ধর্ম অবমাননার কারণে বাহালুল আলমের পতন ছাড়া উত্থান হবে না : শ্রীমৎ বিশুদ্ধানন্দ মহাস্থবির

0

রাঙামাটি॥ প্রখ্যাত বৌদ্ধ ধর্মীয় গুরু, আর্য শ্রাবক বনভান্তের অন্যতম প্রধান শিষ্য ও রত্নাঙ্কুর বনবিহারের অধ্যক্ষ শ্রীমৎ বিশুদ্ধানন্দ মহাস্থবির বলেছেন ধর্ম অবমাননার কারণে নানিয়াচর জোন কমান্ডার লে. কর্নেল বাহালুল আলমের পতন ছাড়া উত্থান হবে না। (বৌদ্ধ) ধর্মকে অবমাননা করায় তার কোন ক্ষমা নেই। তিনি যদি আর একবার এ ধরনের অপরাধ করেন তাহলে তিনি ধ্বংস হবেন।

গত শুক্রবার (২ নভেম্বর) রাঙামাটির নানিয়াচরে রত্মাঙ্কুর বনবিহারে অনুষ্ঠিত কঠিন চীবর দানোৎসবে দেয়া এক ধর্মীয় দেশনায় (ভাষণ) তিনি এ মন্তব্য করেন।

পূজনীয় বিশুদ্ধানন্দ ভান্তে আরো বলেন, গত ২৯ অক্টোবর রত্নাঙ্কুর বনবিহারে সেনাবাহিনী তল্লাশী চালিয়ে আমাদের ধর্মের প্রতি অবমাননা করেছে। এর মাধ্যমে পবিত্র বৌদ্ধ ধর্মের ওপর আঘাত করা হয়েছে।

নবনির্বাচিত উপজেলা চেয়ারম্যান প্রগতি চাকমার উদ্দেশ্যে শ্রদ্ধেয় ভান্তে বলেন, সে কি আসলে মানুষ নাকি বৌদ্ধ সম্প্রদায়ের কলঙ্ক? সেনাবাহিনী এত বড় একটা ঘটনা ঘটিয়েছে, তারপরও সে কোন খবর নেয়নি।

সেনাবাহিনীর লেলিয়ে দেয়া নব্য মুখোশ বাহিনীর সর্দার তপন জ্যোতি চাকমা ওরফে বর্মার করুণ পরিণতি সবাইকে স্মরণ করিয়ে দিয়ে তিনি বলেন, ‘বর্মাও আমার বিহারের ভিতরে মানুষ মেরেছিল, ধাওয়া করেছিল। আমি তাকে তিন মাস সময় দিয়েছিলাম। সে ৩ মাস বাঁচেনি। সে তার কৃত কর্মের ফল পেয়েছে।’

তিনি দায়ক দায়িকাদের উদ্দেশ্যে বলেন, যুব সমাজকে জুয়া না খেলে, মদ না খেয়ে সচেতন হতে হবে। ধর্মের প্রতি যে আঘাত আসছে তার যথাযথ জবাব দিতে হবে। পড়াশুনা করে যোগ্য হয়ে সমাজের হাল ধরতে হবে।

উক্ত অনুষ্ঠানে শ্রদ্ধেয় বনভান্তের শিষ্য জ্ঞানপ্রিয় মহাস্থবির তার দেশনায় বুদ্ধের উদ্ধৃতি দিয়ে বলেন, স্বজাতির ছায়া হলো সবচেয়ে বড় ছায়া। তাই আমাদেরকে স্বজাতির ছায়ায় থেকে জীবন ধারণ করতে হবে।

পার্বত্য চট্টগ্রামে বৌদ্ধ সম্প্রদায়ের সবচেয়ে বড় ধর্মীয় অনুষ্ঠান হলো কঠিন চীবর দানোৎসব। এ উপলক্ষে রত্নাঙ্কুর বনবিহারে আয়োজিত অনুষ্ঠানটি কয়েকটি পর্বে বিভক্ত ছিল।

সকাল ৯টা থেকে ১১টা পর্যন্ত প্রথম পর্বে দেশনা দেন ফুরোমোন আন্তর্জাতিক ভাবনা কেন্দ্রের অধ্যক্ষ শ্রীমৎ ভৃগু মহাস্থবির ও রাঙামাটি ভাবন কেন্দ্রের অধ্যক্ষ মেত্তাবংশ স্থবির।

এরপর সবার জন্য শান্তি ও সমৃদ্ধি কামনা করে একটি ধর্মীয় র‌্যালি বের করা হয়। র‌্যালিটি বিহার প্রাঙ্গন থেকে উপজেলা কার্যালয় পর্যন্ত যায়।

অনুষ্ঠানের বিকেলের পর্বে শ্রীমৎ বিশুদ্ধানন্দ মহাস্থবির ও শ্রীমৎ জ্ঞানপ্রিয় মহাস্থবির ছাড়াও দেশনা দেন রাজবন বিহারের ভান্তে শ্রীমৎ সত্যপ্রেম ভিক্ষু।

এছাড়া স্বাগতিক বক্তব্য দেন বিহার পরিচালনা কমিটির সহসভাপতি কমল কান্তি চাকমা। অনুষ্ঠান উপস্থাপনা করেন সুমিত্র চাকমা ও পিংকি চাকমা। অনুষ্ঠানে আনুমানিক ৪ হাজার নারী পুরুষ উপস্থিত ছিলেন।
——————-
সিএইচটি নিউজ ডটকম’র প্রচারিত কোন সংবাদ, তথ্য, ছবি ব্যবহারের প্রয়োজন দেখা দিলে যথাযথ সূত্র উল্লেখপূর্বক ব্যবহার করুন।

 

This website uses cookies to improve your experience. We'll assume you're ok with this, but you can opt-out if you wish. AcceptRead More