গুইমারায় যৌথ বাহিনীর উপস্থিতি বৃদ্ধি, রাতে অভিযান পরিচালনার আশঙ্কা জনমনে

চার সশস্ত্র সন্ত্রাসীকে সেনাবাহিনীর গাড়িতে করে নিয়ে যাওয়ার বিরুদ্ধে গুইমারার কালপানি এলাকায় সেনাদের সাথে মুখোমুখি অবস্থানে বিক্ষুব্ধ জনতা।
গুইমারা প্রতিনিধি, সিএইচটি নিউজ
রবিবার, ৭ সেপ্টেম্বর ২০২৫
তবলা পাড়ায় জনতার হাতে আটক হওয়া চার অস্ত্রধারী সন্ত্রাসীকে রক্ষায় সেনাবাহিনীর প্রচেষ্টার বিরুদ্ধে এলাকার বিক্ষুব্ধ জনতার প্রতিবাদ-প্রতিরোধের ঘটনাকে কেন্দ্র করে গুইমারায় সেনাবাহিনী, বিজিবিসহ যৌথবাহিনীর উপস্থিতি বৃদ্ধি করা হয়েছে বলে খবর পাওয়া গেছে। ফলে রাতে যৌথবাহিনী অভিযান চালাতে পারে বলে জনমনে আশঙ্কা দেখা দিয়েছে।
জানা যায়, আজ রবিবার (৭ সেপ্টেম্বর ২০২৫) সকালে সেনাবাহিনীর লেলিয়ে দেয়া চারজন সশস্ত্র বাঙালি ব্যক্তি দু’টি মোটর সাইকেলে করে গুইমারা ও মানিকছড়ি উপজেলা সীমান্তবর্তী তবলা পাড়ায় যায়। খোঁজ নিয়ে জানা গেছে, দু’জন পাহাড়ি মোটর সাইকেল চালককে তারা জোর করে সিন্দুকছড়ি বাজার থেকে নিয়ে এসেছিল। তাদের টার্গেট ছিল ইউপিডিএফ নেতা-কর্মীদের ওপর আক্রমণ করা।
পরে সন্ত্রাসীদের উপস্থিতি জানাজানি হলে এলাকার জনগণ সংঘবদ্ধ হয়ে তাদের প্রতিরোধ করে। প্রতিরোধের এক পর্যায়ে সন্ত্রাসীরা দু’ রাউন্ড ফাঁকা গুলি ছোঁড়ে বিক্ষুব্ধ জনতাকে ভয়-ভীতি দেখানোর চেষ্টা করে। তবে জনতা দমে না গিয়ে তাদেরকে প্রতিরোধ করে তাদেরকে একটি অটোমেটিক অস্ত্রসহ হাতেনতে ধরে ফেলতে সক্ষম হয়।
এর কিছু সময় পরেই বিপুল সংখ্যক সেনা সদস্য ঘটনাস্থলে গিয়ে উপস্থিত হয় এবং চার সশস্ত্র ব্যক্তিকে তাদের হেফাজতে নেয়ার চেষ্টা করলে জনতা তাতে প্রতিবাদ জানায়। এমতাবস্থায় দীর্ঘ সময় সেখানে পাল্টাপাল্টি অবস্থানের পর বিকালে তারা সশস্ত্র লোকদেরকে তাদের হেফাজতে নিতে সক্ষম হয়।
এরপর বিকালে চার সশস্ত্র লোককে গাড়িতে করে নিয়ে যাওয়ার সময় গুইমারা উপজেলার হাফছড়ি ইউনিয়নের কালাপানি এলাকায় আবারো বিক্ষুব্ধ জনতা সেনাদের গাড়ি পথরোধ করে প্রতিবাদ জানাতে থাকে। এক পর্যায়ে সেনাবাহিনী বিক্ষুব্ধ জনতার ওপর প্রথমে লাঠিচার্জ করে ও পরে ফাঁকা গুলি ছোঁড়ে ছত্রভঙ্গ করে দেয়। এরপর সেনারা অস্ত্রধারীদের নিয়ে চলে যায়।

সেনাদের বেপরোয়া লাঠিচার্জে জখম হওয়া এক নারী।
সেনাদের বেপরোয়া লাঠিচার্জে নারীসহ অন্তত ২০-২৫ জন আহত হয়েছেন বলে জানা গেছে। তবে তাদের নাম পাওয়া যায়নি।
উক্ত চার সশস্ত্র দুর্বৃত্ত সম্পর্কে বিস্তারিত তথ্য জানা সম্ভব হয়নি। তবে তাদেরকে যে সেনাবাহিনী পাঠিয়েছে তাতে কোন সন্দেহ নেই। তাছাড়া বিক্ষুব্ধ জনতার রোষানলে পড়ে তারা নিজেদেরকে সেনাবাহিনীর লোক হিসেবে পরিচয় দিতে শোনা গেছে।
উক্ত ঘটনাকে কেন্দ্র করে সেনাবাহিনীর ভূমিকা নিয়ে এলাকার জনমনে ও সচেতন মহলে নানা প্রশ্ন দেখা দিয়েছে। তারা পরিকল্পিতভাবে সাম্প্রদায়িক উস্কানি সৃষ্টি করতে চাচ্ছে কিনা- তা নিয়ে সকলে উদ্বেগ প্রকাশ করেছেন। সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমেও এ ঘটনা নিয়ে ব্যাপক প্রতিক্রিয়া সৃষ্টি হয়েছে।
সিএইচটি নিউজে প্রকাশিত প্রচারিত কোন সংবাদ, তথ্য, ছবি ,ভিডিও, কনটেন্ট ব্যবহার করতে হলে কপিরাইট আইন অনুসরণ করে ব্যবহার করুন।