দেশে স্বৈরশাসনের পতন হলেও পার্বত্য চট্টগ্রামের পরিস্থিতি পরিবর্তন হয়নি : আনু মুহাম্মদ

‘অন্তর্বর্তী সরকারের আশু করণীয়’ প্রস্তাব ১০০ দিনে কতটা বাস্তবায়ন হলো শিরোনামের সংবাদ সম্মেলনে বক্তব্য দেন অধ্যাপক আনু মুহাম্মদ। গণতান্ত্রিক অধিকার কমিটি এ সংবাদ সম্মেলনের আায়োজন করে।
ঢাকা প্রতিনিধি, সিএইচটি নিউজ
বৃহস্পতিবার, ২১ নভেম্বর ২০২৪
‘সারা বাংলাদেশে আমরা বলছি স্বৈরশাসনের পতন হয়েছে, কিন্তু পার্বত্য চট্টগ্রামের পরিস্থিতির কোন পরিবর্তন হয়নি, এটা খুবই দুঃখজনক এবং উদ্বেগজনক’ বলে মন্তব্য করেছেন গণতান্ত্রিক অধিকার কমিটির আহ্বায়ক ও জাহাঙ্গীরনগর বিশ্ববিদ্যালয়ের সাবেক অধ্যাপক আনু মুহাম্মদ।
তিনি পার্বত্য চট্টগ্রামে গণতান্ত্রিক পরিস্থিতি কিভাবে তৈরি হতে পারে এবং সেখানে যে হত্যাকাণ্ডের ঘটনাগুলো ঘটছে সেসব ঘটনার বিচার কিভাবে নিশ্চিত করা যায় সে লক্ষ্যে সরকারকে সক্রিয় ভূমিকা পালনের আহ্বান জানান।
আজ বৃহস্পতিবার (২১ নভেম্বর ২০২৪) সকাল সাড়ে ১১টায় ঢাকায় জাতীয় প্রেসক্লাবের জহুর হোসেন চৌধুরী হল রুমে গণতান্ত্রিক অধিকার কমিটি উদ্যোগে আয়োজিত সংবাদ সম্মেলনে তিনি এসব কথা বলেন।
‘অন্তর্বর্তী সরকারের আশু করণীয়’ প্রস্তাব ১০০ দিনে কতটা বাস্তবায়ন হলো? এ নিয়ে পর্যালোচনা করতে উক্ত সংবাদ সম্মেলনের আয়োজন করে গণতান্ত্রক অধিকার কমিটি।
অধ্যাপক আনু মুহাম্মদ গণতান্ত্রিক অধিকার কমিটির উত্থাপিত জাতিসত্তাগুলোর সাংবিধানিক স্বীকৃতির দাবি পুনর্ব্যক্ত করে বলেন, সংবিধান সংস্কার কমিশনে যে রূপরেখা হবে সেখানে বাংলাদেশের পাহাড়ে এবং সমতলে যত জাতিগোষ্ঠি আছে তাদের যেন সাংবিধানিক স্বীকৃতি থাকে তা নিশ্চিত করতে হবে।
এ সময় তিনি সকল জাতির পণ্য পরিবহন-যাতায়াতের ওপর যে বিভিন্ন ধরনের নিয়ম-কানুন, বিধি-নিষেধ জারি রয়েছে তা অবিলম্বে প্রত্যাহারের দাবি জানান।

‘অন্তর্বর্তী সরকারের আশু করণীয়’ প্রস্তাব ১০০ দিনে কতটা বাস্তবায়ন হলো শিরোনামের সংবাদ সম্মেলনে বক্তব্য দেন অধ্যাপক আনু মুহাম্মদ। গণতান্ত্রিক অধিকার কমিটি এ সংবাদ সম্মেলনের আায়োজন করে।
গণতান্ত্রিক অধিকার কমিটির ‘অন্তর্বর্তী সরকারের আশু করণীয়’ ১৩ দফা প্রস্তাবের মধ্যে ১০ নাম্বার প্রস্তাব ছিল পাহাড় ও সমতলের সংখ্যালঘু জাতিগোষ্ঠি বিষয়ে। এতে ছিল “পার্বত্য চট্টগ্রামে গণতান্ত্রিক পরিবেশ সৃষ্টি করতে সেনাশাসন প্রত্যাহারের রোডম্যাপ ঘোষণা। পাহাড়ের গ্রামগুলোতে সাম্প্রতিক হামলা অগ্নিসংযোগসহ সকল খুন, অপহরণ, হয়রানির বিচার। পাহাড়ে সমতলে সকল জনগোষ্ঠির স্ব স্ব জাতিসত্তার সাংবিধানিক স্বীকৃতি ও ভূমি সমস্যা সমাধানের জন্য কাজ শুরু। বম জনগোষ্ঠির ওপর পাইকারি নিপীড়ন বন্ধ করে আটককৃত বম আদিবাসীদের মুক্ত করা। সকল জাতির পণ্য পরিবহন ও যাতায়াতে নিয়ন্ত্রণ/বিধিনিষেধ প্রত্যাহার করা”।
গত ৫ অক্টোবর অধিকার কমিটির পক্ষ থেকে অন্তর্বর্তী সরকারের কাছে জুলাই গণঅভ্যুত্থানে শহীদ, নিখোঁজ ও আহতদের পূর্ণ তালিকা প্রকাশ ও হত্যাকাণ্ডের জন্য দায়ীদের বিচার, সংবিধান কমিশনের মাধ্যমে একটি গণতান্ত্রিক সংবিধানের রূপরেখা প্রকাশসহ উক্ত ১৩ দফা প্রস্তাব উত্থাপন করা হয়েছিল।
সংবাদ সম্মেলনে উক্ত ১৩ দফা প্রস্তাব একে একে পড়ে শোনান গণতান্ত্রিক অধিকার কমিটির যুগ্ম আহ্বায়ক ও জাহাঙ্গীর নগর বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষক মাহা মির্জা। আনু মুহাম্মদ সেগুলোর অগ্রগতি পর্যালোচনা করেন।
সংবাদ সম্মেলন থেকে গণতান্ত্রিক অধিকার কমিটির ব্যানারে আগামী ২৩ নভেম্বর ২০২৪, শনিবার বিকাল ৩টায় ঢাকায় কেন্দ্রীয় শহীদ মিনারে ‘বৈচিত্র্যের ঐক্য’ শিরোনামে সমাবেশ আহ্বান করেন আনু মুহাম্মদ। তিনি বাংলাদেশের সকল শ্রেণীগত, ধর্মীয়, লিঙ্গীয়, বর্ণ, জাতিগত, পেশাগত ও সাংস্কৃতিক বৈচিত্র্যের মানুষকে এ সমাবেশ সফল করার আহ্বান জানান।
সংবাদ সম্মেলনে আরো উপস্থিত ছিলেন গণতান্ত্রিক অধিকার রক্ষা কমিটি সদস্য অধ্যাপক ডা. হারুন-অর-রশিদ, ঢাকা বিশ্বিবদ্যালয় অধ্যাপক মোশাহিদা সুলতানা ঋতু, সীমা দত্ত, কাফি রতন, আকরাম খাঁ ও মাইকেল চাকমা।
সিএইচটি নিউজে প্রকাশিত প্রচারিত কোন সংবাদ, তথ্য, ছবি ,ভিডিও, কনটেন্ট ব্যবহার করতে হলে কপিরাইট আইন অনুসরণ করে ব্যবহার করুন।