গোবিন্দগঞ্জে সাঁওতালদের ওপর ভূমিদস্যু রফিকুল গংদের হামলা, আহত ৪

0

ভূমিদস্যু রফিকুল গংদের হামলায় আহতরা ও থানায় দাখিল করা এজাহার। 


অনলাইন ডেস্ক, সিএইচটি নিউজ

সোমবার, ১৮ আগস্ট ২০২৫

গাইবান্ধার গোবিন্দগঞ্জের বিরাট (বরট্ট) এলাকায় ভূমিদস্যু রফিকুল গং কর্তৃক স্থানীয় সাঁওতালদের ওপর হামলার ঘটনা ঘটেছে। গত ১৫ আগস্ট ২০২৫ সংঘটিত এ হামলায় নারীসহ অন্তত ৪ জন সাঁওতাল আহত হয়েছেন।

আহতরা হলেন- শ্যামবালা হেমব্রম, সৈলাশ, বিশ্বনাথ ও জয়ন্ত। তারা বর্তমানে হাসপাতালে চিকিৎসাধীন রয়েছেন। 

এ হামলার ঘটনায় গতকাল (১৭ আগস্ট ২০২৫) রাতে গোবিন্দগঞ্জ থানায় অনলাইনে এজাহার দাখিল করেছেন হামলায় শিকার শ্যামবালা হেমব্রম। এজাহারে তিনি ১৫ জনের নাম উল্লেখসহ আরো ৮/৯ জনকে অজ্ঞাত আসামি করেছেন।

এজাহারে উল্লেখিত আসামিরা হলেন- ১। মো. রফিকুল ইসলাম (৪৮), ২। মো. শফিকুল ইসলাম (৪৪), ৩। মো. মেজবাউল ইসলাম (৪০), সকলের পিতা- মো. হাকিম মন্ডল, ৪। মো. হাকিম মন্ডল (৬৫), পিতা- মৃত আজিম উদ্দিন, ৫। মো. গোলাপ (৫০), পিতা- মৃত আব্দুল গণি, সর্ব সাং- ধনিয়াল চাপড়াপাড়া, ৬। মো. রহিম বাদশা (৪৫), পিতা- মৃত আঃ খালেক, ৭। মো. সুমন (১৮), পিতা- আরশ আলী, উভয়ের সাং- বিরাট বরট্ট (নয়াপাড়া), ৮। মো. আঃ মান্নান (৩৮), পিতা- অজ্ঞাত, সাং- ধনিয়াল, ৯। মো. উজ্জল মিয়া (৪০), পিতা- মৃত হাসেন আলী, সাং- বিরাট বরট্ট, ১০। মো. ফুয়াদ সরকার (৩৬), ১১। মো. ফাহাদ সরকার (৩২), উভয়ের পিতা- মৃত আব্দুল বারী সরকার, উভয়ের সাং- চকগোবিন্দ (চাষকপাড়া), ১২। মো. আতাউর রহমান (৪৫), পিতা- করিম উদ্দিন, সাং- বিরাট বরট্ট নয়াপাড়া, ১৩। মো. আতাউর মন্ডল (৫০), ১৪। মো. হবিবর মণ্ডল (৬৫), উভয় পিতা- মৃত কেরু মন্ডল, সাং- বিরাট বরট্ট, ১৫। মো. আঃ রশিদ (৪৫), পিতা- মৃত গনি সরকার, সাং- গোমড়াদীঘি বরট্ট, সকলের থানা- গোবিন্দগঞ্জ, জেলা- গাইবান্ধাসহ অজ্ঞাতনামা ৮/৯ জন।

ঘটনার বিবরণ দিয়ে এজাহারে তিনি বলেন, “গত ১৫/০৮/২৫ তারিখ বেলা অনুমান ৩ ঘটিকায় আমি, বিশ্বনাথ, জয়ন্ত, জোয়াস ও মিনতী সরেন সহ তফসিল বর্ণিত জমিতে আমন ধানের চারা লাগাইতেছিলাম। উক্ত সময় উল্লেখিত আসামীগণ ১ নং আসমীী রফিকুলের নেতৃত্বে লাঠি ছোড়া নিয়ে তফসিল জমিতে অবৈধ জনতায় অনধিকার প্রবেশ করে আমাদেরকে ধানের চারা রোপনে বাধা দেয়। আমি প্রতিবাদ করায় আসামী মেজবাউল আমাকে হত্যার উদ্দেশ্যে লাঠি দিয়ে মাথায় ডাং মারলে আমি বাম হাত দিয়ে ঠেকাইলে কব্জির উপরে লেগে গুরুত্বর কালশিরা জখম করে। আসামী শফিকুল, গোলাপ, রহিম বাদশা ও সুমন আমাকে এলোপাথারী কিল ঘুষি মারে। আসামী রহিম বাদশা অসৎ উদ্দেশ্যে আমার শাড়ী ব্লাউজ ছিঁড়ে ফেলে লজ্জা শ্লীলতাহানী ঘটায়। আমাকে রক্ষার জন্য সৈলাশ, বিশ্বনাথ ও জয়ন্ত আগাইয়া আসিলে আসামী রফিকুল তার হাতে থাকা ছোড়া দ্বারা বিশ্বনাথকে হত্যার উদ্দেশ্যে মাথায় চোট দিয়ে মাথার উপরে পিছনে গুরুতর হাড় কাটা জখম করে। উক্ত কাটা স্থানে ৬টি সেলাই দিতে হয়। অন্যান্য সকল আসামীগণ জয়ন্ত ও সৈলাশকে এলোপাথারী মারপিট করে।

“এ সময় আমাদের ডাক-চিৎকারে জোয়াস মূর, ফিলোমিনা হাঁসদা, জুলিয়াস সরেন সহ স্থানীয় অনেকে এগিয়ে আসলে আসামীগণ খুন জখমের হুমকি দিয়ে চলে যায়। আমরা পরিচিত ভ্যান যোগে গোবিন্দগঞ্জ স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে ভর্তি হই। আমি (শ্যামবালা) ও জয়ন্ত গোবিন্দগঞ্জ স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে চিকিৎসাধীন আছি। কর্তব্যরত চিকিৎসক বিশ্বনাথকে গুরুতর মর্মে রংপুর মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে রেফার্ড করায় তিনি সেখানে চিসিৎসাধীন আছেন।”

বিরোধীয় জমির বিষয়ে তিনি এজাহারে বলেন, “তফসিল বর্ণিত জমির এস.এস রেকর্ডীয় মালিক আমার পিতা হোপনা হেমব্রম ও জ্যাঠো নোদ হেমব্রম। আসামী রফিকুল জাল কাগজ দ্বারা পূর্বে তফসিল বর্ণিত জমি জবর দখল করছিল। তফসিল জমি নিয়ে আমি এডিসি (রাজস্ব) গাইবান্ধা কোর্টে আসামী রফিকুল ইসলাম (১ নং আসামী) এর বিরুদ্ধে এলটি কেস নং- ৬৮/০৭ দায়ের করিলে আসামী রফিকুল ইসলাম উক্ত কোর্ট সেল পারমিশন দলিল নং- ১৭৯০, তাং- ২৮/০৯/১০ মূলে দাবী করিলে গত ০৭/১২/২৩ ইং তারিখে উক্ত দলিল জাল ও ভূয়া যোগসাজশী মর্মে আদেশ হয়। উক্ত জাল প্রমাণের পর হতে আমি উক্ত জমি চাষাবাদে ভোগদখল করছি।”

তিনি জমির তফসিল উল্লেখ করেছেন, জেলা- গাইবান্ধা, থানা- গোবিন্দগঞ্জ, মৌজা- বরট্ট, জে.এল নং- ৫৮, এস.এ খতিয়ান নং- ১২৮, দাগ নং- ১১৩০, জমি ৫৮ শতক এর পূর্ব পার্শ্বে।

* ছবি ও তথ্য  Bitis Soren এর ফেসবুক পোস্ট থেকে সংগৃহিত। 



This website uses cookies to improve your experience. We'll assume you're ok with this, but you can opt-out if you wish. AcceptRead More