দীঘিনালায় কল্পনা অপহরণকারীদের প্রতীকী ফাঁসি প্রদান ও সমাবেশ অনুষ্ঠিত

দীঘিনালা প্রতিনিধি, সিএইচটি নিউজ
সোমবার, ১০ জুন ২০২৪
খাগড়াছড়ির দীঘিনালায় প্রবল বৃষ্টির মধ্যেও কল্পনা চাকমা’র চিহ্নিত অপহরণকারী লে. ফেরদৌস, ভিডিপি প্লাটুন কমাণ্ডার সালেহ আহম্মেদ ও নুরুল হককে জনতার আদালতের রায়ে প্রতীকী ফাঁসি প্রদান ও অপরাধীদের দায়মুক্তির রায়ের প্রতিবাদে সমাবেশ অনুষ্ঠিত হয়েছে।
আজ সোমবার (১০ জুন ২০২৪) সকাল ১০টার সময়ে দীঘিনালা উপজেলার বাবুছড়া কলেজ এলাকার বাঘাইছড়ি দূঅর সংলগ্ন রাস্তায় ব্রীজের পাশে এক খোলা মাঠে সমাবেশের আয়োজন করা হয়।
“অপহরণের ২৮ বছর: কল্পনা চাকমার সন্ধান চাই, অপরাধীদের সাজা দাও: দায়মুক্তির রায় মানি না, মানব না” শ্লোগানে হিল উইমেন্স ফেডারেশন ও পার্বত্য নারী সংঘ দীঘিনালা উপজেলা শাখা এই কর্মসূচির আয়োজন করে। এতে আড়াই হাজারের অধিক ছাত্র-জনতা উপস্থিত হয়।
সমাবেশ শুরুর প্রাক্কালে প্রবল বৃষ্টি শুরু হলে পরবর্তীতে সমাবেশের পরিবর্তে বৃষ্টি উপেক্ষা করে বিক্ষোভ মিছিল করা হয়। মিছিলটি সমাবেশ স্থল থেকে বাবুছড়ার নোয়াপাড়ায় এসে সংক্ষিপ্ত সমাবেশের মধ্য দিয়ে শেষ হয়।

বৃষ্টি বিঘ্নিত মিছিল পরবর্তী সমাবেশে হিল উইমেন্স ফেডারেশনের নেত্রী নন্দা চাকমার সঞ্চালনায় বক্তব্য রাখেন বৃহত্তর পার্বত্য চট্টগ্রাম পাহাড়ি ছাত্র পরিষদের কেন্দ্রীয় সদস্য অমিত চাকমা। এছাড়াও আরও উপস্থিত ছিলেন পার্বত্য চট্টগ্রাম নারী সংঘের নেত্রী মিনতি চাকমা ও ইউপিডিএফের দীঘিনালা ইউনিটের সমন্বয়ক মিলটন চাকমা প্রমুখ।

সমাবেশে অমিত চাকমা বলেন, সরকারের বাক্সবন্দি বিচার ব্যবস্থা পার্বত্য চট্টগ্রামে বিচারহীনতার সংস্কৃতি তৈরি করে রেখেছে। যার জ্বলন্ত প্রমাণ দীর্ঘ ২৮ বছরেও কল্পনার সন্ধান না পাওয়া ও চিহ্নিত অপহরণকারীদের বিচার না হওয়া। আদালতের মাধ্যমে দোষীদের দায়মুক্তি দিয়ে পার্বত্য চট্টগ্রামের বিচারহীনতার সংস্কৃতিকে আরও পাকাপোক্ত করেছে।
তিনি আরও বলেন, সরকার পাহাড়ি জনগোষ্ঠীর উপর অব্যাহত দমন-পীড়ন, নির্যাতনের বিরুদ্ধে ও দোষীদের শাস্তি না দিয়ে এটাই বুঝাতে চায় যে, ইচ্ছে করলে পার্বত্য চট্টগ্রামের জনগণের ওপর হত্যা নিপীড়ন, নারীদের ধর্ষণ নির্যাতন করা যায়। এভাবে তারা পাহাড়িদের মধ্যে আতঙ্কের মনোভাব তৈরি করে প্রতিবাদের স্পৃহাকে দমাতে চায়।

সমাবেশে থেকে অমিত চাকমা কল্পনা’র চিহ্নিত অপহরণকারী সেনাবাহিনীর কর্মকর্তা লে. ফেরদৌস, ভিডিপি প্লাটুন কমান্ডার সালেহ আহম্মেদ ও নুরুল হককে প্রতীকী ফাঁসি দেওয়ার অনুমতি চাইলে উপস্থিত জনতা সমস্বরে ও হাত উঁচিয়ে সমর্থন দেন।
পরে বৃষ্টির মধ্যেও উক্ত অপরাধীদের ফাঁসির দড়িতে ঝোলানো হয়।

কুশপুত্তলিকা ফাঁসির দড়িতে ঝোলাচ্ছেন এক ব্যক্তি।
উল্লেখ্য ১৯৯৬ সালের ১২ জুন তৎকালীন হিল উইমেন্স ফেডারেশনের কেন্দ্রীয় সাংগঠনিক সম্পাদক কল্পনা চাকমাকে সে সময়কার বাঘাইছড়ির কজছড়ি সেনা ক্যাম্প কমান্ডার লে. ফেরদৌস এর নেতৃত্বে অপহরণ ও গুম করা হয়। গত ২৮ বছর ধরে চলা সেই অপহরণ মামলাটি সর্বশেষ গত ২৩ এপ্রিল রাঙামাটির জেলা চীফ জুডিশিয়াল ম্যাজিস্ট্রেট আদালতের মাধ্যমে খারিজ করে দিয়ে অপহরণকারীদের দায়মুক্তি দেওয়া হয়। যার প্রতিবাদে পার্বত্য চট্টগ্রামে সর্বত্র সভা সমাবেশ ও দোষীদের প্রতীকী ফাঁসি প্রদান কর্মসূচি চলমান রয়েছে।
সিএইচটি নিউজে প্রকাশিত প্রচারিত কোন সংবাদ, তথ্য, ছবি ,ভিডিও, কনটেন্ট ব্যবহার করতে হলে কপিরাইট আইন অনুসরণ করে ব্যবহার করুন।