খাগড়াছড়ির মানিকছড়ি ও দীঘিনালায় ইউপিডিএফ’র দুই সদস্য হত্যার প্রতিবাদে কুদুকছড়িতে বিক্ষোভ
রাঙামাটি প্রতিনিধি, সিএইচটি নিউজ
বুধবার, ৫ এপ্রিল ২০২৩

খাগড়াছড়ির মানিকছড়িতে সেটলার কর্তৃক ইউপিডিএফ সদস্য হ্লাচিং মং মারমা ও দীঘিনালায় সেনা সৃষ্ট মদদপুষ্ট ঠ্যাঙারে বাহিনী কর্তৃক ত্রিদিপ চাকমাকে হত্যার প্রতিবাদে এবং দোষী ব্যক্তিদের গ্রেফতার ও শাস্তির দাবিতে রাঙামাটির কুদুকছড়িতে বিক্ষোভ মিছিল ও সমাবেশ করেছে পাহাড়ি ছাত্র পরিষদ, হিল উইমেন্স ফেডারেশন ও গণতান্ত্রিক যুব ফোরাম রাঙামাটি জেলা শাখা।
আজ বুধবার (৫ এপ্রিল ২০২৩) বেলা ২টার সময় মিছিল পরবর্তী সমাবেশে পাহাড়ি ছাত্র পরিষদের রাঙামাটি জেলা শাখার সভাপতি রিপন চাকমার সভাপতিত্বে ও আনন্দ চাকমার সঞ্চালনায় অন্যান্যর মধ্যে বক্তব্য রাখেন পাহাড়ি ছাত্র পরিষদ রাঙামাটি জেলা শাখার দপ্তর সম্পাদক ঝিমিত চাকমা, হিল উইমেন্স ফেডারেশনের রাঙামাটি জেলা সাংগঠনিক সম্পাদক নিশি চাকমা, গণতান্ত্রিক যুব ফোরাম রাঙামাটি জেলা সাংগঠনিক সম্পাদক প্রিয়তন চাকমা ও ইউপিডিএফ সংগঠক বিবেক চাকমা।
ঝিমিত চাকমা বলেন, পার্বত্য চট্টগ্রামে সেনা ছত্রছায়ায় নব্য মুখোশ নামধারী সন্ত্রাসীদের দিয়ে ইউপিডিএফের সদস্যদের প্রতিনিয়ত হত্যা করা হচ্ছে। এর বিরুদ্ধে সবাইকে রুখে দাঁড়াতে হবে।
নিশি চাকমা বলেন, বাংলাদেশ স্বাধীন হওয়ার পর থেকে জুম্ম জনগণ নিষ্ঠুর দমন-পীড়নের শিকার হয়ে আসছে। আজকে আমরা স্বাধীন দেশের নাগরিক হয়েও পরাধীন। পার্বত্য চট্টগ্রামে যুগ যুগ ধরে সেনাশাসন জারি রেখে আমাদেরকে জাতিগতভাবে নিশ্চিহ্ন করার পাঁয়তারা চালানো হচ্ছে।
যুবনেতা প্রিয়তন চাকমা বলেন, পার্বত্য চট্টগ্রাম বাংলাদেশের কোন বিচ্ছিন্ন অঞ্চল নয়। সরকার যুগ যুগ ধরে জুম্ম জাতির অস্তিত্ব চিরতরে বিলীন করে দেয়ার জন্য গভীর ষড়যন্ত্র চালিয়ে যাচ্ছে। ইউপিডিএফ থেকে বিভিন্ন কেলেঙ্কারিতে বহিষ্কৃত কর্মীদের দিয়ে সশস্ত্র মুখোশবাহিনী সৃষ্টি করে একের পর এক ইউপিডিএফ নেতা-কর্মীদির হত্যা করা হচ্ছে। সরকার ‘ভাগ কর শাসন কর’ নীতি অনুসরণ করে জুম্ম দিয়ে জুম্ম ধ্বংসের নীলনক্সায় মেতে উঠেছে।

বিবেক চাকমা বলেন, আমরা অধিকার হারা দুঃখী জনগণকে সেনা কবল থেকে মুক্ত করার জন্য ইউপিডিএফের পতাকাতলে সমবেত হয়েছি। আজ আপামর ছাত্র-যুব সমাজের সিদ্ধান্ত নিতে হবে সন্তু লারমার নেতৃত্বাধীন ভ্রাতৃঘাতি সংঘাতে জাতিকে ধ্বংস হতে দেবেন নাকি জুম্ম জাতিকে রক্ষা করতে এগিয়ে আসবেন। মনে রাখতে হবে দেশ জাত রক্ষা করা কেবল রাজনৈতিক দলের নয়, এই দায়িত্ব শিক্ষিত ছাত্র যুব সমাজেরও।
তিনি ক্ষোভ প্রকাশ করে অবিলম্বে ইউপিডিএফ সদস্য হ্লাচিং মং মারমা ও ত্রিদিপ চাকমার হত্যাকারীদের গ্রেফতার পূর্বক দৃষ্টান্তমূলক শাস্তির দাবি জানান। অন্যথায় আরও কঠোর আন্দোলনের কর্মসূচী দেয়ার হুঁশিয়ারি দেন।
সভাপতির বক্তব্যে রিপন চাকমা বলেন, দেশের ক্ষমতাসীন ফ্যাসিবাদী সরকারের নিপীড়নের মাত্রা দিন দিন তীব্র ও অসহনীয় হয়ে উঠছে। সম্প্রতি বান্দরবানের ম্রো ও ত্রিপুরা জাতিসত্তাদের জমি জবরদস্তিমুলকভাবে বেদখল চেষ্টা, দীঘিনালায় ইউপিডিএফ সদস্যকে সেনা ক্যাম্পের পাশে গুলি করে হত্যা, মানিকছড়ির যোগ্যছোলা ইউনিয়নে সেটলার কর্তৃক ইউপিডিএফ সদস্য হ্লাচিং মং মারমাকে নির্মমভাবে হত্যার ঘটনা ঘটেছে। অপরদিকে, সন্তু লারমার সশস্ত্র গ্রুপকে উস্কে দিয়ে নতুন করে ভ্রাতৃঘাতি সংঘাত বাঁধানোর ষড়যন্ত্র চলছে।
তিনি শাসকগোষ্ঠির সকল ষড়যন্ত্র ও নিপীড়নের বিরুদ্ধে ঐক্যবদ্ধ হয়ে প্রতিরোধ গড়ে তোলার জন্য ছাত্র-যুব সমাজসহ সর্বস্তরের জনগণের প্রতি আহ্বান জানান।
তিনি অবিলম্বে মানিকছড়ি ও দীঘিনালা হত্যাকাণ্ডে জড়িতদের আইনের আ্ওতায় এনে যথাযথ বিচার ও শাস্তির দাবি করেন।
সিএইচটি নিউজে প্রকাশিত প্রচারিত কোন সংবাদ, তথ্য, ছবি ,ভিডিও, কনটেন্ট ব্যবহার করতে হলে কপিরাইট আইন অনুসরণ করে ব্যবহার করুন।
সিএইচটি নিউজের ইউটিউব চ্যানেলটি সাবস্ক্রাইব করুন