্টারে যথাযথ কাগজপত্র সহ রেফার করে। আমরা আরো দাবী করি সরকার যেন জেলা পর্যায়ে ওয়ান স্টপ ক্রাইসিস সেন্টার বানানোর উদ্যোগ গ্রহণ করে। পার্বত্য চট্টগ্রামের মতো প্রত্যন্ত অঞ্চলগুলোতে এই উদ্যোগ নেওয়া প্রান্তিক নারীদের ইনসাফ নিশ্চিতকরণে খুবই জরুরী।  
 
৩. পুলিশ প্রশাসন আত্মহত্যার প্ররোচনার বিষয়টি অবহেলা করেছে
আমরা খেয়াল করেছি ত্রিপুরা ছাত্রীটি বিষপান করে আত্মহত্যার চেষ্টা করার কারণে সংঘবদ্ধ ধর্ষণের ঘটনাটি পুলিশের নজরে আসে, কিন্তু ভুক্তভোগী কার প্ররোচনায় আত্মহত্যা করতে গেল সে বিষয়ে যে তদন্ত হতে পারে এবং হওয়া জরুরি সেটি পুলিশ সম্পূর্ণ অবহেলা করেছে।    
আমাদের দাবী: ভুক্তভোগী ত্রিপুরা ছাত্রীটিকে কারা আত্মহত্যা প্ররোচনা দিয়েছে সে বিষয়ে পুলিশ তদন্ত করুক।
 
৪.  ভুক্তভোগীকে নিয়ে অপপ্রচার ও সাইবার বুলিং
আমরা লক্ষ করছি যে, সংঘবদ্ধ ধর্ষণের ঘটনাটিকে ধামচাপা দিতে একটি কুচক্রী মহল নানাভাবে প্রচেষ্টা চালাচ্ছে। আগামীতে দেশের শাসন ক্ষমতা লাভের প্রত্যাশী একটি রাজনৈতিক দল সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে নানা বিভ্রান্তিকর ও মিথ্যা তথ্য প্রচারণা চালাচ্ছে এবং ভুক্তভোগীর মানহানি করার চেষ্টা করছে, ভুক্তভোগীকে ভয় দেখানোর চেষ্টা করছে যা শাস্তিযোগ্য অপরাধ।

এতে আরো বলা হয়, সাইবার নিরাপত্তা অধ্যাদেশ ধারা ২৫- অনলাইনে আপত্তিকর, মিথ্যা, বা হুমকিমূলক তথ্য এবং তথ্য প্রেরণ বা প্রকাশের অপরাধকে সংজ্ঞায়িত করে। এটি অপমান, হয়রানি বা মানহানির উদ্দেশ্যে করা কার্যকলাপকে অপরাধ হিসেবে গণ্য করে। এই ধারায় যেকোনো ইলেকট্রনিক মাধ্যমের মাধ্যমে কোনও ব্যক্তিকে অপমান, হয়রানি, ব্ল্যাকমেইল বা অপমান করা একটি দন্ডনীয় অপরাধ। এছাড়াও এই রাজনৈতিক দলটি নিজেরা বক্তব্য লিখে দিয়ে ত্রিপুরা জাতিভিত্তিক সামাজিক সংগঠনসমূহ ও তথাকথিত ‘পার্বত্য চট্টগ্রাম সম-অধিকার আন্দোলন’-এর ব্যানারে সংবাদ সম্মেলন করিয়েছে, যার মূল উদ্দেশ্য হচ্ছে বিভ্রান্তিমূলক তথ্য় ছড়িয়ে ধর্ষণের ঘটনায় অভিযুক্ত নিজ দলীয় নেতা-কর্মীদের সাহায্য় করছে ও প্ররোচনা দিচ্ছে। যা অপরাধে অংশগ্রহণের শামিল এবং দন্ডনীয় অপরাধ।  
 
দাবী: পুলিশ প্রশাসন যেন ভুক্তভোগীকে ঘিরে যে অপপ্রচার ও সাইবার বুলিয়িং চলছে সে বিষয়ে আইনানুগ ব্যবস্থা গ্রহণ করে।
 
৫. ধর্ষণবিরোধী বিক্ষোভে সেনা সদস্যদের হামলা অত্যন্ত ন্যাক্কারজনক
খাগড়াছড়িতে আদিবাসী শিক্ষার্থীদের ধর্ষণবিরোধী মিছিলে সেনাবাহিনীর হামলার তীব্র নিন্দা জানাই আমরা। আমাদের মনে প্রশ্ন জাগছে সেনাবাহিনী অপরাধী ও ধর্ষকদের রক্ষা করতে চাইছে কেন? কেন তারা নিজেদের আরো বিতর্কিত করছে? আমরা শুনেছি একটি রাষ্ট্রীয় ক্ষমতাশালী বিশেষ সংস্থা কর্তৃক ধর্ষণের ক্ষেত্রে মেডিকেল রিপোর্ট প্রদানের ব্যাপারে গোপন নিষেধাজ্ঞা রয়েছে। তবে কি সে কারণেই পার্বত্য চট্টগ্রামে এ যাবতকালের সংঘটিত ধর্ষণের কোনো ঘটনার সুষ্ঠু বিচার হয়নি?

দাবী: পার্বত্য চট্টগ্রামে সেনাশাসনের অবসান হোক এবং আদিবাসীদের বাংলাদেশের সমান অংশীদার হিসেবে, নাগরিক হিসেবে, অধিকার পাওয়ার ও দায় দায়িত্ব পালনের গণতান্ত্রিক রাজনৈতিক পরিবেশ প্রতিষ্ঠা করা হোক।

এছাড়া লিখিত বক্তব্যে ভাইবোনছড়ায় সংঘবদ্ধ ধর্ষণের শিকার স্কুল ছাত্রীর চিকিৎসার ব্যয়, সামাজিক নিরাপত্তাসহ পরিবারকে উপযুক্ত ক্ষতিপূরণ ও পাহাড়-সমতলে নারী ও শিশুদের নিরাপত্তা নিশ্চিত করার দাবি জানানো হয়।

ভাইবোন ছড়ায় সংঘবদ্ধ ধর্ষনের শিকার ত্রিপুরা ছাত্রীর সাথে সাক্ষাত করতে গত ২২ জুলাই ২০২৫ ঢাকা থেকে চট্টগ্রামে সফরে যাওয়া নাগরিক তদন্ত দলের প্রতিনিধিরা হলেন :
১. নাসরিন সিরাজ, নৃবিজ্ঞানী ও শিক্ষক
২. নীতি চাকমা, প্রেসিডেন্ট, হিল উইমেন্স ফেডারেশন
৩. ফেরদৌস আরা রুমী, সদস্য, গণতান্ত্রিক অধিকার কমিটি
৪. ব্যারিস্টার তাবাসসুম মেহনাজ, মানবাধিকার আইনজীবি
৫. ডা: সুরাইয়া ইয়াসমিন, চিকিৎসক ও ডক্টরস প্লাটফর্ম ফর পিপলস হেলথ
৬. তানিয়াহ মাহমুদা তিন্নী, শিক্ষক ও সাংস্কৃতিকর্মী
৭.  স্কাইয়া ইসলাম, অর্থ সম্পাদক, কেন্দ্রীয় কমিটি, গণতান্ত্রিক ছাত্র কাউন্সিল
৮. তাসমিয়া সুলতানা, স্টাফ ল ইয়ার, ব্লাস্ট (চট্টগ্রাম)
৯. মারজিয়া প্রভা, অধিকারকর্মী ও সদস্য, গণতান্ত্রিক অধিকার কমিটি
১০. অমল ত্রিপুরা, প্রেসিডেন্ট, বৃহত্তর পার্বত্য চট্টগ্রাম পাহাড়ি ছাত্র পরিষদ (পিসিপি)
১১. রিপা মজুমদার, সদস্য, নারী মুক্তি কেন্দ্র



This website uses cookies to improve your experience. We'll assume you're ok with this, but you can opt-out if you wish. AcceptRead More