নাক্রাই বাঁধ প্রকল্প বাতিল ও পার্বত্য জেলা পরিষদের নির্বাচন দাবিতে খাগড়াছড়িতে বিক্ষোভ
খাগড়াছড়ি: “গুইমারার নাক্রাই বাঁধ প্রকল্প বাতিল, উন্নয়নের নামে-বেনামে ভূমি বেদখল ষড়যন্ত্র বন্ধ করা ও পার্বত্য জেলা পরিষদের সদস্য সংখ্যা বৃদ্ধি নয়, জবাবদিহীতা নিশ্চিত করতে জেলা পরিষদ বিল বাতিল করে নির্বাচন দাও” এই দাবিতে খাগড়াছড়িতে বিক্ষোভ মিছিল ও সমাবেশ করেছে গণতান্ত্রিক যুব ফোরাম খাগড়াছড়ি জেলা শাখা।
সোমবার (২৪ নভেম্বর) বেলা ২.৩০টায় স্বনির্ভর থেকে একটি বিক্ষোভ মিছিল বের করা হয়। মিছিলটি নারাঙহিয়ে, চেঙ্গী স্কোয়ার হয়ে মহাজন পাড়ার সূর্যশিখা ক্লাবের সামনে গিয়ে প্রতিবাদ সমাবেশ করে। এতে বক্তব্য রাখেন হিল উইমেন্স ফেডারেশন এর জেলা শাখা সাধারণ সম্পাদক শিখা চাকমা ও পাহাড়ি ছাত্র পরিষদের জেলা শাখার সভাপতি বিপুল চাকমা ও গণতান্ত্রিক যুব ফোরামের জেলা আহ্বায়ক জিকো ত্রিপুরা। সমাবেশ পরিচালনা করেন গণতান্ত্রিক যুব ফোরামের খাগড়াছড়ি জেলা সদস্য সচিব রিপন চাকমা। সমাবেশে প্রায় দুই শাতাধিক যুব ও নারী অংশগ্রহণ করে।
সমাবেশে শিখা চাকমা তার বক্তব্যে বলেন, সরকার উন্নয়নের নামে-বেনামে ভূমি বেদখল করে চলেছে, এছাড়া ক্যাম্প সম্প্রসারণের জন্য পাহাড়িদের উচ্ছেদ করেছে। আমরা নিজেদের জায়গা জমি থেকে উচ্ছেদ হওয়ার জন্য কোন উন্নয়ন প্রকল্প চাই না। সাজেকে শিয়াইদাইলুই পাড়ায় বিজিবি ক্যম্প স্থপানের সাথে সাথে ত্রিপুরা নারী শ্লীলতাহানীর প্রচেষ্টা হয়। যারা আমাদের মান সম্মান নিশ্চিত করতে পারেনা সেই সেনা-বিজিবি-পুলিশ পাহাড়ি জনগণ চায় না।
বিপুল চাকমা বলেন, নামে উন্নয়ন, আসল উদ্দেশ্য পাহাড়ি উচ্ছেদ। পার্বত্য চট্টগ্রামে যেখানে মাধ্যমিক ও উচ্চ মাধ্যমিক শিক্ষা প্রতিষ্ঠানে পাশের হার খুবই কম, সেখানে মেডিকেল কলেজ ও বিশ্ববিদ্যালয় স্থাপনের কি যুক্তিকতা থাকতে পারে? সরকার মেডিকেল কলেজ, বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি বিশ্ববিদ্যালয় স্থাপনের পাহাড়ি জায়গা দখলের নতুন ষড়যন্ত্র শুরু করেছে। তিনি অবিলম্বে মেডিকেল কলেজ, বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি বিশ্ববিদ্যালয় স্থাপনের কার্যক্রম স্থগিত করতে সরকারের প্রতি আহ্বান জানান। এছাড়া প্রাথমিক শিক্ষার মান বৃদ্ধির জন্য সকল জাতিসত্তার মাতৃভাষায় প্রাথমিক শিক্ষা চালুর করতে সরকারের প্রতি অহ্বান জানান।
জিকো ত্রিপুরা বলেন, কাপ্তাই বাঁধের কারণে পার্বত্য চট্টগ্রামের প্রায় ৬০হাজার পাহাড়ি উচ্ছেদ হয়েছিলো ও ৫৪ হাজার একর জায়গা-জমি পানির নিচে তলিয়ে গেিয়ছিলো। রাঙ্গামাটি জেলার অনেক জায়গায় এখানো বিদ্যুৎ এর আলোর মূখ দেখেনি। পার্বত্য চট্টগ্রামে একমাত্র গ্যাসক্ষেত্র সেমুতাং গ্যাস সরকার পার্বত্য চট্টগ্রামের জনগণের চাহিদা পূরণ না করে পার্বত্য চট্টগ্রামের বাইরে নিয়ে গেছে। বর্তমান ক্ষমতাসীন সরকার উন্নয়নের নামে নাক্রাই ছড়ায় বাঁধ দিয়ে জলবিদ্যুৎ প্রকল্প হাতে নিতে চাচ্ছে।
তিনি বলেন, নারায়নগঞ্জে সেনা স্কিম প্রকল্প ও আড়িয়াল খাঁ বিলে বঙ্গবন্ধু বিমান বন্দর স্থাপনের সরকারের সিদ্ধান্ত জনগণের আন্দোলনের মুখে বাতিল হয়ে গিয়েছিলো। ঠিক তেমনি, জনগণের গণআন্দোলন পরিচালনা করে যেকোন উন্নয়ন প্রকল্প বাতিল করতে সরকারকে বাধ্য করা হবে বলে তিনি হুঁশিয়ার উচ্চারণ করেন।
—————
সিএইচটিনিউজ.কম’র প্রচারিত কোন সংবাদ, তথ্য, ছবি ব্যবহারের প্রয়োজন দেখা দিলে যথাযথ সূত্র উল্লেখপূর্বক ব্যবহার করুন।