পার্বত্য চট্টগ্রামে পাকিস্তানি আগ্রাসন বিষয়ে কুদুকছড়িতে আলোচনা সভা

রাঙামাটি প্রতিনিধি, সিএইচটি নিউজ
শনিবার, ২৩ আগস্ট ২০২৫
পার্বত্য চট্টগ্রামে পাকিস্তানি আগ্রাসন (২০ আগস্ট ১৯৪৭) বিষয়ে রাঙামাটির কুদুকছড়িতে আলোচনা সভা অনুষ্ঠিত হয়েছে।
আজ শনিবার (২৩ আগস্ট ২০২৫) বৃহত্তর পার্বত্য চট্টগ্রাম পাহাড়ি ছাত্র পরিষদ (পিসিপি), হিল উইমেন্স ফেডারেশন ও গণতান্ত্রিক যুব ফোরামের রাঙামাটি জেলা শাখাসমূহ যৌথভাবে এই সভার আয়োজন করে।
সভা শুরুতে ’৪৭ সালে ব্রিটিশ ঔপনিবেশিক শাসন অবসানের সময় পার্বত্য চট্টগ্রামে জাতীয় চেতনা সৃষ্টিকারী নেতা স্নেহ কুমার চাকমার প্রতিকৃতিতে ফুল দিয়ে শ্রদ্ধা জানানো হয়।


সভায় প্রজেক্টরের মাধ্যমে পার্বত্য চট্টগ্রামে পাকিস্তানি আগ্রাসনের ওপর ডকুমেন্টারি প্রদর্শন করা হয়।
“অপারেশ উত্তরণের নামে চলমান সেনাশাসন ১৯৪৭ এর পাকিস্তানী আগ্রাসনেরই ধারাবাহিক রূপ” শীর্ষক আলোচনা সভায় পিসিপি’র রাঙামাটি জেলা সভাপতি তনুময় চাকমার সভাপতিত্বে ও অর্থ সম্পাদক ঝিমিত চাকমার সঞ্চালনায় বক্তব্য দেন, গণতান্ত্রিক যুব ফোরামের কেন্দ্রীয় সহ-সভাপতি ধর্মশিং চাকমা ও হিল উইমেন্স ফেডারেশনের জেলা দপ্তর সম্পাদক রিতা চাকমা।
বক্তারা বলেন, ভারত উপমহাদেশে ব্রিটিশ শাসন অবসানকালে পার্বত্য চট্টগ্রামের জনগণের পক্ষ থেকে তৎকালীন নেতা স্নেহ কুমার চাকমা পার্বত্য চট্টগ্রামকে ভারতে অন্তর্ভুক্তির দাবিতে সোচ্চার ভূমিকা পালন করেছিলেন। তাঁর নেতৃত্বে ১৯৪৭ সালের ১৫ আগস্ট রাঙামাটি ডিসি অফিস ও কতোয়ালী থানায় ভারতীয় পতাকা উত্তোলন করা হয়েছিল। কিন্তু পরিতাপের বিষয়, ‘ভারত স্বাধীনতা আইন ১৯৪৭’ লঙ্ঘন করে ধুরন্ধর বৃটিশ ঔপনিবেশিক শাসকরা পার্বত্য চট্টগ্রামকে ভারতে অন্তর্ভুক্ত না করে মুসলিম অধ্যুষিত পাকিস্তানে অন্তর্ভুক্ত করে দেয়। তারই ফলশ্রুতিতে ’৪৭ সালের ২০ আগস্ট পাকিস্তানের বেলুচ রেজিমেন্ট পার্বত্য চট্টগ্রামে সশস্ত্র আগ্রাসন চালিয়ে রাঙামাটি থেকে ভারতীয় পতাকা ও বান্দরবান থেকে বার্মার পতাকা নামিয়ে পাকিস্তানের পতাকা উত্তোলন করে। সেই পর থেকে পার্বত্য চট্টগ্রামে পাহাড়ি জনগণের শোষণ-নিপীড়নের মাত্রা বৃদ্ধি পায়।

১৯৭১ সালে সশস্ত্র মুক্তিযুদ্ধের মাধ্যমে পাকিস্তানের কবল থেকে বাংলাদেশ স্বাধীন হলেও পাহাড়ি জনগণের দুঃখ-দুর্দশা শেষ হয়নি। স্বাধীন বাংলাদেশের শাসকরা পাকিস্তানি কায়দায় কাউখালী কলমপতি গণহত্যাসহ ডজনের অধিক গণহত্যা চালিয়েছে।
বর্তমানেও অপারেশন উত্তরণের নামে সেনাশাসন জারি রেখে পাহাড়িদের উপর অন্যায় শাসন-শোষণ জারি রাখা হয়েছে। সেনা অভিযানের নামে প্রতিনিয়ত ধরপাকড়, ঘরবাড়ি তল্লাশি, হয়রানি অব্যাহত রয়েছে।
সিএইচটি নিউজে প্রকাশিত প্রচারিত কোন সংবাদ, তথ্য, ছবি ,ভিডিও, কনটেন্ট ব্যবহার করতে হলে কপিরাইট আইন অনুসরণ করে ব্যবহার করুন।