দীঘিনালায় বিজিবি’র ৫১ ব্যাটালিয়ন প্রত্যাহারের দাবিতে অবস্থান ধর্মঘট
সিএইচটিনিউজ.কম
দীঘিনালা প্রতিনিধি : খাগড়াছড়ির দীঘিনালায় বিজিবি’র ৫১ ব্যাটালিয়ন প্রত্যাহারপূর্বক উচ্ছেদ হওয়া পরিবারদের নিজ নিজ বসতভিটা ফেরতের দাবিতে ভূমি রক্ষা কমিটির উদ্যোগে অবস্থান ধর্মঘট কর্মসূচি পালিত হয়েছে।
আজ ২ নভেম্বর রবিবার সকাল ১০টায় দীঘিনালা উপজেলা কমপ্লেক্স এর সামনে অনুষ্ঠিত অবস্থান ধর্মঘট কর্মসূচিতে শত শত নারী পুরুষ অংশগ্রহণ করে। এ সময় তাঁরা ‘জীবন দেব তবু পিতৃভুমি ছাড়বা না’, ‘হামলা, মামলা করে আন্দোলন বন্ধ করা যাবে না’, ‘বিজিবি ৫১ ব্যাটালিয়ন প্রত্যাহার কর’, ‘উচ্ছেদ হওয়াদের স্ব স্ব বসতভিটা ফেরত দাও’, ‘হামলাকারী বিজিবি পুলিশ সেটেলার বাঙালীদের শাস্তি চাই’, ‘বৌদ্ধ মন্দিরের জায়গা বেদখল কেন শেখ হাসিনার জবাব চাই’ এরকম বিভিন্ন দাবি সম্বলিত শ্লোগান লেখা পোস্টার গলায় ঝুলিয়ে প্রদর্শন করে। সকাল ১০টা হতে দুপুর ১২টা পর্যন্ত ২ (দুই) ঘন্টা ব্যাপী অবস্থান ধর্মঘট পালিত হয়।
দীঘিনালা ভূমি রক্ষা কমিটি অন্যতম সদস্য প্রজ্ঞান জ্যোতি চাকমার সঞ্চালনায় অনুষ্ঠানে বক্তব্য রাখেন দীঘিনালা উপজেলা চেয়ারম্যান নবকমল চাকমা, ভাইস চেয়ারম্যান ও ভূমি রক্ষা কমিটির সদস্য সুসময় চাকমা, ২নং বোয়ালখালী ইউপি চেয়ারম্যান চয়ন বিকাশ চাকমা, ৩নং কবাখালী ইউপি চেয়ারম্যান বিশ্ব কল্যান চাকমা, ৪নং দীঘিনালা ইউপি চেয়ারম্যান চন্দ্র রঞ্জন চাকমা, ৫নং বাবুছড়া ইউপি চেয়ারম্যান সুগত প্রিয় চাকমা, অবসরপ্রাপ্ত শিক্ষক এবং শরনার্থী কল্যান সমিতির সাংস্কৃতিক সম্পাদক আনন্দ মোহন চাকমা, দীঘিনালা ভূমি রক্ষা কমিটির সদস্য সুজয় চাকমা, ক্ষতিগ্রস্ত পরিবার সদস্য ও ভূমি রক্ষা কমিটির সদস্য নতুন চন্দ্র কার্বারী প্রমুখ।
বক্তারা জায়গার প্রকৃত মালিকদের উচ্ছেদ করে বিজিবি ৫১ ব্যাটালিয়ন হেড কোয়াটার স্থাপন করাকে সরকারের ভূমি বেদখলের ষড়যন্ত্র আখ্যায়িত করে বলেন, হাইকোটের জারি করা ২ সেপ্টেম্বরের স্থগিতাদেশ অমান্য করে ২২ অক্টোবর২০১৪ইং স্থায়ী স্থাপনা বা অবকাঠামো নির্মানের জন্য বিজিবির প্রকৌশল বিভাগ থেকে একটি দল গিয়ে মাটি পরীক্ষা নিরীক্ষা করা আইনের প্রতি অবজ্ঞা ও অশ্রদ্ধারই সামিল। এর ফল কখনো শুভ হবেনা বলে বক্তারা স্পষ্টভাবে জানিয়ে দেন।
বক্তারা আরো বলেন, দেশের সীমান্ত রক্ষার জন্য বিজিবি হেড কোয়াটার স্থাপনের বিপক্ষে জনগণ নয়। তবে বিরোধ মুক্ত স্থানে স্থাপন করলে কোন আপত্তি নেই। যেখানে স্থাপন করলে কোন বিরোধ থাকবে না এবং কেউ উচ্ছেদ হবে না বা ক্ষতিগ্রস্ত হবে না, সে রকম জায়গায় হেডকোয়াটার স্থাপনের জন্য বক্তারা সরকারের প্রতি অনুরোধ জানান। প্রয়োজনে জমি নির্ধারনের জন্য স্থানীয় মুরুব্বী ও জনপ্রতিনিধিদের নিয়ে একটি কমিটি গঠন করার দাবি জানান বক্তারা।
বক্তারা অবিলম্বে যত্ন কুমার কার্বারী পাড়া ও শশী মোহন কার্বারী পাড়া হতে বিজিবি ৫১ ব্যাটালিয়ন প্রত্যাহার করে উচ্ছেদ হওয়া পরিবারদের স্ব স্ব বসত ভিটা ফেরতের দাবি জানান। অন্যথায় বল প্রয়োগের মাধ্যমে কাউকে উচ্ছেদ করে বিজিবি হেড কোয়াটার স্থাপন করা হলে কঠোর আন্দোলনের মাধ্যমে বিজিবি ৫১ ব্যাটালিয়নকে প্রত্যাহারে বাধ্য করা হবে এবং স্ব স্ব বসত ভিটা বিজিবির কবল হতে উদ্ধার করা হবে বলে বক্তারা হুশিয়ারী দেন।
পরে দুপুর ১২টায় ভূমি রক্ষা কমিটির নেতৃবৃন্দ দীঘিনালা উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তার মাধ্যমে প্রধানমন্ত্রী বরাবর স্মারক লিপি প্রদান করে এবং অবস্থান ধর্মঘট কর্মসূচি সমাপ্তি ঘোষণা করে।
————
সিএইচটিনিউজ.কম’র প্রচারিত কোন সংবাদ, তথ্য, ছবি ব্যবহারের প্রয়োজন দেখা দিলে যথাযথ সূত্র উল্লেখপূর্বক ব্যবহার করুন।