খাগড়াছড়িতে বৈ-সা-বি শোভাযাত্রা, প্রদর্শিত হলো নিপীড়নের চিত্র

0


খাগড়াছড়ি প্রতিনিধি, সিএইচটি নিউজ

শনিবার, ১২ এপ্রিল ২০২৫

পার্বত্য চট্টগ্রামে পাহাড়ি জাতিসত্তাগুলোর প্রধান সামাজিক উৎসব বৈ-সা-বি (বৈসুক-সাংগ্রাই-বিঝু-বিষু-বিহু…) উপলক্ষে খাগড়াছড়িতে অনুষ্ঠিত হয়েছে এক ব্যতিক্রমধর্মী শোভাযাত্রা। এতে ফ্যাসিস্ট হাসিনার ব্যঙ্গচিত্রসহ পার্বত্য চট্টগ্রামে নিপীড়ন-নির্যাতন, আগ্রাসনের চিত্র তুলে ধরা হযেছে।

আজ শনিবার (১২ এপ্রিল ২০২৫) সকাল ১০টায় “আসুন, উৎসবে একাত্ম হই, ঐতিহ্যের শক্তিতে বলিয়ান হয়ে স্ব স্ব জাতিসত্তার পরিচিত তুলে ধরি” এই শ্লোগানে ‌বৈসাবি উদযাপন কমিটি, খাগড়াছড়ি সদর’ ব্যানারে খাগড়াছড়ি শহরে এই শোভাযাত্রা অনুষ্ঠিত হয়।

শোভাযাত্রাটি খাগড়াছড়ি শহরের য়ংড বৌদ্ধ বিহার থেকে শুরু হয়। প্রথমে ত্রিপুরা জাতিসত্তার কাথারাক নৃত্য দিয়ে অনুষ্ঠান উদ্বোধন করা হয়। পরে য়ংড বৌদ্ধ বিহার থেকে শোভাযাত্রাটি শাপলা চত্ত্বর হয়ে মহাজন পড়া প্রাথমিক বিদ্যালয় সামনে পৌঁছলে ৫ মিনিটের মত দাঁড়িয়ে চাকমা, মারমা, ত্রিপুরা নৃত্য ও গরিয়া নৃত্য পরিবেশন করা হয়। পরে সেখান থেকে চেঙ্গী স্কোয়ার হয়ে স্বনির্ভর বাজারে এসে শোভাযাত্রাটি শেষ হয়।

শোভাযাত্রায় ফ্যাসিস্ট শেখ হাসিনার ব্যঙ্গচিত্রসহ পার্বত্য চট্টগ্রামে নিপীড়ন-নির্যাতনের চিত্র তুলে ধরা হয়। এতে প্রথম সারিতে শেখ হাসিনার ব্যঙ্গচিত্র (এতে লেখা ছিল ফ্যাসিস্ট হাসিনা), জুলাই অভ্যুত্থান লেখা নেইমপ্লেট, একজন মানুষকে রশি দিয়ে বাঁধা চিত্র (যাতে পাহাড়ি জনগণের নিপীড়ন তুলে ধরা হয়েছে), পার্বত্য চট্টগ্রাম মানচিত্র শেষে এক দৈত্যের প্রতিকৃতি (যাতে পার্বত্য চট্টগ্রাম আগ্রাসন বুঝানো হয়েছে) দেখা গেছে। শেষে ককসীটের ওপরে লেখা ‍‌‘শহীদ আবু সাঈদ, মুগ্ধ, জুনান, রুবেল, অনিক, ধন রঞ্জনের রক্ত বৃথা যেতে দেবো না’ শ্লোগানে রক্ত মাখা টি-শার্টে দুই কিশোরকে (জুনান, রুবেলের প্রতিকৃতি হিসেবে) দেখানো হয়েছে।

শোভাযাত্রায় ‘বৈসাবি’র চেতনায় ভ্রাতৃত্বের বন্ধন সুদৃঢ় হোক’ শ্লোগান সম্বলিত ব্যানার-ফেস্টুন বহন করা হয়। এছাড়াও মঙ্গলের প্রতীক হিসেবে কলসির ভিতরে আমপাতা ও এর ওপরে বোতলে জ্বলন্ত প্রদীপ অঙ্কন এবং অপর আরো এক স্থানে পার্বত্য চট্টগ্রামে হারিয়ে যাচ্ছে এমন প্রাণী, বস্তু, হাতি, ময়ুর ও পাহাড়িদের ঐতিহ্যবাহী ঘিলা খেলা নিয়ে আঁকা চিত্র তুলে ধরা হয়েছে।

শোভাযাত্রায় চার শতাধিক শিশু, কিশোর-কিশোরী, নারী-পুরুষ অংশগ্রহণ করেন।

শোভাযাত্রা শেষে রূপসী চাকমা বলেন, পার্বত্য চট্টগ্রামকে গ্রাস করতে শকুনের ন্যায়  বিভিন্ন স্বার্থান্বেষী মহল ষড়যন্ত্র করছে। কাজেই সকলে মিলে সেসব অপশক্তিগুলোকে প্রতিহত করতে হবে। অতীতে লড়াই-সংগ্রামের ইতিহাস ও ঐতিহ্য থেকে সাহস, অনুপ্রেরণা নিয়ে সামনের দিকে এগিয়ে যেতে হবে। আমাদেরকে স্ব স্ব জাতিসত্তার পরিচিত তুলে ধরতে হবে।তিনি উৎসবের চেতনায় সকলকে ঐক্য সংহতি জোরদার করার আহ্বান জানান।



This website uses cookies to improve your experience. We'll assume you're ok with this, but you can opt-out if you wish. AcceptRead More