ঘাগড়ার মোনপাড়া থেকে আটক ৩ জনের মধ্য থেকে ২ জনকে ছেড়ে দিয়েছে সেনাবাহিনী

0

মোনপাড়া থেকে সেনাবাহিনী কর্তৃক আটক ৩ জন।

কাউখালী প্রতিনিধি, সিএইচটি নিউজ
শনিবার, ২৮ জুন ২০২৫

রাঙামাটির কাউখালী উপজেলার ঘাগড়া ইউনিয়নের কোজইছড়ি মোনপাড়া থেকে গত ২৪ জুন ২০২৫ সেনাবাহিনী অভিযানের নামে বাবা-ছেলেসহ ৩ জনকে আটক করে।  এই তিন জনের মধ্য থেকে আজ শনিবার (২৮ জুন) ভোররাতে বাবা-ছেলেকে সেনাবাহিনী ছেড়ে দিয়েছে।

জানা গেছে, আজ ভোররাত ৪টা থেকে সাড়ে ৪টার সময় একটি সিএনজিতে (অটোরিক্সা) করে রাঙামাটির মানিকছড়ি এলাকায় নিয়ে এসে মনসুখ চাকমা (৫০) ও তার ছেলে সিন্ধু মনি চাকমাকে (২৩) ছেড়ে দিয়ে যায়। তবে আটক আরেকজন অন্তর চাকমাকে (১৯) কোথায় রাখা হয়েছে তা এখনো জানা যায়নি।

ভুক্তভোগীরা জানান, আটকের পর থেকে তাদেরকে অমানুষিক শারীরিক নির্যাতন ও দিনরাত চোখ বেঁধে রাখা হয়। আজ (শনিবার) ভোররাত আনুমানিক ৪টা থেকে সাড়ে ৪টার সময় সাদা পোশাকধারী দু’জন লোক তাদেরকে চোখ বাঁধা অবস্থায় সিএনজিতে করে একটি কাঁচা রাস্তায় এনে ছেড়ে দিয়ে যায়। এ সময় তাদের চোখের বাঁধন খুলে দিয়ে ওই লোকগুলো চলে যায়। এরপর তারা ৫/৬ মিনিট পায়ে হেঁটে এসে পাকা সড়কে এসে পড়েন। এ সময় চাকমা ড্রাইভারের চালিত একটি মাহেন্দ্র গাড়ি পেয়ে তারা তাদের বিপদের কথা তাকে জানান। তাদের কথা শুনে ওই ড্রাইভার তাদেরকে ফুরোমোন যাবার রাস্তার মুখে পৌঁছে দেন। সেখানে পৌঁছতে তাদের ৮/১০ মিনিট সময় লেগেছে বলে তারা জানান।

ভুক্তভোগীদের বর্ণনা অনুসারে তাদেরকে ছেড়ে দেয়ার জায়গাটি রাঙামাটির মানিকছড়ি এলাকার কোন একটি স্থানে হবে বলে ধারণা করা হচ্ছে।

অতিরিক্ত শারীরিক নির্যাতন করায় স্বাভাবিক হাঁটাচলা করতে কষ্ট হচ্ছে বলে ভুক্তভোগীরা জানিয়েছেন।

আটক তিন জনকে সেনা সদস্যদের নির্যাতনের চিত্র।

উল্লেখ্য, গত ২৪ জুন ২০২৫ ভোররাত সাড়ে ৩টা থেকে ৪টার সময়ে সেনাবাহিনী ও জেএসএস সন্তু গ্রুপ যৌথভাবে ঘাগড়ার কোজইছড়ি মোনে এক সামরিক অভিযান ও হামলা পরিচালনা করে। এতে সেনাদের ছোঁড়া গুলিতে ডানে উল্লো গ্রামের ৪৫ বছর বয়সী এক গ্রামবাসী ডান পায়ে গুলিবিদ্ধ হয়ে আহত হন এবং সেনারা মোনপাড়া থেকে মনসুখ চাকমা (৫০), তার ছেলে সিন্ধু মনি চাকমা (২৩) ও আরেক যুবক অন্তর চাকমাকে(১৯) আটক করে অমানুষিক শারীরিক নির্যাতন চালায়। পরে ‘অস্ত্র-গুলি উদ্ধার’ নাটক সাজিয়ে তাদেরকে ছবি তোলে সংবাদ মাধ্যমে সরবরাহ করা হয় এবং সেনাবাহিনীর সরবরাহকৃত মিথ্যা তথ্যের ভিত্তিতে মিডিয়াগুলো আটককৃতদের ‘ইউপিডিএফ সদস্য’ হিসেবে খবর প্রচার করে। পরে সেনারা তাদেরকে অজ্ঞাত স্থানে নিয়ে আটকে রাখে। পরিবারের লোকজন যোগাযোগ করার চেষ্টা করেও সেনাদের সাথে যোগাযোগ করতে পারেননি।

এ ঘটনা নিয়ে সিএইচটি নিউজ পর পর দু’টি খবর প্রকাশিত হয়। এসব খবরে ঘটনার বিস্তারিত তুলে ধরা হয়।

এছাড়া ছাত্র-জনতার সংগ্রাম পরিষদ কাউখালীতে বিক্ষোভ প্রদর্শন করে এবং ইউপিডিএফ আটককৃত গ্রামবাসীদের নিঃশর্ত মুক্তির দাবি জানিয়ে বিবৃতি দেয়। 



This website uses cookies to improve your experience. We'll assume you're ok with this, but you can opt-out if you wish. AcceptRead More