খাগড়াছড়িতে পাহাড়িদের উপর আক্রমণকারীদের গ্রেপ্তার ও বিচারের দাবিতে প্রধানমন্ত্রীর বরাবরে স্মারকলিপি প্রদান
খাগড়াছড়ি প্রতিনিধি, সিএইচটিনিউজ.কম
খাগড়াছড়ি সদরের গোলাবাড়ি ইউনিয়নের রাজাবাড়ী সংলগ্ন মধুবাজার এলাকায় গত ১৫ এপ্রিল পাহাড়িদের উপর আক্রমণ ও ঘরবাড়ি, দোকানপাট ভাংচুর ও লুটপাটের সাথে জড়িতদের গ্রেপ্তার ও বিচারের দাবিতে জেলা প্রশাসকের মাধ্যমে প্রধানমন্ত্রীর বরাবরে স্মারকলিপি দিয়েছে এলাকাবাসী।
আজ ২০ এপ্রিল রবিবার সকালে উপজেলার জিরো মাইল, রাজবাড়ী পাড়া, গোলাবাড়ী হেডম্যান পাড়া, ঠাকুরছড়া, দক্ষিণ গোলাবাড়ী, মধু বাজার এলাকার জনগণের পক্ষে কালাচান চৌধুরী, আনুমং মারমা ও অংক্রাঙো মারমার স্বাক্ষরে এ স্মারকলিপিটি প্রদান করা হয়।
স্মারকলিপিতে বলা হয়, গত ১৫ এপ্রিল বিকাল আনুমানিক সাড়ে ৫টায় একটি তুচ্ছ ঘটনাকে ঘিরে সদলবলে উক্ত এলাকায় পাহাড়ি অধিবাসীদের উপর বাঙালিরা হামলা চালায়। এ সময় পাহাড়িদের ঘরবাড়ি, দোকানপাট ভাংচুর ও লুটপাট করা হয়। এ ঘটনার পর পরই বাজার থেকে বাড়ী ফেরা লোকজনের উপর তারা এলোপাথাড়ি মারধর করে ও সঙ্গে থাকা সাইকেল, মোবাইল ফোন ও নগদ অর্থ কেড়ে নেয়। বাঙালিদের সংঘটিত আক্রমণে ৩৫/৩৫ জন আহত হয়েছে এবং প্রায় দুই লক্ষাধিক টাকার ক্ষয়-ক্ষতি হয়েছে বলে স্মারকলিপিতে উল্লেখ করা হয়েছে।
স্মারকলিপিতে আরো বলা হয়, দীর্ঘ কয়েক বছর ধরে দুর্বৃত্তদের উৎপীড়নে জনজীবন বিপর্যস্ত হয়ে পড়েছে। গোলাবাড়ি এলাকা থেকে খাগড়াছড়ি বাজার, অফিস-আদালত এবং স্কুল কলেজে যাওয়ার জন্য গঞ্জপাড়ার বাঙালি পাড়ার রাস্তা দিয়ে যেতে হয়। এই রাস্তা দিয়ে যাওয়ার সময় এলাকার উচ্ছৃঙ্খল বখাটে তরুণেরা ছাত্রীদের ইভটিজিং ও যৌন হয়রানির চেষ্টা করে। এই তরুণেরা এতটাই বেপরোয়া হয়ে উঠেছে যে, তারা অসামাজিক ও অপরাধমূলক কর্মকান্ড, ছিনতাই, মারপিট ও জাতিগত বিদ্বেষ ছড়িয়ে এলাকায় জাতিগত সম্প্রীতির পরিবেশ নষ্ট করছে।
স্মারকলিপিতে অভিযোগ করে বলা হয়, সামাজিক ও রাজনৈতিক নেতৃবৃন্দ সহ আইন প্রয়োগকারী সংস্থার কাছে দ্বারস্থ হলেও এসবের কোন প্রতিকার হয় না। গত ১৫ এপ্রিল হামলার ঘটনার পর মামলা করা হলেও আজ পর্যন্ত দুর্বৃত্ত চক্রের কাউকে গ্রেপ্তার করা হয়নি। একটি প্রভাশালী মহলের ছত্রছায়ায় দুর্বৃত্তরা ধরাছোঁয়ার বাইরে থাকলে তারা আবার নিয়মিত অপকর্ম চালিয়ে যেতে পারে বলে স্মারকলিপিতে আশঙ্কা প্রকাশ করা হয়।
স্মারকলিপিতে তিন দফা দাবি জানানো হয়। দাবিগুলো হলো- ১. অবিলম্বে মামলায় এজাহারভুক্ত অপরাধীদের গ্রেপ্তার এবং তাদের দ্রুত বিচার আদালতের মাধ্যমে দৃষ্টিান্তমূলক শাস্তি, দুর্বৃত্তদের হামলায় আহত এবং ক্ষতিগ্রস্তদের উপযুক্ত ক্ষতিপূরণ দেয়া ও জাতিগত সম্প্রীতি রক্ষা ও সৌহার্দ্যপূর্ণ সহাবস্থান নিশ্চিত করতে জাতিগত সংঘাতের ষড়যন্ত্রকারীদের সর্বোচ্চ শাস্তি দেওয়া।