চার দফা দাবিতে চবি প্রশাসনের নিকট পিসিপির স্মারকলিপি
চবি প্রতিনিধি, সিএইচটি নিউজ
রবিবার, ২০ অক্টোবর ২০২৪

চার দফা দাবিতে চবি প্রশাসনের নিকট স্মারকলিপি দিয়েছে পিসিপি
চার দফা দাবিতে চট্টগ্রাম বিশ্ববিদ্যালয় (চবি) প্রশাসনের নিকট স্মারকলিপি দিয়েছে বৃহত্তর পার্বত্য চট্টগ্রাম পাহাড়ি ছাত্র পরিষদ (পিসিপি), চবি শাখা।
আজ রবিবার (২০ অক্টোবর ২০২৪) সকাল ১১টার সময় বিশ্ববিদ্যালয়ের উপাচার্য, উপ-উপাচার্য(একাডেমিক) ড. মোহাম্মদ শামীম উদ্দিন খান এবং বিশ্ববিদ্যালয় প্রক্টর ড. তানভীর মোহাম্মদ হায়দার আরিফ-এর বরাবর এই স্মারকিলিপি দেয়া হয়। উপাচার্যের হয়ে স্মারকলিপি গ্রহণ করেন উপাচার্য়ের একান্ত সচিব মো. রিয়াজ।
এ সময় উপ-উপাচার্য ড.মোহাম্মদ শামীম উদ্দিন খান ও বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রক্টর ড. তানভীর মোহাম্মদ হায়দার আরিফ এর সাথে সৌজন্য সাক্ষাৎ করে ৪ দফা দাবি পেশ করা হয়।
স্মারকলিপি প্রদানকালে পাহাড়ি ছাত্র পরিষদের পক্ষে উপস্থিত ছিলেন সংগঠনের চবি শাখার সভাপতি রোনাল চাকমা, সাধারণ সম্পাদক ভুবন চাকমা ও সাংগঠনিক সম্পাদক সুদর্শন চাকমা প্রমুখ।
স্মারকলিপিতে বলা হাসিনা পতনের পরবর্তীতে বিশ্ববিদ্যালয়ে নিয়োগ পাওয়া প্রক্টরের প্রতি অভিনন্দন জানিয়ে বলা হয়, জুলাই ছাত্র আন্দোলনে পাহাড়ি ছাত্র পরিষদের নেতৃত্বে বিশ্ববিদ্যালয়ের পাহাড়ি শিক্ষার্থীরা সক্রিয়ভাবে অংশগ্রহণ করেছে এবং ছাত্রলীগ কর্তৃক হেনস্তা, মারধর ও হুমকির শিকার হয়েছে। আন্দোলনের শুরু থেকেই শেষ পর্যন্ত ঢাকা, চট্টগ্রাম, খাগড়াছড়িসহ বিভিন্ন জায়গায় গণতান্ত্রিক ছাত্র জোটভুক্ত হয়ে ছাত্র-জনতার দ্রোহযাত্রা ও গণভবন দখল পর্যন্ত পাহাড়ি শিক্ষার্থীরা ভূমিকা রেখেছে।
এতে আরো বলা হয়, হাসিনা রেজিমে সবচেয়ে নিপীড়ন-নির্যাতনের শিকার ছিল জাতিগত ও ধর্মীয় সংখ্যালঘুরা। তাঁরা তাদের প্রাপ্য অধিকার থেকে বঞ্চিত ও বৈষম্যর শিকার হয়েছে। গাইবান্ধার সাওঁতাল পল্লী থেকে রাঙামাটির লংগদু ও কক্সবাজারের রামুতে নিজ ভূমি থেকে উচ্ছেদ, দখল, গুম, খুন ও নির্যাতনের শিকার হয়েছে। আমাদের সংগঠনের মাইকেল চাকমা দীর্ঘ ৫ বছরের অধিক হাসিনার কথিত ‘আয়নাঘরে’ বন্দি ছিলেন। গত ১৬ অক্টোবর আমাদের সংগঠনের এক ছাত্র নেতা হাসিনার আমলে গ্রেফতারের শিকার হয়ে দীর্ঘ প্রায় ৬ বছর পর কারাগারের বন্দীদশা থেকে মুক্তি পেয়েছেন।
স্মারকলিপিতে বলা হয়, চট্টগ্রাম বিশ্ববিদ্যালয় ক্যাম্পাসেও গণতান্ত্রিক পরিবেশ নিশ্চিতকরণ, ছাত্রলীগের সন্ত্রাসী দখলদারিত্ব মুক্ত ক্যাম্পাসের দাবি এবং ছাত্রদের বিভিন্ন দাবি দাওয়া নিয়ে যখন আমরা সোচ্চার হয়েছি তখন হামলা ও হেনস্তার শিকার হয়েছি। ছাত্র-জনতার গণঅভ্যুত্থানের মূল চেতনাই হল সমস্ত ফ্যাসিবাদী ব্যবস্থা বিলোপ করে গণতান্ত্রিক শাসন ব্যবস্থা কায়েম করা। ইতিমধ্যে শিক্ষাসহ বহু গুরুত্বপূর্ণ বিষয়ে সংস্কার কমিশন গঠন করা হয়েছে। আমরা আশা করি, আপনার নেতৃত্বে চট্টগ্রাম বিশ্ববিদ্যালয় গণতান্ত্রিক পরিবেশ নিশ্চিত, জ্ঞান সৃজন, প্রয়োগ এবং গবেষণায় বহুদূর এগিয়ে যাবে।
চট্টগ্রাম বিশ্ববিদ্যালয় দেশের একমাত্র বহু ভাষাভাষী জাতি ও সংস্কৃতিতে বৈচিত্র্যপূর্ণ এবং এসব দেশ বিশ্ববিদ্যালয়ের সম্পদ উল্লেখ করে এতে বলা হয়, চট্টগ্রাম ব্শ্বিবিদ্যালয়কে বহু জাতি ও বহু সংস্কৃতির মিলনকেন্দ্রে পরিণত করতে আমরা আশা রাখি, আপনি জাতিগত সংখ্যালঘুদের নিরাপত্তা, তাঁদের কোটা বৃদ্ধি ও জ্ঞান-গবেষণার ক্ষেত্রে নিম্নোক্ত ৪ দফা দাবিকে প্রাধান্য দিবেন।
স্মারকলিপিতে উত্থাপিত ৪ দফা দাবি হলো-
১. চট্টগ্রাম বিশ্ববিদ্যালয়ে অধ্যয়নরত জুম্ম শিক্ষার্থীদের হলে আবাসন ও নিরাপত্তা নিশ্চিত করা, অবিলম্বে অতীশ দীপংকর হল খুলে দিয়ে পুরনো নীতিমালা( বৌদ্দ ৬০% ও অন্যান্য ৪০%) অনুযায়ী আসন নিশ্চিত করা এবং বঙ্গমাতা শেখ ফজিলাতুন্নেচ্ছা মুজিব হলেও একই নীতিমালা বহাল রাখা।
২. চাকসু নির্বাচন আয়োজন এবং জাতিগত ও ধর্মীয় সংখ্যালঘুদের প্রতিনিধিত্ব নিশ্চিত করা;
৩. পাহাড়ি শিক্ষার্থীদের কোটা সংখ্যা ৫% বৃদ্ধি এবং সকল বিভাগ/ইনস্টিটিউটে অংশগ্রহণ নিশ্চিত করা;
৪. সকল জাতিসত্তাসমূহের নিজস্ব মাতৃভাষা ও গবেষণা ইনস্টিটিউট চালু করা; নৃবিজ্ঞান বিভাগ ও আধুনিক ভাষা ইনস্টিউটকে বিশেষায়িত বিভাগ করে সংখ্যালঘু জাতিসত্তাসমূহের ভাষা ও সংস্কৃতির গবেষণার কেন্দ্রে পরিণত করা এবং গবেষণায় বরাদ্ধ বৃদ্ধি করা!
সিএইচটি নিউজে প্রকাশিত প্রচারিত কোন সংবাদ, তথ্য, ছবি ,ভিডিও, কনটেন্ট ব্যবহার করতে হলে কপিরাইট আইন অনুসরণ করে ব্যবহার করুন।