পাঠ যখন প্রকৃতির পাঠশালায়
সিএইচটিনিউজ.কম ডেস্ক:

চারপাশে ঘন ঝোপঝাড় আর পাহাড়ের সারি। এসবের মধ্যে বাঁশের বেড়া আর শণের ছাউনি দেওয়া একটা ঘর। ঘরের মাথার ওপরে সগর্বে উড়ছে লাল-সবুজ পতাকা।
রাঙামাটির বাঘাইছড়ি উপজেলার মাচালংয়ের ৬ নম্বর পাড়ায় গেলে দেখা মিলবে ঘরটির। কাছাকাছি গেলে শোনা যাবে কচিকাঁচাদের পড়ার শব্দ।
এমন নিসর্গের মধ্যে গ্রামবাসী স্বেচ্ছাশ্রমে গড়ে তুলেছেন প্রাথমিক বিদ্যালয়। দেখে মনে হবে প্রকৃতির পাঠশালা। মাচালং ৬ নম্বর পাড়া প্রাথমিক বিদ্যালয় নামের এই শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানে নেই কোনো চেয়ার-টেবিল। বাঁশের মাচা বানিয়ে ব্যবস্থা করা হয়েছে বসার। বর্তমানে ৪০ জন শিশু পড়াশোনা করছে এখানে।
এলাকাবাসী জানান, বাঘাইছড়ির সাজেকের মাচালংয়ের ৬ নম্বর পাড়া এলাকা থেকে নিকবর্তী প্রাথমিক বিদ্যালয়ের দূরত্ব পাঁচ কিলোমিটার। এত দূরের পথ পাড়ি দিয়ে শিশুদের পক্ষে বিদ্যালয়ে যাওয়া সম্ভব নয় বলে পাড়ার বাসিন্দারা নিজেদের উদ্যোগে এই বিদ্যালয় তৈরি করেছেন।

বিদ্যালয়ের শিক্ষকতার দায়িত্ব পালন করছেন এলাকার দুই তরুণ সুমন চাকমা ও বুদ্ধধন চাকমা। সুমন চাকমা দীঘিনালা কলেজের একাদশ শ্রেণীতে পড়েন আর বুদ্ধধন দশম শ্রেণী পর্যন্ত পড়েছেন। তাঁরা বলেন, ‘চলতি বছরের জানুয়ারি মাসে গ্রামের বাসিন্দাদের প্রচেষ্টায় বিদ্যালয়টি চালু হয়। এই পথ দিয়ে সরকারের অনেক কর্মকর্তা সাজেকভ্যালি দেখতে যান। তাঁরা একবার বিদ্যালয়টি দেখে গেলে আমাদের উদ্যোগ সফল হতো। শিশুদের কষ্ট দূর করতেই এলাকাবাসী বিদ্যালয়টি প্রতিষ্ঠা করেছে। আমরাও বিনা বেতনে পাঠদান করছি। গ্রামবাসীর সংগতি না থাকায় আসবাব বানানো সম্ভব হয়নি। বাঁশের মাচায় বসেই পড়ছে শিশুরা।’
বিদ্যালয়ের চতুর্থ শ্রেণীর রিকেল চাকমা বলে, ‘আগে গ্রাম থেকে পাঁচ কিলোমিটার দূরে মাচালং সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ে যেতে হতো। এখন গ্রামের খুব কাছের বিদ্যালয়ে পড়তে পারছি।’
সৌজন্যে : প্রথম আলো