নান্যাচরে গণতান্ত্রিক যুব ফোরামের প্রতিষ্ঠাবার্ষিকী পালন

নান্যাচর প্রতিনিধি ।। রাঙামাটির নান্যাচরে গণতান্ত্রিক যুব ফোরাম প্রতিষ্ঠার দুই দশকপূর্তি পালন করেছে সংগঠনটির রাঙামাটি জেলা শাখা।
আজ ৫ এপ্রিল ২০২২, মঙ্গলবার দুপুর ১২টায় নান্যাচর উপজেলা সদর এলাকায় ‘আমরা করবো জয়’ গানটি পরিবেশনের মাধ্যমে ইউপিডিএফ-এর পতাকা ও গণতান্ত্রিক যুব ফোরামের দলীয় পতাকা উত্তোলন মধ্যে দিয়ে আনুষ্ঠানিকতা শুরু হয়। পতাকা উত্তোলনের পর পার্বত্য চট্টগ্রামের আন্দোলনের সকল শহীদদের প্রতি শ্রদ্ধা ও সম্মান জানিয়ে ১ মিনিট নিরবতা পালন করা হয়। এরপর এক আলোচনা সভা অনুষ্ঠিত হয়।
গণতান্ত্রিক যুব ফোরামের রাঙামাটি জেলা শাখার সভাপতি ছদরক চাকমার সভাপতিত্বে ও প্রিয়তম চাকমা সঞ্চালনায় অনুষ্ঠিত আলোচনা সভায় বক্তব্য রাখেন হিল উইমেন্স ফেডারেশনের জেলা প্রতিনিধি নিশি চাকমা, পার্বত্য চট্টগ্রাম নারী সংঘের রাঙামাটি জেলা শাখার সভাপতি রিনিসা চাকমা, পাহাড়ি ছাত্র পরিষদের কেন্দ্রীয় সদস্য নেপচূন চাকমা প্রমূখ।
সভায় বক্তারা বলেন, গণতান্ত্রিক যুব ফোরাম প্রতিষ্ঠালগ্ন থেকে শাসক গোষ্ঠীর অন্যায়-অত্যাচার, শোষণ-নির্যাতনের বিরুদ্ধে ও ভূমিবেদখল, মা-বোনের ইজ্জ্বত রক্ষার্থে ইউপিডিএফ-এর সহযোগী সংগঠন হিসেবে কার্যক্রম পরিচালনা করে আসছে। ২০১১ সালে ৩০শে জুন পঞ্চদশ সংবিধান সংশোধনীতে বাঙালী জাতিয়তাবাদ চাপিয়ে দেওয়া হলে এর বিরুদ্ধে যুব ফোরাম আন্দোলন করেছে।
বক্তারা আরো বলেন, শাসকগোষ্ঠী পার্বত্য চট্টগ্রামে পাহাড়ি জনগণকে ধ্বংস করতে একের পর এক নীলনক্সা প্রণয়ন করে যাচ্ছে। একদিকে অধিকারের জন্য আন্দোলনকারীদের সন্ত্রাস-চাঁদাবাজির তকমা লাগিয়ে দিয়ে গ্রেফতার, বিচার বহির্ভুত হত্যা, গুম, নিপীড়ন-নির্যাতন. উন্নয়নের নামে পর্যটন, রাস্তাঘাট বানিয়ে পাহাড়িদের নিজ বাস্তুভিটা থেকে উচ্ছেদ করে ভূমি বেদখল করা হচ্ছে। অপরদিকে কতিপয় সশস্ত্র দুর্বৃত্তকে আশ্রয়-প্রশ্রয় দিয়ে চালানো হচ্ছে নানা সন্ত্রাসী কর্মকাণ্ড। আর ছাত্র-যুব সমাজকে ধ্বংস করার জন্য পাড়া-মহল্লায় মাদক, জুয়া খেলাসহ সামাজিক অবক্ষয়ের মত নানান অপকর্মে লিপ্ত হতে গভীর ষড়যন্ত্র করে যাচ্ছে।
বক্তারা বলেন, পার্বত্য চট্টগ্রামের এমন পরিস্থিতিতে যুব সমাজ নির্বিকার হয়ে বসে থাকতে পারে না। এই পরিস্থিতি মোকাবেলা করার জন্য লড়াই সংগ্রামে নামতে হবে। যে কোন জাতি ও জনগণকে আত্মসম্মান নিয়ে বেঁচে থাকতে হলে লড়াই সংগ্রাম ছাড়া বিকল্প কোন পথ নেই। পাহাড়ি জাতিসত্তাসমূহের অস্তিত্ব ঠিকে রাখতে হলে পার্বত্য চট্টগ্রামের প্রত্যেকটি গ্রাম মহল্লায় যুব শক্তির উত্থান ঘটাতে হবে। যেদিন ছাত্র-যুব-নারী সমাজ সংগঠিত হয়ে লড়াই সংগ্রামে অবতীর্ণ হবে সেদিন শাসকগোষ্ঠী রাষ্ট্রীয় বাহিনী অন্যায় নিপীড়ন থেকে পিছু হতাতে বাধ্য হবে।
সমাবেশ থেকে বক্তারা, পার্বত্য চট্টগ্রামের রাষ্ট্রীয় নিপীড়ন, অন্যায়-অত্যাচারের বিরুদ্ধে সোচ্চার হয়ে অধিকার প্রতিষ্ঠার লড়াইকে বেগবান করতে যুব ফোরামের পতাকাতলে সমবেত হওয়ার জন্য যুব সমাজের প্রতি আহ্বান জানান।
সিএইচটি নিউজে প্রকাশিত প্রচারিত কোন সংবাদ, তথ্য, ছবি ,ভিডিও, কনটেন্ট ব্যবহার করতে হলে কপিরাইট আইন অনুসরণ করে ব্যবহার করুন।
সিএইচটি নিউজের ইউটিউব চ্যানেলটি সাবস্ক্রাইব করুন