খাগড়াছড়িতে পিসিপি’র ৩২তম প্রতিষ্ঠাবার্ষিকী উপলক্ষে ছাত্র সমাবেশ

0

খাগড়াছড়ি প্রতিনিধি ।। বৃহত্তর পার্বত্য চট্টগ্রাম পাহাড়ি ছাত্র পরিষদ(পিসিপি)-এর ৩২তম প্রতিষ্ঠাবার্ষিকী উপলক্ষে খাগড়াছড়িতে ছাত্র সমাবেশ অনুষ্ঠিত হয়েছে।

আজ ২০ মে ২০২১, বৃহস্পতিবার সকালে পিসিপি’র খাগড়াছড়ি জেলা শাখা এই সমাবেশের আয়োজন করে।  

“৮৯ এর ছাত্র গণজাগরণের চেতনার মশাল জ্বালিয়ে পূর্ণস্বায়ত্তশাসনের আন্দোলন বেগবান করুন” এই শ্লোগানে সকাল ৯টার দিকে দলীয় সঙ্গীত ‘পাহাড়ি ছাত্র-ছাত্রী দল’ গানের মধ্য দিয়ে পিসিপি’র পতাকা ও জাতীয় পতাকা উত্তোলন করা হয়। পিসিপি’র পতাকা উত্তোলন করেন অগ্রণী শিশু-কিশোর কেন্দ্র’র চৌকস টীম ও জাতীয় পতাকা উত্তোলন করেন পিসিপি জেলা সভাপতি সমর চাকমা।

এরপর শহীদদের প্রতি শ্রদ্ধা ও সম্মান জানিয়ে ১ মিনিট নিরবতা পালন করা হয়।

সমাবেশে পিসিপি’র জেলা সভাপতি সমর চাকমার সভাপতিত্বে ও সাংগঠনিক সম্পাদক নরেশ ত্রিপুরার সঞ্চালনায় বক্তব্য রাখেন, ইউপিডিএফ এর খাগড়াছড়ি সদর ইউনিটের সংগঠক অংগ্য মারমা, পিসিপির কেন্দ্রীয় সাংগঠনিক সম্পাদক অমল ত্রিপুরা, হিল উইমেন্স ফেডারেশন এর কেন্দ্রীয় দপ্তর সম্পাদক নীতি চাকমা ও গণতান্ত্রিক যুব ফোরামের জেলা দপ্তর সম্পাদক লিটন চাকমা।

সমাবেশে অংগ্য মারমা বলেন, সংবিধানে বাঙালি জাতীয়তা চাপিয়ে দেয়ার মধ্য দিয়ে এটা স্পষ্ট যে পার্বত্য চট্টগ্রামসহ সারাদেশে সংখ্যালঘু জাতিসত্তাসমূহের বেঁচে থাকার ও জীবনের নিরাপত্তার জন্য রাজনৈতিক দাবিকে উপেক্ষা করা হয়েছে।

তিনি আরো বলেন, বাংলাদেশের ইতিহাসের আন্দোলন-সংগ্রামে ছাত্র সমাজের গুরত্বপূর্ণ ভূমিকা রয়েছে। পার্বত্য চট্টগ্রামে যে অচল অবস্থা তৈরী হয়েছে তা কাটিয়ে তুলতে ছাত্র সমাজকে বড় এক ঢেউ তুলতে হবে।

অংগ্য মারমা  ৮৯’র চেতনায় উজ্জীবিত হয়ে আগামীতে ছাত্র সমাজকে ঐক্যবদ্ধ হয়ে আন্দোলন চালিয়ে নিতে শপথ নেয়ার আহ্বান জানান।

অমল ত্রিপুরা বলেন, ৮৯’এ পিসিপি গঠনের পর ছাত্রসমাজকে ঐক্যবদ্ধ করে তীব্র আন্দোলন গড়ে তুলেছিল। পার্বত্য চট্টগ্রামে বর্তমানে বাকরুদ্ধ অবস্থায় নিমজ্জিত । এ সংকটময় পরিস্থিতি থেকে জাতিকে মুক্ত করতে ছাত্র সমাজকে এগিয়ে আসতে হবে। অধিকার প্রতিষ্ঠার আন্দোলনে সক্রিয় ভূমিকা রেখে আন্দোলন এগিয়ে নেয়ার আহ্বান জানান তিনি।

নীতি চাকমা বলেন, ছাত্র সমাজের পাশাপাশি নারীরাও কাঁধে কাঁধ রেখে অন্যায়ের বিরুদ্ধে আন্দোলন করেছিল। কল্পনা চাকমাকে অপহরণের মাধ্যমে নারীদের দমিয়ে রাখার চেষ্টা করা হয়েছে। কিন্তু নারীরা দমে যায়নি।

তিনি দুই যুগের অধিক সময় পার হলেও কল্পনা চাকমা অপহরণের সুষ্ঠু বিচার না হওয়ায় ক্ষোভ প্রকাশ করেন এবং চিহ্নিত অপহরণকারী লে. ফেরদৌস গংদের বিচারের দাবি জানান।

লিটন চাকমা বলেন, পার্বত্য চট্টগ্রামে ছাত্র সমাজের ভূমিকা এক গৌরবোজ্জ্বল অধ্যায়। ছাত্র-যুব-নারীর ঐক্যবদ্ধ শক্তিই পারেই অধিকার প্রতিষ্ঠা করতে।

সমর চাকমা বলেন, প্রতিষ্ঠার পর থেকে শাসকগোষ্ঠী অন্যায়-অত্যাচার, নির্যাতন, জেল-জুলুম ও হত্যা, গুম করেও পিসিপি’র আন্দোলন দমাতে পারেনি। বিভিন্ন বাধা-বিপত্তি পেরিয়ে পিসিপি লড়াই-সংগ্রামের গৌরবময় ৩২ বছর পূর্ণ করেছে। সকল ধরনের অন্যায়-অত্যাচারে বিরুদ্ধে আন্দোলন অব্যাহত রেখেছে। পার্বত্য চট্টগ্রামের নিপীড়িত জনগণের ন্যায্য অধিকার প্রতিষ্ঠা না হওয়া পর্যন্ত এই আন্দোলন চলবে বলে তিনি প্রত্যয় ব্যক্ত করেন।


সিএইচটি নিউজে প্রকাশিত প্রচারিত কোন সংবাদ, তথ্য, ছবি ,ভিডিও, কনটেন্ট ব্যবহার করতে হলে কপিরাইট আইন অনুসরণ করে ব্যবহার করুন

This website uses cookies to improve your experience. We'll assume you're ok with this, but you can opt-out if you wish. AcceptRead More