পানছড়িতে তিন সংগঠনের ‘শহীদী মার্চ’ কর্মসূচি
জুলাই হত্যাকাণ্ডে শহীদ আবু সাঈদসহ সারা দেশের সকল শহীদদের স্মরণে এই ’শহীদী মার্চ’ কর্মসূচির আয়োজন করা হয়

পানছড়ি প্রতিনিধি, সিএইচটি নিউজ
বৃহস্পতিবার, ৫ সেপ্টেম্বর ২০২৪
জুলাই হত্যাকান্ডে শহীদ আবু সাঈদসহ সারা দেশের সকল শহীদদের স্মরণে খাগড়াছড়ির পানছড়িতে ‘শহীদী মার্চ’ কর্মসূচি পালন করেছে ইউপিডিএফভুক্ত তিন সংগঠন বৃহত্তর পার্বত্য চট্টগ্রাম পাহাড়ি ছাত্র পরিষদ, গণতান্ত্রিক যুব ফোরাম ও পার্বত্য চট্টগ্রাম নারী সংঘ।
ফ্যাসিস্ট হাসিনা সরকারের পতনের ১ মাস পূর্তি উপলক্ষে আজ ৫ সেপ্টেম্বর ২০২৪, বৃহস্পতিবার এ ‘শহীদী মার্চ’ কর্মসূচি পালন করা হয়। এতে ব্যানারে ফ্যাসিস্ট হাসিনার লেজুড়-তাঁবেদারদের শায়েস্তা করা ও বন্দীদের নিঃশর্ত মুক্তির দাবি লেখা ছিল।

আজ বেলা আড়াইটার সময় পানছড়ির লোগাং করল্যাছড়ি উচ্চবিদ্যালয় গেট থেকে ’শহীদী মার্চ’ শুরু হয়ে বাবুড়া পাড়া বাজারে এসে সমাবেশে মিলিত হয়। বিভিন্ন শিক্ষা প্রতিষ্ঠানের শিক্ষার্থীরা এতে অংশগ্রহণ করেন।
সমাবেশে বক্তব্য রাখেন, পার্বত্য চট্টগ্রাম নারী সংঘের কেন্দ্রীয় সাধারণ সম্পাদক পরিণীতা চাকমা, গণতান্ত্রিক যুব ফোরাম কেন্দ্রীয় সাধারণ সম্পাদক বরুন চাকমা, পাহাড়ি ছাত্র পরিষদের পানছড়ি উপজেলা সভাপতি সুনীল ময় চাকমা ও গণতান্ত্রিক যুব ফোরামের পানছড়ি্ উপজেলা সভাপতি রিপন ত্রিপুরা।

যুব নেতা বরুন চাকমা বলেন, আজ ৫ সেপ্টম্বর ফ্যাসিস্ট হাসিনা সরকারের পতনের ১ মাস পূর্ণ হচ্ছে। দীর্ঘ সাড়ে ১৫ বছর যাবত আমরা ফ্যাসিস্ট হাসিনা সরকারের নিপীড়ন-নির্যাতন ও দমনমূলক ১১ নির্দেশনাসহ বিভিন্ন গণবিরোধী নীতির প্রতিবাদ করেছি। সংবিধানের পঞ্চদশ সংশোধনীতে বাঙালি জাতিয়তা চাপিয়ে দেয়ার বিরুদ্ধে প্রতিবাদ করেছি এবং হাসিনার দোসরদের কুচপুত্তলিকা পুড়িয়েছি। গত ৭ জানুয়ারি হাসিনার একতরফা ডামি সংসদ নির্বাচন আমরা বর্জন করে হাসিনা সরকারকে প্রত্যাখ্যান করেছি।

তিনি আরো বলেন, জুলাই-আগষ্টে বৈষম্য বিরোধী ছাত্র আন্দোলনের প্রতি আমরা সমর্থন জানিয়েছি। পার্বত্য চট্টগ্রামে আন্দোলন গড়ে তুলেছি।
তিনি পার্বত্য চট্টগ্রাম থেকে সেনাশাসন প্রত্যাহার করে সুষ্ঠু গণতান্ত্রিক শাসন কয়েম এবং ইউপিডিএফ নেতা আনন্দ প্রকাশ চাকমাসহ সকল রাজবন্দীদের মুক্তি দিতে অন্তর্বর্ত কালীন সরকারের প্রতি আহ্বান জানান।
পরিণীতা চাকমা বলেন, পার্বত্য চট্টগ্রামে আমরা পাহাড়িরা এখনো জিম্মি হয়ে রয়েছি, এর থেকে মুক্তি চাই। তিনি জুলাই- আগষ্টে ফ্যাসিস্ট হাসিনার পতন আন্দোলন দমনে সংঘটিত হত্যাকাণ্ডে জড়িতদের বিচার ও শাস্তির দাবি জানান।
রিপন ত্রিপুরা বলেন, গত ৫ আগষ্ট দেশে স্বৈরাচার মুক্ত হলেও আমরা পাহাড়িরা এখনো মুক্ত নয়। পাহাড়ে আমরা এখনো সেনাশাসনে বন্দী। অবিলম্বে পার্বত্য চট্টগ্রাম থেকে সেনাশাসন তুলে নিতে হবে।

ছাত্র নেতা সুনীল ময় চাকমা বলেন, পার্বত্য চট্টগ্রামে নিয়োজিত সেনাবাহিনীর কায়েমী স্বার্থবাদী চক্র আজকে পার্বত্য চট্টগ্রামকে জেলখানায় পরিনত করেছে। ফ্যাসিস্ট হাসিনার সুবিধাাভোগী সেনাবাহিনীর এই চক্রটি পাহাড়ে ঠ্যাঙাড়ে সন্ত্রাসী সৃষ্টি করে খুন, গুম, অপহরণসহ নানা অপরাধ কর্ম চালিয়ে যাচ্ছে। এরাই ২০১৮ সালের ১৮ আগষ্ট খাগড়াছড়ির স্বনির্ভর বাজারে হত্যাকাণ্ড, ২০২৩ সালে পানছড়িতে বিপুল চাকমা সহ চার তরুণ নেতাকে হত্যাসহ সংখ্য হত্যাকাণ্ডের ঘটনা সংঘটিত করেছে। গত ৫ আগস্ট দেশ স্বৈরাচার মুক্ত হলেও এসব হত্যাকাণ্ডের বিচার আমরা এখনো পাইনি। খুনিরা এখনো সেনা-প্রশাসনের ছত্রছায়ায় থেকে অপকর্ম চালিয়ে যাচ্ছে। বর্তমান অন্তর্বর্তীকালীন সরকারকে অবিলম্বে এসব হত্যাকাণ্ড সুষ্ঠু ও নিরপেক্ষ তদন্তপূর্বক ঘটনায় জড়িত খুনিদের গ্রেফাতর, বিচার ও দৃষ্টান্তমূলক শাস্তি দিতে হবে।
সিএইচটি নিউজে প্রকাশিত প্রচারিত কোন সংবাদ, তথ্য, ছবি ,ভিডিও, কনটেন্ট ব্যবহার করতে হলে কপিরাইট আইন অনুসরণ করে ব্যবহার করুন।