চট্টগ্রামে পিসিপি’র কালো ব্যাজ ধারণ কর্মসূচি পালন, মাইলস্টোন কলেজ শিক্ষার্থীদের ৬ দফা দাবির প্রতি সমর্থন

0


চট্টগ্রাম প্রতিনিধি, সিএইচটি নিউজ
মঙ্গলবার, ২২ জুলাই ২০২৫

“রাষ্ট্রীয় কাঠামোগত হত্যাকাণ্ডের বিরুদ্ধে আওয়াজ তুলুন” এই শ্লোগানে ঢাকায় মাইলস্টোন স্কুল এন্ড কলেজে বিমান দুর্ঘটনায় নিহত শিশুসহ সকলের প্রতি শ্রদ্ধা ও শোক সন্তপ্ত পরিবারের প্রতি সমবেদনা জানিয়ে চট্টগ্রামে কালো ব্যাজ ধারণ কর্মসূচি পালন করেছে বৃহত্তর পার্বত্য চট্টগ্রাম পাহাড়ি ছাত্র পরিষদ (পিসিপি), চট্টগ্রাম মহানগর শাখা।

আজ মঙ্গলবার (২২ জুলাই ২০২৫) বিকালে চট্টগ্রাম নগরের ষোলশহর রেল স্টেশনে এ কর্মসূচি অনুষ্ঠিত হয়। এতে সভাপতিত্ব করেন পাহাড়ি ছাত্র পরিষদের চট্টগ্রাম নগর শাখার সভাপতি সোহেল চাকমা এবং সংহতি জানিয়ে বক্তব্য রাখেন হিল উইমেন্স ফেডারেশনের কেন্দ্রীয় সভাপতি নীতি চাকমা। এছাড়াও উপস্থিত ছিলেন হিল উইমেন্স ফেডারেশনের কেন্দ্রীয় সাধারণ সম্পাদক রিতা চাকমা।

কর্মসূচির শুরুতেই বিমান দুর্ঘটনায় নিহত শিশু, শিক্ষকসহ সকলের প্রতি শ্রদ্ধা জানিয়ে কালো ব্যাজ পরিধান করা হয়।

নীতি চাকমা বলেন, দেশে ফ্যাসিস্ট হাসিনার পতনের পর অন্তর্বর্তী সরকার গঠন হলেও থামেনি সাম্প্রদায়িক হামলা, ধর্ষণ, খুন, গুম, হত্যা। ফ্যাসিস্ট রেজিমে দেশের জনগণের জীবন যেভাবে অনিরাপদ ছিল, যেভাবে দমন-পীড়ন করা হয়েছে একইভাবে ইউনুস সরকারের আমলেও তা অব্যাহত রয়েছে। ইন্টেরিমের শাসন ১ বছর হতে না হতেই পার্বত্য চট্টগ্রামে ১৯ ও ২০ সেপ্টেম্বর বড় ধরনের সাম্প্রদায়িক হামলাসহ সেনাশাসনের নগ্ন রুপ আমরা প্রত্যক্ষ করেছি। সেনাবাহিনীকে ম্যাজিস্ট্রেসি ক্ষমতা দেওয়ার পরেও আইন-শৃঙ্খলার পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে আসেনি, উল্টো ভয়াবহ রূপ নিয়েছে। পুরো দেশে সেনা উৎপাত বেড়েছে। সুতরাং গতকাল মাইলস্টোন স্কুল এন্ড কলেজে বিমান দুর্ঘটনায় দায় রাষ্ট্র এড়াতে পারে না।


সভাপতির বক্তব্যে সোহেল চাকমা বলেন, মাইলস্টোন স্কুল এন্ড কলেজে গতকাল ২১ জুলাই বিমান দুর্ঘটনায় নিহতদের সঠিক সংখ্যা এখনো রাষ্ট্রের পক্ষ থেকে প্রকাশ করা হয়নি। আইএসপিআর এর মাধ্যমে নিহতের যে সংখ্যা গণমাধ্যমে প্রকাশ পেয়েছে তা অত্যন্ত সন্দেহজনক। মাইলস্টোন কলেজের প্রত্যক্ষদর্শী শিক্ষার্থীরা মনে করছেন নিহতে সংখ্যা শতাধিক। অথচ রাষ্ট্রের পক্ষ থেকে তা দেখানো হয়েছে ৩১ জন। তিনি প্রশ্ন করে বলেন, ফ্যাসিস্ট হাসিনার মতো ইউনুস সরকারও কি নিহতদের লাশ গুম করার প্রচেষ্টা চালাচ্ছে?

তিনি অভিযোগ করে আরো বলেন, গণঅভ্যুত্থানের পর দেশের প্রত্যেকটি নাগরিকের আশা ছিল নিরাপদ জীবনযাপন, কর্মসংস্থান ও শান্তিপূর্ণ বসবাস। কোনটাই দেশের মানুষ পায়নি। বিশেষ করে বান্দরবানে বম জনগোষ্ঠীর ওপর রাষ্ট্রীয় ম্যান্ডেট নিয়ে সেনাবাহিনী নিষ্ঠুর দমন-পীড়ন চালিয়েছে। এখনো যা ক্রমবর্ধমান। দীর্ঘ দেড় বছরেরও অধিক বম জাতিসত্তাদের চট্টগ্রাম কারাগারে আটক রাখা হয়েছে। রাষ্ট্রীয় হেফাজতে থাকা সত্ত্বেও এ পর্যন্ত তিন জন বম জনগোষ্ঠীর মানুষের মৃত্যু ঘটেছে। যা একপ্রকার রাষ্ট্রীয় কাঠামোগত হত্যা। এর দায় স্পষ্টই ইউনুস সরকারের।

তিনি মাইলস্টোন স্কুল এন্ড কলেজে নিহত শিশু, শিক্ষক, অভিভাবক সকলের প্রতি শ্রদ্ধা ও শোক সন্তপ্ত পরিবারের প্রতি সমবেদনা জানান। একই সাথে ঘটনার সুষ্ঠু তদন্ত, নিহত ও আহতদের সঠিক নাম, তালিকা প্রকাশ, শিক্ষক ও শিক্ষার্থীদের ওপর হামলা ও লাঞ্ছিত করা সেনা সদস্যদের জনসম্মুখে ক্ষমা চাওয়া এবং ক্ষতিগ্রস্ত পরিবারের দায়-দায়িত্ব রাষ্ট্রকে বহন করার দাবি জানান। শিক্ষার্থীদের ৬ দফা দাবির প্রতি পূর্ণ সমর্থন জানান এবং দাবি উপেক্ষা করে শিক্ষার্থীদের ওপর সেনা-পুলিশের টিয়ারগ্যাস নিক্ষেপ, লাঠিচার্জ ও হামলার তীব্র নিন্দা জানান।



This website uses cookies to improve your experience. We'll assume you're ok with this, but you can opt-out if you wish. AcceptRead More