খাগড়াছড়িতে বিপুল-সুনীল-লিটন-রুহিনের হত্যাকারীদের গ্রেফতারের দাবিতে পিসিপি’র বিক্ষোভ

খাগড়াছড়ি প্রতিনিধি, সিএইচটি নিউজ
বৃহস্পতিবার, ১১ ডিসেম্বর ২০২৫
খাগড়াছড়ির পানছড়ি অনিলপাড়ায় চার ছাত্র-যুব নেতা বিপুল, সুনীল, লিটন ও রুহিনকে হত্যার সাথে জড়িত ঠ্যাঙাড়ে (নব্যমুখোশ) সন্ত্রাসীদের গ্রেফতার এবং পার্বত্য চট্টগ্রামে চলমান সেনা অভিযানে জনগণের ওপর হয়রানি বন্ধের দাবিতে খাগড়াছড়িতে বিক্ষোভ মিছিল করেছে বৃহত্তর পার্বত্য চট্টগ্রাম পাহাড়ি ছাত্র পরিষদ (পিসিপি), খাগড়াছড়ি জেলা শাখা।
আজ বৃহস্পতিবার (১১ ডিসেম্বর ২০২৫) বিকাল ৪ টায় বিক্ষোভ মিছিলটি খাগড়াছড়ি সদরের নারাঙহিয়া রেডস্কোয়ার হতে শুরু করে স্বনির্ভর বাজার চৌরাস্তায় গিয়ে সংক্ষিপ্ত সমাবেশের মধ্য দিয়ে শেষ হয়।
সমাবেশে পাহাড়ি ছাত্র পরিষদের খাগড়াছড়ি জেলা শাখার সাংগঠনিক সম্পাদক প্রাঞ্জল চাকমার সঞ্চালনায় বক্তব্য রাখেন সাধারণ সম্পাদক তৃষ্ণাঙ্কর চাকমা।

তৃষ্ণাঙ্কর চাকমা বলেন, শহীদ বিপুল, সুনীল, লিটন ও রুহিনকে যারা হত্যা করেছে তারা কাপুরুষের পরিচয় দিয়েছে। এমন উদীয়মান নেতাদের হত্যা করা মানে জাতির নেতৃত্বকে মেধাশূন্য করা।
তিনি আরো বলেন, চব্বিশের জুলাই গণঅভ্যুত্থানে ফ্যাসিস্ট হাসিনা সরকারের পতনের পর ড. ইউনুসের নেতৃত্বে অন্তর্বর্তীকালীন সরকার গঠন করা হলেও পার্বত্য চট্টগ্রামে হাসিনার আমলে সেনাবাহিনী দ্বারা সৃষ্ট এই ঠ্যাঙাড়ে নব্যমুখোশ সন্ত্রাসীদের বিরুদ্ধে কোন পদক্ষেপ নেওয়া হয়নি।
বর্তমান অন্তর্বর্তী সরকার হাসিনা সরকারের চেয়েও ফ্যাসিস্টের পরিচয় দিচ্ছে মন্তব্য করে তিনি বলেন, সেনাবাহিনী পথে পথে বাঙ্কার-চেকপোস্ট বসিয়ে সাধারণ জনগণকে তল্লাশির নাম হয়রানি করছে। অন্যায় ধরপাকড় করে মিথ্যা মামলা দিয়ে জেলে অন্তরীণ করছে।
তিনি বলেন, সেনাবাহিনীর অবস্থা দেখে মনে হচ্ছে পার্বত্য চট্টগ্রাম যেন যু্দ্ধাবস্থার পরিস্থিতি সৃষ্টি হয়েছে। মূলত যারা অন্যায়ের বিরুদ্ধে প্রতিবাদ করছে, আন্দোলন করছে তাদেরকে দমনের জন্যই সেনাবাহিনী এ ধরনের ভীতিজনক পরিস্থিতি তৈরি করছে বলে তিনি অভিযোগ করেন।

দুই বছরেও চার ছাত্র-যুব নেতার খুনিদের গ্রেফতার ও শাস্তি না হওয়ায় ক্ষোভ প্রকাশ করে তৃষ্ণাঙ্কর চাকমা বলেন, সরকার খুনের ঘটনায় জড়িত সন্ত্রাসীদের গ্রেফতার না করে সেনাবাহিনীর আশ্র এই নৃশংস খুনের সাথে যারা জড়িত একদিন জুম্ম জনতার গণআদালতে তাদের বিচার হবে।
তিনি আর কালক্ষেপণ না করে অবিলম্বে বিপুল, সুনীল, লিটন ও রুহিনের খুনি ঠ্যাঙাড়ে সন্ত্রাসীদের গ্রেফতার করে বিচার ও দৃষ্টান্তমূলক শাস্তির দাবি জানান।
এদিকে, মিছিল-সমাবেশ শেষ হওয়ার পরপরই সেনাবাহিনীর একটি দল লাঠিসোটা হাতে স্বনির্ভর বাজার এলাকায় উপস্থিত হয়ে জনমনে ভীতি সঞ্চারের চেষ্টা করে বলে জানা গেছে।
উল্লেখ্য, গত ২০২৩ সালের ১১ ডিসেম্বর রাতে পানছড়ি উপজেলার পুজগাঙের অনিল পাড়ায় সেনাবাহিনীর মদদে ঠ্যাঙাড়ে নব্যমুখোশ সন্ত্রাসীরা সশস্ত্র হামলা চালিয়ে গুলি করে উক্ত চার নেতাকে নৃশংসভাবে হত্যা করে।
সিএইচটি নিউজে প্রকাশিত প্রচারিত কোন সংবাদ, তথ্য, ছবি ,ভিডিও, কনটেন্ট ব্যবহার করতে হলে কপিরাইট আইন অনুসরণ করে ব্যবহার করুন।
