দীঘিনালা ও খাগড়াছড়ি সদরে সেনা-সেটলার হামলার প্রতিবাদে মানিকছড়িতে বিক্ষোভ

0

মানিকছড়ি প্রতিনিধি, সিএইচটি নিউজ
শুক্রবার, ২০ সেপ্টেম্বর ২০২৪

খাগড়াছড়ির দীঘিনালায় সেনা-সেটেলার বাঙালি কর্তৃক জুম্মদের ওপর হামলা খুন, জখম, দোকানপাট-ঘরবাড়িতে অগ্নিসংযোগ ও লুটপাট এবং খাগড়াছড়ি সদরের নারাঙহিয়া, উপালি পাড়া ও স্বনির্ভরে সেনাবাহিনীর গুলিতে নিহত-আহত হওয়ার ঘটনার প্রতিবাদে এবং ঘটনায় জড়িতদের গ্রেফতার দৃষ্টান্তমূলক শাস্তি ও ক্ষতিগ্রস্তদের ক্ষতিপূরণের দাবিতে জেলার মানিকছড়িতে  বিক্ষোভ মিছিল ও সমাবেশ অনুষ্ঠিত হয়েছে।

আজ শুক্রবার (২০ সেপ্টেম্বর ২০২৪) সকাল ১০টায় মানিকছড়ি গিরি মৈত্রী ডিগ্রি কলেজ থেকে একটি মিছিল শুরু হয়ে আমতলা প্রদক্ষিণ করে আবারও কলেজ গেটে এসে সমাবেশে মিলিত হয়।

সমাবেশে চট্টগ্রামের শিক্ষার্থী অংহ্লাচি মারমার সভাপতিত্বে ও আনু মারমার সঞ্চালনায় বক্তব্য রাখেন সাচিংউ মারমা, এচিং মারমা, সাচিং মারমা প্রমুখ।

সমাবেশে বক্তারা দীঘিনালা ও খাগড়াছড়ির হামলার নিন্দা ও প্রতিবাদ জানান। তারা বলেন, গতকাল বিকালে দীঘিনালায় সেটলার বাঙালিরা সেনাবাহিনীর মদদে পরিকল্পিতভাবে মিছিল সহকারে সংঘবদ্ধভাবে পাহাড়িদের ওপর হামলা, দোকানপাট ও ঘরবাড়িতে অগ্নিসংযোগ-লুটপাট চালিয়েছে। এতে এক পাহাড়ি নিহত ও কয়েকজন আহত হয়েছেন। ঘটনার সময় সেনাবাহিনীসহ আইন-শৃঙ্খলা বাহিনী হামলাকারীদের বিরদ্ধে পদক্ষেপ না নিয়ে নীরব ভূমিকা পালন করেছে। এতেই প্রমাণ হয় এ হামলায় সেনা-প্রশাসনের মদদ ছিল।


তারা গভীর উদ্বেগ প্রকাশ করে আরো বলেন, দীঘিনালা হামলার পরও সেনাবাহিনী ক্ষান্ত হয়নি। তারা দীঘিনালা হামলার প্রতিবাদে খাগড়াছড়ি সদরে বিক্ষোভরত নিরীহ ছাত্র-জনতার ওপর এলোপাতাড়ি গুলিবর্ষণ করে দুই জনকে হত্যাসহ বহু জনকে গুলিবিদ্ধ করে আহত করেছে এবং আরো বেশ কয়েকজনকে ধরে অমানুষিক নির্যাতন করে পুলিশের হাতে তুলে দিয়েছে।

সভাপতির বক্তব্য অংহ্লাচিং মারমা বলেন, পার্বত্য চট্টগ্রামের পাহাড়ি জনগণ ডজনেরও অধিক গণহত্যা ও অসংখ্য সাম্প্রদায়িক হামলার শিকার হয়েছে। কিন্তু কোন ঘটনারই বিচার হয়নি। গত ৫ আগস্ট ফ্যাসিস্ট হাসিনা সরকারের পতনের পর আমরা ভেবেছিলাম অন্তর্বর্তীকালীন সরকারের মাধ্যমে পাহাড়ের পরিস্থিতি শান্ত হবে। কিন্তু উল্টো নতুন করে আমরা হামলার শিকার হচ্ছি। এই অন্তর্বর্তীকালীন সরকারও আগের সরকারের মতোই সেনাবাহিনীকে পাহাড়িদের বিরুদ্ধে ব্যবহার করছে।

সেনাবাহিনী সমাবেশে বাধা দেয়ার চেষ্টা করছে


তিনি বলেন, পাহাড়ি জনগণের আর ঘরে বসে থাকার সময় নেই। দল মত নির্বিশেষে সকল মানুষকে ঐক্যবদ্ধ হয়ে আন্দোলন সংগ্রাম গড়ে তুলতে হবে।

সমাবেশ থেকে ঢাকায় বিক্ষুব্ধ জুম্ম ছাত্র-জনতার সমাবেশ থেকে ঘোষিত তিন পার্বত্য জেলায় ৭২ ঘন্টার সড়ক ও নৌপথ অবরোধ কর্মসূচির প্রতি সমর্থন জানান বক্তারা। তারা উক্ত অবরোধ কর্মসূচি সফল করতে সর্বস্তরের জনগণের প্রতি আহ্বান জানান।

বক্তারা অবিলম্বে দীঘিনালা ও খাগড়াছড়ি সদরে হামলার সাথে জড়িত সেনা-সেটলারদের আইনের আওতায় এনে দৃষ্টান্তমূলক শাস্তি এবং ক্ষতিগ্রস্তদের যথাযথ ক্ষতিপূরণ প্রদানের জন্য বর্তমান সরকারের প্রতি আহ্বান জানান। একই সাথে তারা পার্বত্য চট্টগ্রাম থেকে সেনাশাসন তুলে নেয়া ও সেটলার বাঙালিদের পার্বত্য চট্টগ্রামের বাইরে সমতলে সম্মানজনক পুনর্বাসনের দাবি জানিয়েছেন।

এদিকে, সমাবেশে সেনাবাহিনী বাধা দিতে চাইলে ছাত্র জনতার প্রতিরোধে মুখে তারা পিছু হটতে বাধ্য হয়।



This website uses cookies to improve your experience. We'll assume you're ok with this, but you can opt-out if you wish. AcceptRead More