পার্বত্য চট্টগ্রামের ইতিহাসে এদিন: ৮৬’র গণহত্যা
সিএইচটিনিউজ.কম

৮৬’র গণহত্যা (খাগড়াছড়ি):
পানছড়ি হত্যাকান্ড: ১৯৮৬ সালের ১ মে সংঘটিত হয় পানছড়ি হত্যাকান্ড। অ্যামনেস্টি ইন্টারন্যাশনাল-এর মতে, ১ মে এবং তার পরের দিনগুলোতে আইন-শৃংখলা রক্ষাকারী বাহিনীর সদস্যরা সেটলার বাঙালিদের নিয়ে খাগড়াছড়ির পানছড়িতে পাহাড়ি গ্রামগুলোতে প্রবেশ করে এবং স্বতোঃপ্রবৃত্তভাবে পাহাড়িদের হত্যা করে। এই গ্রামগুলো হল- গোলকপুতিমা ছড়া, কালানাল, ছোট করমা পাড়া, শান্তিপুর, মির্জাবিল, হেদারা ছড়া (খেদারাছড়া মুখ পাড়া নামেও পরিচিত), পুজগাং, লোগাং, হাতিমুক্তি পাড়া, সাডেশ্বর পাড়া, নাবিদাপাড়া এবং দেওয়ান বাজার।
এ হত্যাকান্ডে ছয়টি গ্রামের ১৬ জনের অধিক লোককে নির্মমভাবে হত্যা করা হয়। হাজার হাজার লোক সীমান্ত পাড়ি দিয়ে ভারতের ত্রিপুরা রাজ্যে আশ্রয় নিতে বাধ্য হয়।
মহাজন পাড়ায় হামলা: একই দিন খাগড়াছড়ি সদরের মহাজন পাড়ায়ও আক্রমণ চালানো হয়। এতে একজন নিহত ও ১৫ জনের অধিক আহত হয়। অগ্নিসংযোগ করা হয় আনুমানিক ৩০টির অধিক পাহাড়ি বাড়িতে।
মাটিরাঙ্গা-দীঘিনালা হত্যাকান্ড: মাটিরাংগা উপজেলার তেইন্দং তবলছড়ি এলাকা এবং দীঘিনালার বোয়ালখালী, নারিকেল বাগান, পাবলাখালীসহ আরো অনেক পাহাড়ি অধ্যুষিত গ্রামেও সেনাবহিনীর প্রত্যক্ষ উপস্থিতিতে সেটলার বাঙালীরা মিলে পাহাড়িদের উপর হামলা ও লোমহর্ষক গণহত্যা চালিয়েছিল! পুড়িয়ে দেয়া হয়েছিল পাহাড়িদের শত শত ঘরবাড়ি।
১ মে হতে কয়েকদিন ধরে চলা এসব হামলা ও হত্যাকান্ডে কয়েশত শত পাহাড়ি নিহত হয়েছে বলে ধারণা করা হয়, যার সঠিক হিসাব এখনো জানা যায়নি। সেনা-সেটলারদের পরিকল্পিত এ হামলায় হাজার হাজার পাহাড়ি নিজ জায়গা-জমি, বসতভিটা ছেড়ে ভারতে পালিয়ে যেতে বাধ্য হয়।
পার্বত্য চট্টগ্রামের এই ঘটনাটি ৮৬’র গণহত্যা নামে পরিচিত। এভাবে পার্বত্য চট্টগ্রামে সংঘটিত করা হয় ডজনের অধিক হত্যাকান্ড। কিন্তু এসব হত্যাকান্ডের বিচার আজো মিলেনি।
——————–
সিএইচটিনিউজ.কম’র প্রচারিত কোন সংবাদ, তথ্য, ছবি ব্যবহারের প্রয়োজন দেখা দিলে যথাযথ সূত্র উল্লেখপূর্বক ব্যবহার করুন।