থানচিতে খেয়াং নারীকে ধর্ষণের পর হত্যার প্রতিবাদে রাঙামাটির কুদুকছড়িতে বিক্ষোভ

রাঙামাটি প্রতিনিধি, সিএইচটি নিউজ
বুধবার, ৭ মে ২০২৫
বান্দরবানের থানচিতে গৃহবধু চিংমা খেয়াংকে গণধর্ষণের পর হত্যার প্রতিবাদে ও হত্যাকারীদের দৃষ্টান্তমূলক শাস্তির দাবিতে রাঙামাটির কুদুকছড়িতে বিক্ষোভ মিছিল ও সমাবেশ করেছে বৃহত্তর পার্বত্য চট্টগ্রাম পাহাড়ি ছাত্র পরিষদ (পিসিপি), গণতান্ত্রিক যুব ফোরাম ও হিল উইমেন্স ফেডারেশন, রাঙামাটি জেলা শাখা।
আজ বুধবার (৭ মে ২০২৫), বিকাল ৩ টার এ মিছিল ও সমাবেশ অনুষ্ঠিত হয়।
“পার্বত্য চট্টগ্রামসহ সারাদেশেষ নারী নিপীড়নের বিরুদ্ধে রুখে দাঁড়াও” শ্লোগানে মিছিল পরবর্তী অনুষ্ঠিত সমাবেশে পাহাড়ি ছাত্র পরিষদের জেলা সভাপতি তনুময় চাকমার সভাপতিত্বে ও অর্থ সম্পাদক ঝিমিত চাকমার সঞ্চালনায় বক্তব্য দেন, গণতান্ত্রিক যুব ফোরামের কেন্দ্রীয় সহ-সভাপতি ধর্মশিং চাকমা ও হিল উইমেন্স ফেডারেশনের জেলা দপ্তর সম্পাদক রিতা চাকমা।
ধর্মশিং চাকমা বলেন, পার্বত্য চট্টগ্রামে কোন জায়গায় নারী ও শিশুরা নিরাপদ নয়। সেনা-সেটলারদের কারণে এবং প্রশাসনের দুর্বলতায় এসব ঘটনা ঘটছে। ফ্যাসিস্ট হাসিনা একজন নারী হওয়া সত্ত্বেও তার সরকারের আমলে পাহাড়ি নারী ধর্ষণ-নিপীড়নের ঘটনার কোন বিচার করেননি। জুলাই অভ্যুত্থান পরবর্তী বর্তমান ড. ইউনুসের সরকারের সময়েও একই অবস্থা চলছে। আগেকার সময়ে জুমে কিংবা বনে-জঙ্গলে গেলে বাঘ-ভাল্লুকের ভয় ছিল, এখন সেটলাররা ভয়ের কারণ হয়ে দাঁড়িয়েছে।

রিতা চাকমা বলেন, চিংমা খিয়াং জুমে কাজ করতে গিয়ে তিন জন বাঙালি কর্তৃক ধর্ষণ ও হত্যার শিকার হয়েছেন বলে স্থানীয় ও পরিবারের লোকজন অভিযোগ করেছেন। এই ধর্ষণ-হত্যার ঘটনা নতুন কোন ঘটনা নয়, পার্বত্য চট্টগ্রামে প্রতিনিয়ত এ ধরনের ঘটনা ঘটে চলেছে। বিচারহীনতার কারণে অপরাধীদের দৃষ্টান্তমূলক সাজা না হওয়া বার বার এমন ঘটনা ঘটছে।
তিনি আরো বলেন, পার্বত্য চটগ্রামের একদিকে পাহাড়ি নারীদের ওপর সহিংতা করা হচ্ছে, অন্যদিকে নানা কৌশলে পাহাড়িদের ভূমি বেদখলের মাধ্যমে তাদেরকে নিজ বাস্তুভিটা থেকে উচ্ছেদ করা হচ্ছে। এমতাবস্থায় সবাইকে সোচ্চার হয়ে রুখে দাঁড়াতে হবে।
সভাপতির বক্তব্যে তনুময় চাকমা বলেন, পার্বত্য চট্টগ্রামে ধর্ষণ, মামলা-হামলা, নির্যাতন, হত্যা-গুম, ভূমি বেদখল বিচ্ছিন্ন কোন ঘটনা নয়। এসব ঘটনা সুপরিকল্পিতভাবে করা হচ্ছে। রাষ্ট্র ধর্ষণকে জাতিগত নিপীড়নের হাতিয়ার হিসেবে ব্যবহার করছে। যার উদাহরণ হচ্ছে রাষ্ট্রীয় বাহিনী কর্তৃক পার্বত্য চট্টগ্রামে পাহাড়ি নারী ধর্ষণের ক্ষেত্রে মেডিকেল রিপোর্টের ওপর নিষেধাজ্ঞা জারি রাখা। কয়েকদিন আগেও কাউখালীতে ধর্ষণের ঘটনা ঘটেছে।
তিনি চিংমা খেয়াংকে ধর্ষণের পর হত্যার ৩ দিনেও ঘটনার সাথে জড়িতদের গ্রেফতারে প্রশাসনের তেমন কোন তৎপরতা আমরা দেখতে পাচ্ছি না।
সমাবেশ থেকে বক্তারা অবিলম্বে হত্যাকারী ধর্ষকদের গ্রেফতার করে যথাযথ বিচার ও সর্বোচ্চ শাস্তি নিশ্চিত করার দাবি জানান।
সিএইচটি নিউজে প্রকাশিত প্রচারিত কোন সংবাদ, তথ্য, ছবি ,ভিডিও, কনটেন্ট ব্যবহার করতে হলে কপিরাইট আইন অনুসরণ করে ব্যবহার করুন।