দীঘিনালায় হিল উইমেন্স ফেডারেশনের নারী সমাবেশ

দীঘিনালা প্রতিনিধি ।। হিল উইমেন্স ফেডারেশনের ৩৪তম প্রতিষ্ঠাবার্ষিকী ও আন্তর্জাতিক নারী দিবস উপলক্ষে খাগড়াছড়ির দীঘিনালায় নারী সমাবেশ করেছে পার্বত্য চট্টগ্রামে পূর্ণস্বায়ত্তশাসনের দাবিতে আন্দোলনরত নারী সংগঠন হিল উইমেন্স ফেডারেশন দীঘিনালা শাখা।
আজ ৮ মার্চ ২০২২, মঙ্গলবার সকাল ১০টায় এই সমাবেশ অনুষ্ঠিত হয়। সমাবেশের পূর্বে এক র্যালির আয়োজন করা হয়।
“অস্ত্রের মুখে অপহরণ, টহল-তল্লাশির নামে ধর্ষণ আমাদের দমিয়ে রাখতে পারবে না” এই স্লোগানে এই অনুষ্ঠিত সমাবেশে বক্তব্য রাখেন, হিল উইমেন্স ফেডারেশনের কেন্দ্রীয় কমিটির সদস্য রিতা চাকমা, দীঘিনালা উপজেলা সহ-সভাপতি মিনা চাকমা, গণতান্ত্রিক যুব ফোরামের দীঘিনালা উপজেলা সভাপতি জ্ঞান প্রসাদ চাকমা ও পিসিপি’র দীঘিনালা উপজেলা সভাপতি অনন্ত চাকমা প্রমুখ।
সমাবেশে বক্তারা বলেন, ‘আন্তজার্তিক নারী দিবস’ সারাবিশ্বে নারী অধিকার আদায়ের এক সংগ্রামের ইতিহাস। বিশ্বের প্রতিটি দেশে এই দিবসটি পালন করা হয়ে থাকে। অপরদিকে ১৯৮৮ সালের ৮ মার্চ পার্বত্য চট্টগ্রামে নারীদের প্রতিনিধিত্বকারী সংগঠন হিল উইমেন্স ফেডারেশন প্রতিষ্ঠা লাভ করে। প্রতিষ্ঠার পর থেকে হিল উইমেন্স ফেডারেশন রাষ্ট্রীয় দমন-পীড়ন, অন্যায় অত্যাচার, নারী নির্যাতন, ভূমি বেদখলসহ অন্যায়-অবিচারের বিরুদ্ধে লড়াই-সংগ্রামে নিয়োজিত রয়েছে।
বক্তারা অভিযোগ করে বলেন, পার্বত্য চট্টগ্রামে সেনাশাসন জারি রেখে প্রতিনিয়ত নিরীহ পাহাড়ি জনগণকে ধরপাকড়, ঘরবাড়ি তল্লাশি, মিথ্যা মামলায় হয়রানি করা হচ্ছে। শুধু তাই নয়, এখানে ধর্ষণকে জাতিগত নিপীড়ন হিসেবেও ব্যবহার করা হচ্ছে। যার কারণে কোন পাহাড়ি নারী ধর্ষণ কিংবা হত্যার শিকার হলে তার কোন সুষ্ঠু বিচার আমরা পাই না। দীর্ঘ ২৬ বছরেও কল্পনা চাকমার অপহরণের বিচার হয়নি, অপহরণ ঘটনায় জড়িত সেনাবাহিনীর লে. ফেরদৌস ও তার সহযোগীদের আইনের আওতায় আনা হয়নি।

তারা আরো বলেন, পার্বত্য চট্টগ্রামসহ সারা দেশে নারী ধর্ষণ-নির্যাতন দিন দিন বেড়েই চলছে। আর ধর্ষণ-নিপীড়নকে রাজনৈতিক হাতিয়ার হিসেবে ব্যবহার করে শাসকগোষ্ঠি ও ক্ষমতাশালীরা। যার ফলে ধর্ষণের ঘটনাগুলোর সুষ্ঠু বিচার ও অপরাধীদের দৃষ্টান্তমূলক সাজা হয় না।
বক্তারা বলেন, শাসকগোষ্ঠি যতই দমন-পীড়ন, খুন, ধর্ষণ, অন্যায়-অবিচার জারি রাখুক না কেন আমাদেরকে রুখে দাঁড়াতে হবে। তারা পার্বত্য চট্টগ্রামসহ সারাদেশে নারী নির্যাতনসহ সকল নিপীড়ন-নির্যাতনের বিরুদ্ধে রুখে দাঁড়ানোর আহ্বান জানান।
সমাবেশ থেকে বক্তারা পার্বত্য চট্টগ্রামসহ সারাদেশে নারী নির্যাতন, ধর্ষণসহ সকল রাজনৈতিক দমন-পীড়ন বন্ধ করা, নারীর নিরাপত্তা নিশ্চিতে কার্যকর পদক্ষেপ নেয়া এবং পার্বত চট্টগ্রামকে বেসামরিকীকরণ করে গণতান্ত্রিক অধিকার সুনিশ্চিত করার জন্য সরকারের প্রতি দাবি জানান।
সিএইচটি নিউজে প্রকাশিত প্রচারিত কোন সংবাদ, তথ্য, ছবি ,ভিডিও, কনটেন্ট ব্যবহার করতে হলে কপিরাইট আইন অনুসরণ করে ব্যবহার করুন।
সিএইচটি নিউজের ইউটিউব চ্যানেলটি সাবস্ক্রাইব করুন