গুইমারায় ছাত্র-যুব সমাজের প্রীতি সম্মেলন

গুইমারা প্রতিনিধি ।। ‘ছাত্র-যুব শক্তিই সমাজের শক্তি’ এই শ্লোগানে ’জাতীয় সংকটে ছাত্র-যুব সমাজের করণীয় নির্ধারণের লক্ষে’ গুইমারা উপজেলায় ছাত্র-যুব সমাজের উদ্যোগে এক প্রীতি সম্মেলন অনুষ্ঠিত হয়েছে।
আজ বুধবার (১১ আগস্ট ২০২১) অনুষ্ঠিত প্রীতি সম্মেলনে নকুল ত্রিপুরার সভাপতিত্বে ও তপন ত্রিপুরার সঞ্চালনায় বক্তব্য রাখেন ছাত্র-যুব সমাজের প্রতিনিধি বতেন ত্রিপুরা, খুমিতা ত্রিপুরা, সুমিতা চাকমা ও কুবিন্দ্র ত্রিপুরা। আর এতে সংহতি জানিয়ে বক্তব্য রাখেন ইউপিডিএফ’র গুইমারা ইউনিটের সংগঠক তৈপাং ত্রিপুরা, পাহাড়ি ছাত্র পরিষদের সাবেক নেতা আপ্রুসি মার্মা ও পাহাড়ি ছাত্র পরিষদের কেন্দ্রীয় সাংগঠনিক সম্পাদক অমল ত্রিপুরা।
সম্মেলনে এলাকার যুবক-যুবতি ও শিক্ষার্থীরা অংশগ্রহণ করেন।

সম্মেলনে বক্তারা বলেন, আজকের দিনের ছাত্র-যুবকরাই আগামী দিনের দেশ ও জাতির কর্ণধার। এই ছাত্র-যুব সমাজই শত বাধা-বিপত্তি অতিক্রম করে একটি জাতি ও দেশকে গড়ে তুলতে পারে। একটি জাতির আশা-আকাঙ্ক্ষার প্রতীক হলো এই ছাত্র-যুব সমাজ। তারা কখনও পরাজয়কে মেনে নেয় না বরং পুরাতনকে নতুন করে গড়তে চায়।
তারা বলেন, যে কোন দেশের সামাজিক, রাজনৈতিক, অর্থনৈতিক ও সাংস্কৃতিক উন্নয়নে ছাত্র-যুব সমাজই গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করে। তবে দুঃখজনক হলেও সত্য যে, আমাদের ছাত্র-যুব সমাজ এখন বিপথে পরিচালিত হচ্ছে। অপসংস্কৃতির প্রভাবে, বেকারত্ব ও মাদকাসক্তির প্রভাবে আমাদের বর্তমান ছাত্র-যুব সমাজের অবক্ষয়ের মূল কারণ। তাছাড়াও বর্তমান প্রযুক্তির যুগে কম্পিউটার, ট্যাপ ও স্মার্টফোনের বদৌলতে সামাজিক যোগাযোগ সাইট ফেসবুক, টুইটার, ইনষ্টাগ্রাম থেকে নানা ধরনের অশ্লীলতা, দেশ-বিদেশের অপসংস্কৃতি চেপে বসেছে।

অনলাইন গেমের ক্ষতিকর দিক তুলে ধরে বক্তারা বলেন, সম্প্রতি করেনাকালীন স্কুল, কলেজ ও ইউনিভার্সিটি বন্ধের সময়ে পাবজি, ফ্রি ফায়ার নামে অনলাইন গেম আরো বেশি অবক্ষয়ের দিকে ধাবিত করছে। এসব কারণে বর্তমানে আমাদের ছাত্র-যুব সমাজ আন্দোলন-প্রতিরোধ বিমুখ হয়ে পড়েছে। পার্বত্য চট্টগ্রামসহ সারা দেশে এত নিপীড়ন নির্যাতনের পরও আমাদের ছাত্র-যুব সমাজ আজ নীরব।

বক্তারা আরো বলেন, আমাদের এই পার্বত্য চট্টগ্রামে প্রতিনিয়ত ভূমি বেদখল করা হচ্ছে, উন্নয়নের নামে, পর্যটনের শিল্পের নামে হাজার হাজার একর ভূমি বেদখল করে আমাদের উচ্ছেদ করছে, প্রতিনিয়ত মা-বোনদের ধর্ষণ-নির্যাতন করছে, আমাদের ধর্মীয় প্রতিষ্ঠান ভেঙ্গে দিচ্ছে, ধর্মীয় গুরুদের লাঞ্ছিত করছে, তবুও আমরা ছাত্র-যুবকরা আন্দোলন বিমুখ হয়ে পড়ে রয়েছি। বর্তমানে জাতির এই ক্রান্তিলগ্নে আমাদের দায়িত্ব এই ছাত্র-যুব সমাজকে অবক্ষয়ের হাত থেকে উত্তরণ ঘটানো। কারণ ছাত্র-যুব সমাজের অবক্ষয়ের কারণে একটি জাতি ও দেশ হতাশায় নিমজ্জিত হয়, সৃষ্টি হয় জাতির বুকে গভীর ক্ষত।
বক্তারা আহ্বান জানিয়ে বলেন, আসুন আজকের এই প্রীতি সম্মেলনের মধ্যে দিয়ে শপথ করি সকল অপসংস্কৃতি পরিহার করে জাতির সংকটকালে ধর্ম, বর্ণ নির্বিশেষে বৃহত্তর ঐক্য গড়ে তুলে জাতিকে অস্তিত্ব ধ্বংসের হাত থেকে রক্ষা করি।
সিএইচটি নিউজে প্রকাশিত প্রচারিত কোন সংবাদ, তথ্য, ছবি ,ভিডিও, কনটেন্ট ব্যবহার করতে হলে কপিরাইট আইন অনুসরণ করে ব্যবহার করুন।